
বগুড়ার শেরপুরে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিলে সশস্ত্র হামলা ও মারপিটের অভিযোগে আ.লীগের সাবেক দুই এমপি, তাঁদের পুত্র ও ব্যক্তিগত সহকারীর (পিএস)সহ আ.লীগ ও সহযোগী সংগঠনের আরো ১৪১ জনের নাম উল্লেখ করে করা মামলা হয়েছে। রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম মিন্টু বাদি হয়ে এই মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় এছাড়া অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরো অনেককে।
মামলায় আসামিদের মধ্যে রয়েছেন, সাবেক এমপি হাবিবর রহমান, তাঁর ছেলে আসিফ ইকবাল সনি, ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) কোরবান আলী মিলন, সাবেক এমপি ও বগুড়া আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান মজনু, তাঁর ছেলে শেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি সারোওয়ার রহমান মিন্টু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাড. গোলাম ফারুক, সাধারণ সম্পাদক সুলতান মাহমুদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব আম্বীয়া, পৌর শাখা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম হোসেন, পৌর সাবেক প্যানেল মেয়র নাজমুল আলম খোকন, সাবেক কাউন্সিলর শুভ ইমরান, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি তারিকুল ইসলাম তারেক, সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজার রহমান ভুট্টো, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম সানিসহ ১০টি ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বিগত ২০২৩ সালের ১৫ নভেম্বর বেলা সোয়া এগারোটার দিকে শেরপুর শহরের স্থানীয় বাসস্ট্যান্ডের খেজুরতলাস্থ বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের পশ্চিমপাশে ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের ওপর স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিক্ষোভ মিছিল করছিলেন নেতাকর্মীরা। এসময় মামলার এজাহারে উল্লিখিত আসামিরা আগ্নেয়াস্ত্রসহ লোহার রড, লাঠি নিয়ে বিএনপির ওই মিছিলে অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। এমনকি বিএনপির ওই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া নেতাকর্মীদের ওপর গুলি ছুড়ে এবং হাতবোমা নিক্ষেপ করেন।
এসময় সোহাগ ও শান্ত নামের দুইজন গুরুতর আহত হন। এছাড়া লোহার রড ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে বিএনপি নেতা মামুনুর রসিদ আপেল, যুবদল নেতা আশরাফুদ্দৌলা মামুন, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা শাহ কাওছার কলিন্সসহ বেশকয়েকজন নেতাকর্মীকে গুরুতর আহত করা হয়। পরে স্থানীয়রা তাঁদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স সহ বিভিন্ন বেসরকারি চিকিৎসা কেন্দ্রে ভর্তি করে দেন। এরপর সশস্ত্র আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে। এতে এক লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে মামলার এজাহারে দাবি করা হয়।
মামলার বাদি উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম মিন্টু বলেন, আওয়ামী লীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা আমরা যেন মামলা করতে না পারি সেজন্য থানায় পাহারা বসিয়েছিল। ওই ঘটনায় মামলা করলে প্রাণনাশ করা হবে বলেও হুমকি-ধামকি দিয়েছিল আ.লীগের নেতাকর্মীরা। তাই তাদের বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নিতে পারিনি। কিন্তু ০৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটলে ন্যায় বিচার পাওয়ার পথ সুগম হয়। ফলে ন্যায় বিচার পেতে এখন মামলাটি দায়ের করেছেন বলে দাবি করেন ওই বিএনপি নেতা।
এ প্রসঙ্গে বক্তব্য জানতে মামলায় অভিযুক্ত আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি হাবিবর রহমান ও মজিবর রহমান মজনুর মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দেওয়া হয়। কিন্তু মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তাদের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম মামলা নেওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, মামলাটির তদন্ত চলছে। পাশাপাশি ঘটনার সঙ্গে প্রকৃত জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারপূর্বক আইনের আওতায় আনার জন্য পুলিশ তৎপরতা চালাচ্ছেন।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর