
সাতক্ষীরায় অতি বৃষ্টিজনিত জলাবদ্ধতা ও বন্যা উপদ্রুত এলাকায় পর্যাপ্ত ত্রাণ সরবরাহ এবং জরুরীভাবে পানি নিষ্কাশনের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
যুব পানি কমিটি ও ভুক্তভোগী এলাকাবাসীর আয়োজনে সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কের তালা উপজেলার সুভাষিনী বাজারে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে শত শত লোক অংশগ্রহণ করে। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
শিক্ষক মো. মতিয়ার রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন তেঁতুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. আবুল কালাম আজাদ, সাংবাদিক কল্যাণ ব্যানার্জী, বিএনপিনেতা অধ্যাপক মোশারফ হোসেন, জামায়াত নেতা মো. আব্দুল হালিম, ভুক্তভোগী এলাকাবাসী সরদার আবুল হোসেন, জাহাঙ্গীর আলম, উপজেলা পানি কমিটির সাধারণ সম্পাদক মীর জিল্লুর রহমান, পানি কমিটির নেতা শেখ সেলিম আকতার স্বপন, যুব পানি কমিটি নেতা মো. তোহা মোড়ল, মনিরা খাতুন, হৃদয় হোসেন মো. হাবিবুর রহমান প্রমুখ।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়- সাম্প্রতিক জলাবদ্ধতা জনিত বন্যায় সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার সব কয়টি অর্থাৎ ১২ টি ইউনিয়নের ১৪৫ টি গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে, ভেসে গেছে মৎস্য খামার, আমন ধান ও সবজি ক্ষেত। রাস্তাঘাট ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্লাবিত হয়েছে। দেখা দিয়েছে পানি বাহিত রোগব্যাধির প্রাদুর্ভাব। দরিদ্র অসহায় অনেক পরিবার ইতিমধ্যে বাড়িঘর ছেড়ে বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয় নিয়েছে। এলাকায় মানুষ ও গবাদি পশুর চরম খাদ্য সংকট ও কর্ম সংস্থানের অভাব। সীমাহীন অবর্ণনীয় দুঃখ কষ্টের মধ্য দিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে অসহায় দরিদ্র শ্রেণীর মানুষ, শিশু, প্রতিবন্ধী ও বৃদ্ধ জনগোষ্ঠী। এই মুহূর্তে প্রয়োজন জরুরিভাবে খাদ্য সরবরাহ এবং পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা। বর্তমানে এলাকার বিদ্যমান যে পরিস্থিতি তাতে পানি নিষ্কাশনের কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে জলাবদ্ধতার স্থায়িত্ব দীর্ঘতর হবে এবং মানুষের পক্ষে বসবাস করা,শীত মৌসুমে বোরো ও সবজি উৎপাদন করা কঠিন হয়ে পড়বে। এক্ষণে ভুক্তভোগি জনগণের দাবি অসহায় মানুষদের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা প্রদান এবং জরুরিভাবে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা। এছাড়া তারা পানি নিষ্কাশনের জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু লিখিত প্রস্তাব করে।
প্রস্তাবনা সমূহের মধ্যে কপোতাক্ষের গোপালপুর স্লুইসগেটের আগে-পিছে এবং স্লুইসগেটের অভ্যন্তরের পলি অপসারণ, তালা মেলাখোলা বাজার থেকে জাতপুরের দইসারা বিল পর্যন্ত স্বনির্ভর খাল সংস্কার, শাহাপুর ও শিবপুর-মাঝিয়াড়া শীষেখাল সংস্কার ও নদীতীরে পাইপ স্থাপন, তেঁতুলিয়া ইউনিয়নের শুভাষিণী বাজারের স্বনির্ভর খাল সংস্কার করে গোপালপুর খালের সাথে সংযোগ প্রদান, জাতপুর দইসারা বিল থেকে শালতা নদীর চাড়িভাঙা স্লুইসগেট পর্যন্ত খাল সংস্কার, ডুমুরিয়া উপজেলার মাগুরাঘোনা ইউনিয়ন পরিষদের পাশে শীতলাখালী খাল সংস্কার, খলিলনগর ইউনিয়নের বাটুলতলা স্লুইস গেটের আগে-পিছে পলি অপসারণ ও গেটের যান্ত্রিক ত্রুটি দূর করা, খেশরা ইউনিয়নের শালিখা ১৫ ভেন্ট স্লুইসগেট এবং এর নিম্নে শালিখা ব্রিজ পর্যন্ত কপোতাক্ষ নদীতে প্রায় ১০০০ ফুট দৈর্ঘ্যের পলি অপসারণ করা এবং খরিয়াহাটী ১ ভেন্ট স্লুইসগেট থেকে পলি অপসারণ করা। বিনেরপোতার ভেঙে যাওয়া বাঁধ দ্রুত বেঁধে দেওয়া এবং বেতনা নদরি অপসারিত ক্রস বাঁধগুলো নদীর তলদেশের সমান করে লেভেলিং করা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর