• ঢাকা
  • ঢাকা, মঙ্গলবার, ০৪ মার্চ, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ৮ ঘন্টা পূর্বে
মোঃ আসাদুজ্জামান
বরগুনা প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০১ অক্টোবর, ২০২৪, ০৮:২৪ রাত
bd24live style=

১৬ বছরের ভাড়া বাকি, জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে তালা 

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

বরগুনায় জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের দীর্ঘ ১৬ বছরের ভাড়া বকেয়া থাকায় কার্যালয়টিতে তালা লাগিয়ে দিয়েছে বরগুনা সদর উপজেলা প্রশাসন। এছাড়া আগামী ১৫ অক্টোবরের মধ্যে ভাড়া পরিশোধ না করলে ভাড়ার চুক্তি বাতিল করা হবে উল্লেখ করে টানিয়ে দেয়া হয়েছে নোটিশ। ফলে যথাসময়ের মধ্যে  বকেয়া ভাড়া পরিশোধ না করলে কার্যালয় বিহীন হয়ে পড়বে বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগ।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বরগুনা পৌরশহরের ফার্মেসি পট্টি নামক এলাকায় ভাড়ার চুক্তিতে ৫৫২ স্কয়ার ফিট আয়তনের একটি জমিতে ঘর উত্তোলন করে বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগ। পরে ওই ঘরটিকেই জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় হিসেবে পরিচালিত করা হয়। এছাড়াও ভাড়ার চুক্তি অনুযায়ী জেলা পরিষদের সকল জমির ভাড়া প্রতি দুই বছর পরপর ২০ শতাংশ হারে ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়। তবে ২০০৯ সালের পর থেকে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় হিসেবে পরিচালিত ওই ঘরের কোনো ভাড়া পরিশোধ করা হয়নি। এতে হিসেব অনুযায়ী জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের দীর্ঘ ১৬ বছরে ভাড়া বকেয়া থাকায় ভাড়ার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে আড়াই লাখ টাকারও বেশি। আর এ বকেয়া ভাড়া আদায় করতেই নোটিশ টানানোর পাশাপাশি তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়টি।

সরেজমিনে বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় ঘুরে দেখা যায়, মাত্র দুই মাস আগেও যে ঘরটিতে ছিল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পদচারণা সে ঘরটিতে ঝুলছে তালা। এছাড়াও কার্যালয়ের দুটি প্রবেশ মুখে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের স্বাক্ষরিত কাগজে লেখা নোটিশসহ টিনের বেড়ার সঙ্গে ভাড়া আদায়ের জন্য টানিয়ে দেয়া হয়েছে লাল রঙের একটি বড় আকারের ব্যানার। 

ব্যানারে উল্লেখ করা হয়, এতদ্দ্বারা উপজেলা পরিষদ, বরগুনা সদর, বরগুনা এর আওতাধীন সকল দোকানঘর ভাড়াটিয়াদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, বরগুনা শের-ই বাংলা রোডস্থ ফার্মেসি পট্টিতে অবস্থিত উপজেলা পরিষদের নিজস্ব ভূমিতে নির্মিত ঘরগুলো শুধু বাণিজ্যিক কার্যে ব্যবহারের অনুরোধ করা হলো। অন্যথায় সংশ্লিষ্ট ভাড়াটিয়ার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া আরও উল্লেখ করা হয়, বকেয়া ঘরভাড়া আগামী ১৫ অক্টোবরের পরিশোধ করার জন্য অনুরোধ করা হলো। অন্যথায় আগামী ১ নভেম্বর হতে ঘরভাড়া বাতিল করা হবে।

জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের দীর্ঘদিন পর্যন্ত ভাড়া বকেয়া থাকার খবরে শহরজুড়ে আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি হলেও এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি স্থানীয়রা। এছাড়া জেলা আওয়ামী লীগের কারো কোনো বক্তব্য না পেলেও ভাড়া বকেয়ার বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের মন্তব্য জানিয়েছেন জেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন নেতাকর্মীর।

বরগুনা সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক গোলাম রাসেল খোকন  বলেন, বাসা থেকে বের হয়ে আওয়ামী লীগের অফিসের সামনে থেকে যখন যাচ্ছিলামাম তখন দেখি ওখানে লাল একটি ব্যানার টানানো। পরে দেখি স্টলের জন্য ভাড়া নিয়ে তারা ভাড়া দেয়া হয়নি। আসলে মুখে গণতন্ত্রের বুলি আর দীর্ঘ বছর ধরে উপজেলা পরিষদের জমির ভাড়া না দেয়ায় তাদের কাছে গণতন্ত্রের কি প্রকাশ পায় তা আমরা দেখেছি। বরগুনার আওয়ামী লীগ সম্পর্কে এবার আমাদের ধারণা আরও বেশি হয়েছে যে, তারা তাদের প্রাণ আওয়ামী লীগ অফিসের ভাড়া দেয়নি।

জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক রঞ্জুআরা শিপু  বলেন, বরগুনায় আওয়ামী লীগের যে অফিস ছিল তা উপজেলা পরিষদের জমি। ওই জমিতে যে ঘরগুলো ছিল তা বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ভাড়া দেয়া হত। দীর্ঘদিন ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থেকে অবৈধভাবে ওই অফিস দখল করে ভাড়া না দিয়ে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেছে। আওয়ামী লীগ সারা বাংলাদেশে যে দুর্নীতি করেছে তার আওতাভুক্ত। 

জেলা যুবদলের দপ্তর সম্পাদক হুমায়ুন কবির  বলেন, এটি একটি দখলদারিত্বের প্রতীক। কারণ আওয়ামী লীগ শুধু এখানে না সারা বাংলাদেশেই তারা সরকারি জমি নিজেদের মনে করে ভোগদখল করেন। আমার মনে হয় ওই ভবনের ভাড়া তারা দেয়নি। কারণে ওই স্থানে যদি কোনো ভবন তৈরি হয় তা যেন নাগরিক সুবিধার্থে ব্যবহার করা হয়। 

বরগুনা সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক তালিমুল ইসলাম পালাশ  বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় এটি জেলা বা উপজেলা প্রশাসনের জমি হিসেবে আমরা জানি। ওই কার্যালয়ের ভাড়া প্রায় যুগের মত বকেয়া রেখেছে যা উপজেলা প্রশাসন পায়নি। যারা লুটপাট এবং দখলবাজির রাজনীতি করে তারা রাষ্ট্রের সকল সম্পত্তি তাদের পৈতৃক সম্পত্তি মনে করেন। সাবেক সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু উপজেলা পরিষদের ভিতরে পুকুর ভরাট করে সেখানে বাংলো বাড়ি স্থাপন করেছেন। যারা দখল রাজনীতিতে বিশ্বাসী সেই আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রের সম্পদ দখল করত আর ভাড়া দিবেনা। পুরো রাষ্ট্রের ও সাধারণ মানুষের সম্পত্তিকে নিজেদের মনে করে বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত করেছে। 

এ বিষয়ে বরগুনা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শামীম মিঞা  বলেন, বরগুনা বাজারে আমাদের ১৬ টি ভিটি আছে এগুলো দীর্ঘদিন ধরেই বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের জন্য ভাড়া দেয়া থাকে। যেহেতু উপজেলা প্রশাসনের আয়ের উৎস এখন কমে যাচ্ছে কারণে নিয়ম অনুযায়ী আমাদের ভাড়াগুলো পুনঃ নির্ধারণ করা হয়। নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিবছর জুলাইয়ের ১তারিখ নির্ধারিত ভাড়ার ২০% বৃদ্ধি করা হয়। তবে গত বছর ২০২৩ সালে আমরা ভাড়া বৃদ্ধি করিনি। এবছরও আমরা উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতিতে ভাড়া বৃদ্ধি করতে পারিনি। কিন্তু যে দোকানগুলোর ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়নি এবং যাদের বকেয়া আছে তাদেরকে একটি নোটিশ দিয়েছি। এ সময় একটি বন্ধ প্রতিষ্ঠান পাওয়া গেছে, পরে আমরা জানতে পারি প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বরগুনা জেলা শাখার নামে নেয়া ছিল। পরে ওখানে সংশ্লিষ্ট কাউকে না পাওয়ায় সরকারি বিধি অনুযায়ী নোটিশ টানিয়ে দেয়া হয়েছে। তারা যদি বকেয়া পরিশোধ করে এবং তাদের ভাড়া কার্যক্রম চালিয়ে নিতে চায় তাহলে পরবর্তীতে উপজেলা পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নিবে।

বকেয়া ভাড়ার বিষয়ে তিনি আরও বলেন, ২০১২ সালের ২৭ আগস্ট ওই সময়ের উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কর্নেল মো. আব্দুল খালেকের স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে দেখেছি ঘরগুলো ভাড়া এক হাজারা টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। আওয়ামী লীগ অফিসের ভাড়াও প্রতি মাসে এক হাজার টাকা নির্ধারণ করা ছিল এবং সে ভাড়া পূর্বেও দেয়া হয়নি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া এখন পর্যন্ত আমরা তাদের ভাড়া দেয়ার কোনো তথ্য পাইনি। বর্তমান সময়ে এখন পর্যন্ত আমরা পূর্ণাঙ্গ হিসাব বের করতে না পারলেও প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী প্রায় ২ লাখ ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত প্রায় ১৬ বছর ধরে আমাদের কাছে বকেয়া রয়েছে। এ বকেয়া থাকার কারণেই আরও বেশ কয়েকটি দোকানসহ ওখানে  আমরা নোটিশ করছি। বকেয়া ভাড়া পেলে উপজেলা পরিষদের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।

শাকিল/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com