এক চোখে দেখতে পাচ্ছে না, আরেক চোখও নিভু নিভু করছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গিয়ে রাকিবুল ইসলামের (২৫) শরীরের বিভিন্ন স্থানে ৬৫ টি ছররা গুলি লেগেছিল। চিকিৎসার পরও তাঁর ডান চোখ ভালো হয়নি। বাঁ চোখেও ঝাপসা দেখছেন। বিদেশে গিয়ে চোখের চিকিৎসা করানোর পরামর্শ চিকিৎসকদের। পরিবারের আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে সেটি সম্ভব হচ্ছে না।
রাকিবুল ইসলাম জয়পুরহাট পৌর শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রফেসরপাড়া মহল্লার বাসিন্দা। বাবা মোকলেছুর রহমান জজ কোর্ট এলাকার একটি খাবার হোটেলের কর্মচারী।
রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ছয় মাস আগে বিয়ে করেছি। নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার মেট্রো টেক্সটাইল লিমিটেডে অপারেটর পদে চাকরি করতাম। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় টেক্সটাইল বন্ধ হলে আমি বাড়িতে চলে আসি । বন্ধুদের সঙ্গে গত ৪ আগস্ট জয়পুরহাট শহরের পাঁচুর মোড়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গিয়েছিলাম। দুপুর ১২টার পর পুলিশের সঙ্গে আমাদের সংঘর্ষ হয়। এ সময় আমার শরীরে ছররা গুলি লাগে। আমি গুলিবিদ্ধ হয়ে সড়কের ওপর পড়ে যাই তখন আমার জ্ঞান ছিল না। লোকজন আমাকে জয়পুরহাট ২৫০ শয্যার হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালে আনার পর আমার জ্ঞান ফিরে আসে। তখন ডান চোখে অন্ধকার দেখছিলাম। চিকিৎসকের পরামর্শে ওই দিন রাতেই অ্যাম্বুলেন্সে করে আমাকে ঢাকার জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসা হয়। সেখানে ২০ দিন চিকিৎসাধীন ছিলাম।’
রাকিবুল ইসলাম বলেন, জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে চিকিৎসার পর বাঁ চোখে একটু দেখতে পেলেও ডান চোখে কিছুই দেখতে পাচ্ছেন না। বিদেশে উন্নত চিকিৎসা করা গেলে হয়ত আমার চোখ দুটো ভালো হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তবে তাঁর হোটেল কর্মচারী বাবার পক্ষে সেই খরচ জোগানো সম্ভব হচ্ছে না। ধারদেনা করেই বর্তমানে চিকিৎসা চলছে তার।
রাকিবুল ইসলামের বাবা মোকলেছুর রহমান বলেন, চিকিৎসকরা ছেলেকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করাতে বলেছেন। ছেলের আয়ে সংসার চলত । এখন ছেলের চাকরি নেই। তাঁর নিজের কাজও বন্ধ। এখন সংসার চলানোই যেখানে দায় হয়ে পড়েছে। সেখানে ছেলের চিকিৎসা করানোর টাকা কোথায় পাবেন, তা নিয়ে তিনি চিন্তিত।
প্রতিবেশী ও জয়পুরহাট জজ কোর্টের আইনজীবী এ টি এম মিজানুর রহমান বলেন, পরিবারটির আর্থিক অবস্থা ভালো না। অসহায় রাকিবুলের চিকিৎসার জন্য সরকারসহ সমাজের বিত্তশালীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর