• ঢাকা
  • ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • শেষ আপডেট ১৮ মিনিট পূর্বে
সোহেল রানা
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৩ অক্টোবর, ২০২৪, ০৫:১৮ বিকাল
bd24live style=

বিতর্কিত শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত প্রধান করায় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

আওয়ামীলীগ আমলে ক্ষমতার দাপটে অবৈধভাবে নিয়োগ করা সহকারী প্রধান শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক করায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছে সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিমগাছী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্র ও অভিভাবকেরা। কে এম ইউনুছ রবিন নামে ওই শিক্ষকের পদায়নের বাতিলের দাবিতে প্রতিদিনই বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভের মুখে ৫ দিন ধরে বিদ্যালয়ে আসতে পারেননি সদ্য পদায়ন হওয়া ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক।

ইউনুছ রবিন সোনাখাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আবু হেনা মোস্তফা কামাল রিপেনের চাচাতো ভাই। আওয়ামীলীগ আমলে প্রভাব খাটিয়ে বিদ্যালয়টির সভাপতি হয়েছিলেন রিপন চেয়ারম্যান। ক্ষমতার দাপটে আদালতের আদেশ উপেক্ষা করে চাচাতো ভাইকে সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে গত ২৫ সেপ্টেম্বর প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামান পদত্যাগ করেন। তাঁর পদত্যাগের ১১ ঘণ্টা যেতে না যেতেই শিক্ষক-অভিভাবকদের মতামত না নিয়ে ২৬ সেপ্টেম্বর সহকারী প্রধান শিক্ষক কে এম ইউনুছ রবিনকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিদ্যালয়ের সভাপতি নাহিদ হাসান খান। এতে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে ছাত্র, শিক্ষক ও অভিভাবক। রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) স্কুল খোলার সাথে সাথে ছাত্র-ছাত্ররা প্রধান ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে। ছাত্রদের বিক্ষোভের মুখে গত চারদিনে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে পারেন নি ইউনুছ রবিন।

নিমগাছী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর ছাত্র সিয়াম ও মো. নূর শ্রেণি, ৮ম শ্রেণীর সাথী ও প্রান্ত ৮ম শ্রেণি এবং ৭ম শ্রেণীর মাহিম ও আব্দুল্লাহসহ একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, আমরা ওই নিয়োগ বাতিলের দাবি জানাই। কারণ ইউনুছ রবিন স্যার সদ্য পদত্যাগী প্রধান শিক্ষকের দুর্নীতির সহযোগী। তাকে আমরা প্রধান শিক্ষক হিসেবে চাই না।

কথা হয়, রমজান আলী তালুকদার, নাসির উদ্দিন, আফাজ উদ্দিন ও আবুল বাশারসহ বেশ কয়েকজন অভিভাবকের সাথে। তারা বলেন, আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ক্ষমতার দাপটে টাকার বিনিময়ে ইউনুছ রবিনকে অবৈধভাবে সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। তার নিয়োগ নিয়ে এলাকায় সমালোচনা থাকলেও ইউএনও মদোহয় সেই শিক্ষককেই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছেন। এটা আমরা কেউ মেনে নিতে পারছি না।

কথা হয় সহকারী শিক্ষক মো. জহুরুল হক, মো. শামীম হোসেন, মো. আব্দুল হাদী তালুকদার, শহিদুল ইসলাম ও মো. মাসুদ রানাসহ বেশ কয়েক শিক্ষক কর্মচারির সাথে। তারা বলেন, আমরা ২৬ সেপ্টেম্বর শিক্ষক-কর্মচারী সভা ও রেজুলেশন করে ইউনুছ রবিনের বিরুদ্ধে অনাস্থা নিয়ে এসেছি। ২৩ জন শিক্ষক-কর্মচারির মধ্যে ২১ জনই এতে স্বাক্ষর করেছে। আমাদের দাবি তাকে বাদ দিয়ে সিনিয়র যে কোনো শিক্ষককে কাউকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক করা হোক। তাকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক করলেও এখন পর্যন্ত তিনি বিদ্যালয়ে পা রাখতে পারেননি। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে বলে জানান তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০২২ সালে চেয়ারম্যান আবু হেনা মোস্তফা কামাল রিপন নির্বাচন ছাড়াই অবৈধভাবে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হন। ওই কমিটি নিয়ে রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডে নাজমুল ইসলাম স্বপন নামে এক অভিভাবক অভিযোগ করেন। পরবর্তীতে প্রভাব খাটিয়ে বাদীকে দিয়ে জোরপূর্বক অভিযোগ প্রত্যাহার করিয়ে নেয় রিপন। ২০২২ সালের ১৭ এপ্রিল আব্দুল মান্নান নামে এক অভিভাবক বাদী হয়ে কমিটিকে অবৈধ দাবি করে আদালতে মামলা করেন। মামলা চলা অবস্থায় অবৈধ কমিটি সহকারী প্রধান শিক্ষকসহ কয়েকটি পদে নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে। বাদী আব্দুল মান্নান অবৈধ কমিটির অধীনে নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিতের আবেদন করলে আদালত ৫মে নিয়োগের উপর স্থিতাদেশ দেন। আদালতের আদেশ উপেক্ষা করেই ১ জুলাই নিয়োগ পরীক্ষা, ২ জুলাই নিয়োগ ও ৩ জুলাই ইউনুছ রবিনকে তড়িঘড়ি করে চাকরিতে যোগদান করানো হয়।

অভিযোগ রয়েছে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ পরীক্ষায় সিনিয়র শিক্ষক আব্দুল হাদীর সাক্ষাতকারও নেওয়া হয়নি। ওই নিয়োগে অর্ধকোটি টাকার বাণিজ্য করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। পরবর্তীতে বাদী আব্দুল মান্নানের আবেদনের প্রেক্ষিতে ৫ জুলাই ওই নিয়োগে আদালতের পূর্বের স্থিতাবস্থা বহাল রাখেন। এভাবেই আদালতকে উপেক্ষা করেই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।

এসব বিষয়ে কে এম ইউনুছ রবিন বলেন, সরকারি বিধি অনুযায়ী ইউএনও সাহেব ডেকে নিয়ে আমাকে দায়িত্ব অর্পণ করেছে। দায়িত্ব পেয়ে স্কুলে গেলে আমাকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। আমি ইউএনও মহোদয়ের পরামর্শে আইনগত দিকে চলাফেরা করছি। এখনো আমাকে স্কুলে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ওই বিদ্যালয়ের সভাপতি মো. নাহিদ হাসান খান বলেন, নিয়ম অনুযায়ী প্রধান শিক্ষক না থাকলে সহকারী প্রধান শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পাল করবে। আমি না দিলেও নীতিমালা অনুযায়ী অটোমেটিক উনি দায়িত্ব পাবেন। উনার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি আমরা, তদন্ত করে দেখবো। এখন পরপর দুজনকে বরখাস্ত করা যাচ্ছে না।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) রোজিনা আক্তার বলেন, আইনগতভাবে প্রধান শিক্ষক না থাকলে সহকারী প্রধান শিক্ষককে স্বাভাবিকভাবে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। সেটা কিন্তু নিয়োগ নয়। বিদ্যালয়ের রুটিন ওয়ার্কগুলো যেন চালানো যায়। অনাস্থা বিষয়টা জনপ্রতিনিধির জন্য প্রযোজ্য। চাকরিজীবীকে বাদ দিতে আইনগত কিছু প্রসেস আছে। প্রসেস মেইনটেইন করেই তাকে বাদ দিতে হবে। তিনি বলেন, বিষয়টি আমি দেখবো।

মুনতাসির/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com