মাত্র ছয় মাসের মধ্যে ৩০ পারা কোরআন খতম করে সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন মো. হানজালা হোসেন আলিফ নামের এক মাত্র বছর বয়সী শিশু। সে খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলাধীন তিনটহরী বাজার এলাকার মো. ইসমাইল হোসেন'র দ্বিতীয় ছেলের জ্যেষ্ঠ সন্তান। বর্তমানে সে পড়াশোনা করছেন মানিকছড়ি উপজেলার সদরের মহামুনিস্থ দারুন নাজাত হিফজুল কুরআন বালক-বালিকা অ্যাকাডেমিতে।
মাদরাসা ও তার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গেল বছরের মে মাসে দারুন নাজাত হিফজুল কুরআন বালক-বালিকা অ্যাকাডেমিতে হেফজ বিভাগে ভর্তি হন সে। ভর্তির ছয় মাসের মধ্যে অর্থাৎ নভেম্বর মাসে হেফজ বিভাগে মনোযোগ সহকারে পড়াশোনা করে ও শিক্ষকদের আদর যত্নে পবিত্র আল কোরআনের ৩০ পারা মুখস্থ করেন।
শুক্রবার (৫ অক্টোবর) রাতে অত্র প্রতিষ্ঠানে পার্বত্য চট্টগ্রামে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি শীর্ষক বিশেষ দোয়া মাহফিলে তাকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
এ সময় আগত ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের সামনে কোরআনের আলোকে জ্বালাময়ী আলোচনা (বক্তব্য) পেশ করলে সকলে অবাক হয়ে যান। তার বয়ান শুনে সকল শরীর শিউরে উঠি। এসময় তাকে সকলে আদর-স্নেহ ও প্রশংসায় ভাসিয়েছেন। মাত্র ৯ বছর বয়সে ও ৬ মাসের মধ্যে কোরআন খতম করার মতো কঠিন কাজ তার আয়ত্ত করায় সকলের কাছে প্রশংসিত হয়েছেন হাফেজ মো. হানজালা হোসেন আলিফ ও তার প্রতিষ্ঠান। সেই সাথে তার পিতা-মাতা। এছাড়া এই মেধাবী শিক্ষার্থী গেল বছর খাগড়াছড়ি জেলায় অনুষ্ঠিত কেরাত প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে আলোড়ন সৃষ্টি করে পুরস্কৃত হয়েছিল।
সকলের কাছে দোয়া চেয়ে তার পিতা মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, আল্লাহ যেন আমার পুত্রকে একজন প্রখ্যাত আলেম ও দ্বীনদার হিসেবে কবুল করেন। সেজন্য সকলে দোয়া করবেন।
মাদরাসার পরিচালক মাও মো. শরিফ হোসেন বলেন, আমি পড়াশোনা শেষ করে ২০১৯ সালে দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্য অত্র প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছি। শুরুতে নানা প্রতিকূলতা থাকলেও বর্তমানে উপজেলায় বেশ সুনামের সাথে মাদরাসা পরিচালনা করছি। অত্র প্রতিষ্ঠানে নুরানি ও হেফজ বিভাগ মিলিয়ে প্রায় ২০৭জন শিক্ষার্থী রয়েছে। তাদের মধ্যে হাফেজ মো. হানজালা হোসেন আলিফ ব্যতিক্রম। তার অক্লান্ত পরিশ্রম, মেধা ও শিক্ষকদের যত্নের ফলে মাত্র ছয় মাসের মধ্যে পবিত্র ধর্মগ্রন্থ আল-কোরআনের ৩০ পারা শেষ করতে পেরেছে। সে যেন তার মেধা ও শ্রম দিয়ে আরো বহুদূর যেতে পারেন এবং দ্বিনের খেদমত করতে পারেন সেজন্য দোয়া করেন প্রতিষ্ঠানের পরিচালক।
তিনি আরো জানান, কোরআনের আয়াত মূখস্তের পাশাপাশি নির্দিষ্ট কিছু আয়াত আরবি, বাংলা, উর্দু ও ইংরেজি ভাষায় তর্জমা সহ ব্যাখ্যা বিশ্লেষণেও পারদর্শী। এছাড়া তার সুমধুর কণ্ঠস্বরের কারণে নাম করা বক্তা হবেন বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর