টানা বর্ষণ ও ভূমিধসের কারণে শেরপুর ও ময়মনসিংহে বন্যা পরিস্থিতি আরও নাজুক হয়ে পড়েছে। শেরপুরে পাঁচ উপজেলার দুই শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ৩৫ বছরেও এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির কবলে পড়েনি এলাকাবাসী। নালিতাবাড়ী ও ঝিনাইগাতী উপজেলা সদরে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও নিম্নাঞ্চলের অন্তত দুই শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। নালিতাবাড়িতে সড়ক ভেঙে ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন।
গতকাল শনিবার পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, পাহাড়ি নদী সোমেশ্বরী, কর্ণঝোড়া, মহারশী, ভোগাই ও চেল্লাখালীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হবে। এদিকে নতুন নতুন গ্রাম প্লাবিত হওয়ায় পানিবন্দি মানুষের সংখ্যা আরও বাড়ছে। তিন উপজেলায় এখনো অর্ধলাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমন আবাদ, মাছের ঘের ও সবজি আবাদ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (৪ অক্টোবর) সকাল থেকে পাহাড়ি ঢলে শেরপুর চারটি নদীতে পানি বাড়তে থাকায় এই বন্যা দেখা দিয়েছে। বন্যার কারণে অনেকের বাড়ি-ঘর পানিবন্দি হয়েছে। ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের ফলে ঝিনাইগাতী উপজেলার মহারশি ও সোমেশ্বরী নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। মহারশীর বাঁধ ভেঙে ঝিনাইগাতী সদর ইউনিয়নের ঝিনাইগাতী, রামেরকুড়া, খৈলকুড়া, বনকালি, চতল ও আহম্মদ নগর, ধানশাইল ইউনিয়নের ধানশাইল, বাগেরভিটা, কান্দুলী, বিলাসপুর ও মাদারপুর এবং কাংশা ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর চরণতলা, আয়নাপুর, কাংশাসহ প্রায় দেড় শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়।
কৃষি বিভাগ জানায়, ঢলের পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত শ্রীবরদী, ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী উপজেলার অন্তত ২০ হাজার হেক্টর আমন আবাদ এবং দেড় হাজার হেক্টর সবজির আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ৫০ হাজারের বেশি কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান জানান, জেলার তিনটি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ পর্যন্ত মারা গেছেন চারজন। দুর্গতদের উদ্ধারে শুকনো খাবার পৌঁছে দিতে আমরা কাজ করছি। নতুন নতুন যেসব এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। আমরা তার খোঁজ-খবর নিচ্ছি। পাশপাশি ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণেও কাজ করা হচ্ছে।
এদিকে, ভারী বর্ষণে নোয়াখালী ও কুড়িগ্রামে দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। পানিবন্দি লাখো মানুষ।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর