ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধ, হযরত মুহাম্মদ (সা.) কে নিয়ে কটূক্তি, ইসলামি খেলাফত কায়েমেরও দাবি তুলে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় কালেমা খচিত কালো পতাকা নিয়ে মিছিলের ঘটনা ঘটেছে।
তবে কেউ কেউ দাবি করেছেন, এই পতাকা ইসলামি জঙ্গিগোষ্ঠীর। আরেকটি পক্ষ এটিকে কোনো রাজনৈতিক দলের ইন্ধনেই এসব করা হয়ে থাকতে পারে। অন্যদিকে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যারা কালো পতাকা নিয়ে মিছিল করছে, তারা নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন হিযবুত তাহ্রীরের সদস্য।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মাইনুল হাসান বলেন, হিযবুত তাহ্রীর নিষিদ্ধ ঘোষিত একটি সংগঠন। এ কারণে তারা প্রকাশ্যে মাঠে নামতে পারে না। তাই অতর্কিতভাবে নামার চেষ্টা করছে। তাদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলছে।
সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা গেছে, রোববার (৬ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকায় জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে কালো কালিমা খচিত পতাকা নিয়ে স্কুল- কলেজের শিক্ষার্থীরা মিছিল করছে। মিছিলটি বের করে ‘সচেতন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ, সেন্ট যোসেফ হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের’ ব্যানারে।
মিছিলে শিক্ষার্থীদের হাতে কালো কালেমা লেখা পতাকা পাশাপাশি বাংলাদেশের পতাকা, ফিলিস্তিনের পতাকাও ছিল। মিছিলের ব্যানারে লেখা ছিল- হযরত মুহাম্মদ (সা.) কে নিয়ে ভারতীয় পুরোহিত কর্তৃক কটূক্তির প্রতিবাদ।
এছাড়া সেই মিছিলে শ্লোগান দিতে শোনা গেছে, ‘মুক্তির এক পথ, খিলাফত-খিলাফত’, ‘তুমি কে আমি কে, মুসলমান-মুসলমান’। এছাড়া গত সপ্তাহে ঢাকার নটরডেম কলেজ, ঢাকা কলেজ, উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের শিক্ষার্থীরা আলাদা আলাদা মিছিল বের করতে দেখা গেছে। মিছিলে তাদের হাতে একই ধরনের পতাকা ছিল।
অন্যদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিও দেখা গেছে, গত শুক্রবার কিশোরগঞ্জে ‘তৌহিদি জনতার’ ব্যানারে কিশোরগঞ্জ শহীদি মসজিদ থেকে একটি মিছিল বের হয়। মিছিলে কেউ কেউ নবীজির কটূক্তির প্রতিবাদ ছাড়াও ইসলামী খেলাফত প্রতিষ্ঠার দাবি দিচ্ছিল। তবে স্থানীয়রা জানান, ওই মিছিলে বাহিরের কিছু লোক ঢুকে গিয়েছিল, তাদের কারও কাছে কালো পতাকা, গলায় কালারফুল মাফলারও পরিহিত ছিল। এদিকে, ফ্যাক্ট চেকার কদরুদ্দিন শিশির ওই ভিডিওর তথ্য যাচাইয়ে পর ফেসবুকে জানান, ওইদিন সেই মিছিলে কথিত ইসলামিক স্টেট বা ‘আইসিসের’ সঙ্গে সামঞ্জস্য পতাকা উড়ানো হয়েছিল।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শাফি মো. মোস্তফা বলেন, কালো পতাকা ব্যবহার করতে দেখি কথিত ইসলামিক স্টেট বা ‘আইসিস’ গোষ্ঠীকে। তাই বাংলাদেশে এখন এই ধরনের পতাকার ব্যবহার করলে, এক ধরনের ট্যাগিংয়ের শিকার হওয়ার সম্ভাবনা থাকবেই।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান মো. মাসুদ করিম বলেন, আমরা এই বিষয়টি নিয়ে ক্লোজ মনিটরিং করছি। এর সঙ্গে কারা জড়িত থাকতে পারে সেটাও তদন্ত করছি। এছাড়া কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এমন অনেকে আছে যাদেরকে আমরা ওয়াচে রেখেছি।
ডিএমপি কমিশনার মাইনুল হাসান বলেন, এতদিন বিভিন্নভাবে আড়ালে থাকার পর এখন তারা মাঠে আসার চেষ্টা করছে। আমরাও আমাদের আইনি ব্যবস্থা নিশ্চিত করছি। তবে এসব সংগঠনকে প্রতিহত করতে হলে সাধারণ মানুষকেও এগিয়ে আসতে হবে।
সূত্র: বিবিসি বাংলা
রার/সা.এ
সর্বশেষ খবর