বাগেরহাট সদর উপজেলার শিরোখালী বেতখালী নাইটখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সোয়েবুল ইসলামের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাৎ, জালিয়াতি ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সকালে অত্র প্রতিষ্ঠানের সামনে অনুষ্ঠিত এক মানববন্ধনে এসব অভিযোগ করেন বিদ্যালয়টির ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক ও এলাকাবাসী। বক্তারা এ সময় দূর্নীতীর দায়ে অভিযুক্ত এ প্রধান শিক্ষকের দ্রুত অপসারণের দাবি জানান।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, প্রধান শিক্ষক নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠানের টাকা আত্মসাৎ, চেক জালিয়াতি করে আসছে। শিক্ষকসহ এলাকাবাসী তার অপকর্মের প্রতিবাদ ও বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পায়নি। জেলা পর্যায়ের কিছু আওয়ামী নেতৃবৃন্দের সাথে সখ্যতা থাকায় তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করেও কোনো কাজে আসেনি। স্কুলের শিক্ষকসহ কেউ কোন প্রতিবাদ করলেই হুমকি ধামকিসহ থারাব আচরণ করতেন তিনি। প্রতিষ্ঠান ঠিকমতো পরিচালনা না করে দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাৎ করে হাতিয়ে নিয়েছেন লক্ষ লক্ষ টাকা। তার এই অপকর্মের জন্যই একসময়ের খ্যাতি সম্পন্ন প্রতিষ্ঠান আজ ধ্বংসের পথে এসে নেমেছে। তাই এলাকাবাসীর একটাই দাবি দূর্নীতীবাজ প্রধান শিক্ষকের দ্রুত অপসারণ।
বক্তারা আরো বলেন, বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি মোল্লা আব : জব্বার এর মৃত্যুর পর তার স্বাক্ষর জাল করে ৯ টি চেকের মাধ্যমে টাকা আত্মসাৎ করেছে প্রধান শিক্ষক শোয়েব উল ইসলাম। ২০২৩ সালে বিদ্যালয়ে ৩ জন চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে ৩৩ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। বিদ্যালয়ের গাছ বিনা রেজুলেশনে কেটে নিয়ে বিক্রি এবং নিজের ঘরের ফার্নিচার তৈরি করেছেন প্রধান শিক্ষক।
এছাড়া জেলা পরিষদ থেকে বিদ্যালয়ের বাউন্ডারি সংস্কারের জন্য ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা এনে মাত্র ২০ হাজার টাকার কাজ করে বাকী টাকা আত্মসাৎ করেছেন তিনি। সরকারি বই অতিরিক্ত উত্তোলন করে বিক্রি করা, পুকুর ইজারা দেওয়া টাকা আত্মসাৎ, প্রতিবছর এসএসসি ফর্ম পূরণ বাবদ অতিরিক্ত টাকা আদায় করে আত্মসাৎ করা, প্রধান শিক্ষক ক্লাস না মাসে ৩-৪ দিন এসে হাজিরা খাতায় একসাথে সাক্ষর করেন। কোন নিয়ম কানুনের তোয়াক্কা না করে প্রতিষ্ঠানের রেজুলেশনসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট তার বাসায় রাখেন। তিনি, মাঠ সংস্কারের নামে টাকা আত্মসাৎসহ ২০১৩-১৪ সালের ৭ জন নিয়োগ দিয়ে প্রত্যেকের কাছ থেকে চার পাঁচ লাখ টাকা আত্মসাৎসহ নানা অভিযোগ রয়েছে প্রধান শিক্ষক সোয়েবুল ইসলামের বিরুদ্ধে। ৫ আগস্টের পর থেকে প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে আসেন না বলে জানান মানববন্ধনে বক্তারা।
এ সময় অত্র প্রতিষ্ঠানের মাস্টার এনামুল হক, ফেরদৌস শেখ, মশিউর রহমান, আরিফ শেখ, অত্র এলাকার ইমরান, কামরুজ্জামানসহ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক , ছাত্র ছাত্রী ও অত্র এলাকার প্রায় ৫ শতাধিক ব্যক্তি মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক সোয়েবুল ইসলামের সাথে একাধিক বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
বাগেরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপংকর দাশ বলেন, প্রধান শিক্ষকের বিষয়ে অভিযোগ শুনেছি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর