জয়পুরহাট জেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ২শ ৩৩ জন শিক্ষক চাকরি করছেন। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে এ তালিকা সংগ্রহ করা হয় এবং ইতোমধ্যে ওই তালিকা পরবর্তী নির্দেশনার জন্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আমিনুল ইসলাম মন্ডল জানান, শিক্ষক পদে কতজন আসল আর কতজন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি পেয়েছেন তা যাচাই-বাছাইয়ের জন্য এই তালিকা হতে পারে । তবে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বা সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার বা ৩য়-৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী পদে জেলায় মুক্তিযোদ্ধা কোটায় কেউই চাকরি করছেন না বলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে।
বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর কিছু দিনের মধ্যেই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের তালিকা সংগ্রহ করা হয় অধিদপ্তরের নির্দেশে। সেই অনুযায়ী শিক্ষকদের নামের তালিকা সংগ্রহ করে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ মোতাবেক ওই তালিকা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, গত আগস্ট মাসে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (পলিসি ও অপারেশন) লুৎফর রহমান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এই তথ্য চাওয়া হয় আবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ড. বিলকিস বেগম স্বাক্ষরিত অপর একটি চিঠিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পদে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নিয়োগপ্রাপ্ত জনবলের তথ্যও চাওয়া হয়।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, জয়পুরহাট জেলায় ৩৭২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বর্তমানে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি করছেন ২৩৩ জন শিক্ষক।
এর মধ্যে রয়েছেন সদর উপজেলায় ৬৪ জন, পাঁচবিবিতে ৩৯ জন, কালাইতে ৫৯ জন, ক্ষেতলাল উপজেলায় ১৯ জন ও আক্কেলপুর উপজেলায় ৫২ জন। ইতিমধ্যে এই তালিকা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় অনেক ব্যক্তিকে টাকার বিনিময়ে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সনদ দেওয়া হয়েছে। সেই সনদ ব্যবহার করে অনেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক পদে চাকরি নিয়েছেন এমন অভিযোগ রয়েছে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার বিষয়টি খতিয়ে দেখার পদক্ষেপ নিয়েছে। তারই অংশ হিসেবে দেশের সব উপজেলা থেকে শিক্ষকদের নামের তালিকা সংগ্রহ করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তর।
জয়পুরগাটের জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আমিনুল ইসলাম মন্ডল বলেন, আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তর থেকে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরিরত কর্মকর্তা, শিক্ষক ও কর্মচারীদের নামের তালিকা চাওয়ার পর আমরা প্রতিটি উপজেলায় তা জানিয়ে দেই। উপজেলা গুলো থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে দেখা যায়, জেলায় ২৩৩ জন শিক্ষক মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি করছেন। আমরা এসব তথ্য অধিদপ্তরে পাঠিয়েছি। অধিদপ্তর থেকে এ বিষয়ে কোনো নির্দেশনা পাওয়া গেলে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আমিনুল ইসলাম মন্ডল।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর