
সাম্প্রতিক পাহাড়ি-বাঙালির সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার ঘটনায় খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় অনুষ্ঠিত সম্প্রীতি সমাবেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, 'এখানে উপস্থিত সবাই চাঁদাবাজির শিকার। এখানে যারা আছেন প্রত্যেককে চাঁদা দিতে হচ্ছে। মুরগি বিক্রি হলে চাঁদা দিতে হচ্ছে আবার কলার ছড়া বিক্রি করলে চাঁদা দিতে হবে। না দিয়ে কোন উপায় নেই। এই চাঁদাবাজি নিয়ে আমরা খুবই চিন্তিত। এটা কখনো হতে পারে না। সবাইকে এখান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।'
তিনি বলেন, 'এখানে যারা সাধারণ পাহাড়ি-বাঙালি আছে তাদের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই। একটা দুষ্কৃতকারী গোষ্ঠী বিরোধ এবং সংঘাতের সৃষ্টি করছে। যারা এখানে সংঘাতের সৃষ্টি করছে তাদেরকে আইনের আওতায় আনতে হবে। যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পাহাড়ি -বাঙালি উভয়কে ধৈর্যশীল এবং সংযত হতে হবে। কারও উষ্কানিতে পড়া যাবেনা।'
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সকাল সোয়া ১১টায় দীঘিনালা উপজেলা পরিষদের অডিটোরিয়ামে সাম্প্রতিক ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে অর্থ সহায়তা, খাদ্য সামগ্রী বিতরণ এবং সম্প্রীতি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
দীঘিনালা উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত এ সমাবেশে প্রধান অতিথি সুপ্রদীপ চাকমা আরও বলেন, 'সম্প্রতি সারা দেশ থেকে সাজেক ভ্রমণে গিয়ে অনেক পর্যটক আটকে যান। এতে সরকার খুব বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছে। আমরা বিব্রত অবস্থায় পড়তে চাই না। কোনোভাবে সরকারের ইমেজ ক্ষুণ্ন হবে এমন কিছু করতে দেওয়া হবে না। পার্বত্য চট্টগ্রামে পর্যটকদের ভ্রমণে বিরত থাকার যে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে তা দ্রুত তুলে নেওয়া হবে।' এ বিষয়ে ঢাকায় ফিরে আলোচনা করে দ্রুত সিদ্ধান্ত জানানো হবে বলে জানান তিনি।
এছাড়া দীঘিনালায় গত ১৯ সেপ্টেম্বর পাহাড়ি-বাঙালি সংঘাত, হামলার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিচারের আওতায় আনার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। এ সময় যেকোনো ঘটনায় প্রশাসনের সহযোগিতা নিতে এবং আইন নিজের হাতে তুলে না নিতে অনুরোধ জানান তিনি।
এ সময় বক্তব্য রাখেন খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান, পুলিশ সুপার মো. আরেফিন জুয়েল, দীঘিনালা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মামুনুর রশীদ, দীঘিনালা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ধর্মজ্যোতি চাকমা, সাবেক চেয়ারম্যান নব কমল চাকমা, উপজেলা বিএনপি সভাপতি মো.শফিকুল ইসলাম সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ বক্তব্য রাখেন।
এর আগে, গতকাল সোমবার তিন পার্বত্য জেলায় ৮ অক্টোবর থেকে আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ২৪ দিন ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। এতে বড় ধরনের ঝুঁকিতে পড়েছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। তারা নিরাপত্তা নিশ্চিত করে দ্রুত এ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে দাবি জানান।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর