টানা বৃষ্টি না থাকায় শেরপুরে কমতে শুরু করেছে বন্যার পানি। তবে এখনো পানিবন্দি রয়েছেন প্রায় ৫০ গ্রামের মানুষ। অন্যদিকে পানি কমতে শুরু করায় ভেসে উঠছে বন্যায় ক্ষতির চিহ্ন। দুর্গত এলাকায় দেখা দিয়েছে খাবার ও সুপেয় পানির সংকট। চারদিনের বন্যায় মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের।

পুলিশ ও স্থানীয়দের তথ্যমতে, গত চারদিনে বন্যার পানিতে ডুবে মারা গেছেন, নালিতাবাড়ী উপজেলার খলিশাকুড়া গ্রামের ইদ্রিস আলী (৬৬), অভয়পুর গ্রামের দুই সহোদর ভাই হাতেম আলী (৩০) ও আলমগীর হোসেন (১৮), বাঘবেড় বালুরচর গ্রামের গৃহবধূ অমিজা বেগম (৪৫), বাতকুচি গ্রামের বৃদ্ধা জহুরা খাতুন (৭০), নকলা উপজেলার জালালপুর চিকনা এলাকার উজ্জল মিয়া (৫০), গণপদ্দি গজারিয়া এলাকায় আব্দুর রাজ্জাক (৬০) ও টালকি ইউনিয়নের বড়পাগলা গ্রামের রফিকুল ইসলামের পাঁচ বছর বয়সী ছেলে আব্দুর রহিম। এছাড়াও ঝিনাইগাতিতে বন্যার পানিতে ভেসে এসেছে এক অজ্ঞাত নারীর মরদেহ।

জেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, পৌনে দুই লাখ কৃষকের প্রায় ৫০ হাজার হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে এ বারের বন্যায়। বন্যায় শেরপুরে ক্ষতির পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকা। ৩ হাজার মাছের ঘের ভেসে গিয়ে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৩০ কোটি টাকা। বন্যার কারণে জেলার ২৪২টি প্রাথমিক ও ৮৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। জেলার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে প্রশাসন।

এদিকে, ঝিনাইগাতী উপজেলাতে পানি কমলেও এখনো ঘরে পানি রয়েছে নকলা ও নালিতাবাড়ীতে উপজেলার নিম্নাঞ্চলের বাড়ি ঘরে। স্থানীয় প্রশাসন, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন সেনাবাহিনী, বিজিবি ও বিভিন্ন দপ্তর। তবে সব জায়গায় নৌকা না থাকায় ত্রাণ সরবরাহে দেরি হচ্ছে।

শেরপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাকিবুজ্জামান খান বলেন, জেলার ভোগাই, চেল্লাখালী, মহারশি ও সোমেশ্বরী নদীর পানি বিপদসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র, মৃগী ও দশানী নদীর পানি কিছুটা বৃদ্ধি পেলেও বিপদসীমার অনেক নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। 

শাকিল/সাএ