আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান বলেছেন, আমরা যেসব ইতিহাস পড়ি ও পড়ানো হয় তার অধিকাংশই ব্রিটিশ ও ভারতীয় হিন্দু ঐতিহাসিকদের লেখা। মুসলমানদের লেখা ইতিহাস সম্পর্কিত বই কম। তবে আমাদের বেশি করে ইতিহাস চর্চা করা উচিত। আমরা বাঙালি মুসলমানরা নিজেদের ছোট মনে করে ইন্ডিয়ান হিন্দু ও বিট্রিশদের অনেক বড় স্কলার মনে করি; আসলে তা নয়। আমাদের এই হীনম্মন্যতা কেটে উঠতে হবে। মুসলিম স্কলারদের লেখা বইগুলোকে আমাদের পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। তাহলেই আমরা ভারতীয় হিজেমনির বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারব। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের প্রতি অনুরোধ আপনার যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক সিলেবাসে বই নির্বাচন করবেন, তখন মুসলিম স্কলারদের বইকে প্রাধান্য দিবেন।
বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) বেলা ১২টায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এসব কথা বলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির করিডোরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।
তিনি বলেন, আমি মালয়েশিয়া ইসলামিক ইউনিভার্সিটিতে ভারতীয় আগ্রাসন বিষয়ে পিএইচডি সম্পন্ন করেছি। আমার থিসিসগুলো ইডিট করে বই আকারে চাপাব। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় চাইলে এই থিসিসগুলো পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করতে পারে। তাহলে আমরা ভারতীয় আধিপত্যবাদ আগ্রাসন সম্পর্কে জানতে পারব।
সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেন, দুটি লক্ষ্যকে সামনে রেখে ছাত্র-জনতার আন্দোলন হয়েছে। এক, ফ্যাসিবাদ সরকারের পতন ঘটানো। দুই, ভারতীয় আধিপত্যবাদকে সমূলে নির্মূল করা। আমরা প্রথমটি লক্ষ্য অর্জন করেছি। কিন্তু দ্বিতীয়টি আমরা এখনও অর্জন করতে পারিনি। ১৯৪৭ সাল থেকেই ভারতীয় হিন্দুত্ববাদ দক্ষিণ এশিয়ায় প্রভুত্ব কায়েম করতে চেয়েছিল। কিন্তু পুরোপুরিভাবে তারা সেটা করতে ব্যর্থ হয়েছে৷ পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও মালদ্বীপে তারা চেষ্টা করেও পারেনি। সেখানকার সরকার ভারতীয় দখলদার সেনাবাহিনীকে তাদের দেশ থেকে বিতাড়িত করেছে। এমনকি হিন্দু ও বৌদ্ধ রাষ্ট্র নেপাল এবং শ্রীলঙ্কায়ও তারা ব্যর্থ হয়েছে। তারা শুধু মাত্র ভুটান এবং বাংলাদেশে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছিল। শেখ হাসিনার মাধ্যমে তারা এদেশে তাদের নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছিল।
তিনি আরো বলেন, এখন আমাদের সুযোগ এসেছে, ভারতীয় আধিপত্যবাদকে চিরতরে উৎখাত করার। ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে লড়তে গিয়ে আবরার শহীদ হয়েছে। আমাদের এ লড়াইকে অব্যাহত রাখতে হবে৷ বিগত সময়ে শেখ হাসিনার দুষ্কর্মের আলোচনাগুলো এখন স্তিমিত হয়ে গেছে। তার দানবীয় কর্মকাণ্ড আমরা ভুলে যেতে শুরু করেছি। আমরা আওয়ামীলীগের দুষ্কর্ম নিয়ে কথা বলছি না বলেই সুযোগসন্ধানীরা কথা বলার সুযোগ পাচ্ছে। তাই আমাদেরকে সোশ্যাল মিডিয়ার বুদ্ধিভিত্তিক চর্চা অব্যাহত রাখতে হবে। তার কর্মকাণ্ড স্মরণ করিয়ে দিতে হবে।
সর্বশেষ খবর
ক্যাম্পাস এর সর্বশেষ খবর