মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণ ভাগ দক্ষিণ ইউনিয়নের পূর্ব-দক্ষিণভাগ গ্রামের বাসিন্দা ও বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউনিয়নের সভাপতি সনজিৎ কুমার দাসের বসতবাড়িতে রাখা মালিকানাধীন ট্রাক পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছে বসতবাড়ি। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের এমন ন্যাক্কার জনক ঘটনা নিয়ে পুরো জেলা জুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে।
সোমবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দুর্বৃত্তদের আগুনে পুড়ে যাওয়া ট্রাকটি এখনো পড়ে রয়েছে বাড়ির আঙিনায়। পরিবারের সদস্যদের চোখে-মুখে এখনো রয়েছে আতঙ্কের ছাপ। নিরাপত্তাহীনতায় থাকা পুরো পরিবারটি প্রশাসনের কাছে চেয়েছেন বেঁচে থাকা নিরাপত্তা।
জানা যায়, শনিবার (১২ অক্টোবর) ভোররাতে অগ্নিকান্ডের এই ঘটনাটি ঘটেছে। ট্রাকের গ্যারেজ থেকে এসময় বসতঘরে আগুন ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসী তা নিভিয়ে ফেলায় রক্ষা পেয়েছে সনাতন ধর্মীয় নেতা ব্যবসায়ী সনজিত দাসের বসতঘর।
সনজিৎ কুমার দাশের মা আরতি রানী দাশ ও ভাবী জোৎস্না রাণী দাশ বলেন, গ্রামে আমরা আটটি হিন্দু পরিবার যুগ যুগ ধরে বসবাস করছি। মুসলমানদের আচার অনুষ্ঠানে আমরা যাই তারাও আমাদের অনুষ্ঠানে আসেন। কিন্তু ইদানিংকালে পরপর কয়েকটি ঘটনার কারণে আমরা আতঙ্কিত। বর্তমানে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছি। আমরা দুর্বৃত্তদের বিচার চাই।
সনজিৎ কুমার দাস অভিযোগ করে বলেন, পূর্ব-দক্ষিণভাগ গ্রামে আমরা প্রজন্মের পর প্রজন্ম বংশপরম্পরায় বসবাস করে আসছি। পূর্বে এ গ্রামে অধিকাংশ হিন্দু পরিবার বসবাস করলেও বর্তমানে আমরা মাত্র আটটি হিন্দু পরিবার বসবাস করে আসছি। কিন্তু গত শনিবার ভোররাতে দুর্বৃত্তরা বসতঘর সংলগ্ন গ্যারেজে থাকা তার ট্রাকগাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। মুহূর্তেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে গাড়িটিসহ গ্যারেজ সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়ে যায়। গ্যারেজের আগুন বসতঘরের দিকে ধাবিত হলে স্বজন ও প্রতিবেশীরা মিলে তা নিভিয়ে ফেলায় বসতঘরটি রক্ষা পায়। ট্রাক পুড়ে তার অন্তত ১২ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এর আগে ১০ গত আগস্ট অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা রাতের আঁধারে গাড়ির গ্যারেজ থেকে ৪০০ কেজি রড নিয়ে গেছে। গত ৮ অক্টোবর রাতে পুকুরে বিষ প্রয়োগ করে ৬০/৭০ হাজার টাকার মাছ মেরে ফেলেছে। গত ১০ অক্টোবর বসতঘরের তালা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা চালিয়েছে। এসব ব্যাপারে শনিবার বিকেলেই আমি থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি। পরবর্তীতে বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের অবগত করি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বড়লেখা থানার ওসি আব্দুল কাইয়ুম বলেন, এ বিষয়ে থানায় একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর