কুমিল্লায় অটোরিক্সা চালানোকে কেন্দ্র করে সালিশী বৈঠকে দু’পক্ষে সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে বাবুল মিয়া (২৭) নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় ৫ জনকে কুপিয়েছে সালিশী বৈঠকের অপর পক্ষের লোকজন।
রবিবার (১৩ অক্টোবর) রাত ৯ টার দিকে জেলার মনোহরগঞ্জ উপজেলার খিলা ইউনিয়নের সাতেশ্বর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
সোমবার (১৪ অক্টোবর) সকালে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
নিহত বাবুল মিয়া ওই গ্রামের সোলেমান মিয়ার ছেলে। বাবুলের আড়াই বছর বয়সী একটি ছেলে রয়েছে। তিনি দিনমজুরের কাজ করতেন। বিষয়টি গতকাল দুপুরে নিশ্চিত করেন মনোহরগঞ্জ থানার ওসি বিপুল চন্দ্র দে।
পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রবিবার বেলা ১১টার দিকে সাতেশ্বর গ্রামের নড়াই বাড়ির পাশ দিয়ে অটোরিকশা চালিয়ে যাচ্ছিল একই গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে রিমন ওরফে হৃদয় মিয়া। দ্রুতগতিতে অটোরিকশা চালিয়ে যাওয়ায় ওই বাড়ির শিশুদের গায়ে ধাক্কা লাগে। এ নিয়ে ওই বাড়ির বাসিন্দাসহ স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে অটোরিকশা চালক হৃদয়ের বাগ্বিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয়। পরে হৃদয় ফেরার সময় বিষয়টি নিয়ে ওই বাড়ির লোকজনের সঙ্গে আবারও ঝামেলা হয়। ঘটনাটি সমাধানের জন্য গতকাল সন্ধ্যার পর সাতেশ্বর পূর্বপাড়ার একটি দোকানের সামনে সালিশ বৈঠক বসে।
এ সময় ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন, স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য ও ওয়ার্ড বিএনপির সহ সভাপতি আবদুল মতিন, ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি এমরান হোসেনসহ গ্রামের মাতব্বরেরা দুই পক্ষকে মিলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু অটোরিকশাচালক হৃদয়সহ তার পক্ষে থাকা রুবেল, অন্তর, সুমন, রিপন, আবদুল্লাহসহ বেশ কয়েকজন এ সিদ্ধান্ত মেনে নেননি। তারা অপর পক্ষের ওপর হামলা করলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ লেগে যায়। এক পর্যায়ে বাবুলসহ স্থানীয় লোকজন তাদের থামাতে গেলে হৃদয়সহ তার লোকজন চাপাতি দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। এ সময় বাবুলকে পায়ে, পিঠে ও হাতে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। পরে দ্রুত উদ্ধার করে লাকসাম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় গুরুতর আহত দুলাল মিয়া, আবদুল মান্নান, মনির হোসেন, যুবদল নেতা এমরান হোসেনসহ পাঁচজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মনোহরগঞ্জ থানার ওসি বিপুল চন্দ্র দে বলেন, এক পর্যায়ে বাবুলসহ স্থানীয়রা তাদেরকে থামাতে গেলে হৃদয়সহ তার লোকজন তাদের চাপাতি দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে শুরু করে। এ সময় বাবুলকে পায়ে, পিঠে ও হাতে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়।
পরে দ্রুত তাকে উদ্ধার করে লাকসাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক জানান, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে হাসপাতালে আনার আগেই তিনি মারা গেছেন।
তিনি বলেন, আড়াই বছর বয়সী পুত্র সন্তানের জনক পেশায় দিনমজুর বাবুলের লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। ঘটনায় জড়িত হৃদয়সহ অন্যদের আটকের চেষ্টা করছে পুলিশ।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর