যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষকে হত্যার হুমকি, শিক্ষকদের প্রকাশ্যে লাঞ্ছিত, মানসিক নিপীড়ন, অধ্যক্ষের কক্ষ দখল, বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের সাথে যোগাযোগ করে বিদ্যালয়ে একক আধিপত্য বিস্তার ও পড়ালেখার পরিবেশ অস্থিতিশীল করাসহ নানা অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মো. আবুল কালামের বিরুদ্ধে। বিদ্যালয়টিতে কর্মরত ৯ জন শিক্ষক এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের নিকট একাধিকবার মৌখিক ও লিখিত আকারে অভিযোগ জানিয়েছেন।
লিখিত অভিযোগে জানা যায়, প্রধান শিক্ষক যবিপ্রবি স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষকে পদ থেকে সরাতে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র, অধ্যক্ষকে হত্যার হুমকি, শিক্ষকদের লাঞ্ছিত, শিক্ষার্থীদেরকে হুমকি-ধামকি দিয়ে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে উসকে দেওয়া, ক্লাস চলাকালীন লেখাপড়া বাদে শ্রেণিকক্ষে ক্যারাম খেলা ও মুড়ি পার্টির আয়োজন, কলেজ হতে না দেওয়া, স্কুলের পাঠদান ও পড়ালেখার পরিবেশ অস্থিতিশীলসহ বিভিন্ন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন। বিদ্যালয়টিতে পড়ুয়া একাধিক শিক্ষার্থীর অভিভাবকের সাথে কথা বলেও এসব ঘটনার সত্যতা মিলেছে।
স্কুলের এক শিক্ষক বলেন, যবিপ্রবি স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ পদকে অস্বীকৃতি জানান স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. আবুল কালাম ও অধ্যক্ষকে তাঁর পদ থেকে সরানোর জন্য প্রধান শিক্ষক এলাকার লোকজনের সাথে দফায় দফায় মিটিং করেন। এমনকি তিনি অধ্যক্ষ ড. মো. মেহেদী হাসান স্যারকে হত্যারও হুমকি দেন । এছাড়া অধ্যক্ষ স্যার যদি স্কুলে আসেন তবে রক্তারক্তি হবে বলে হুমকি দেন, এ কথা তিনি শিক্ষার্থীদের নিকটও বলেন। তাছাড়া অধ্যক্ষ স্যার যাতে স্কুলে না আসেন সে জন্য প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম স্যার রামকৃষ্ণ স্যারের মাধ্যমে ভয় দেখান যে, যদি অধ্যক্ষ স্কুলে আসেন তবে স্যারের জীবনে ভয়ংকর কিছু ঘটবে।
ঐ শিক্ষক আরো জানান, প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম প্রকাশ্যেই বলেন, 'অধ্যক্ষকে সরানোর জন্য আমাকে যত নিচে নামতে হয় নামবো, আমি চাকুরি বা জীবনের পরোয়া করি না।'
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক স্কুল শিক্ষক সাংবাদিকদের জানান, প্রধান শিক্ষক ও তার সহযোগীরা আমাদেরকে চাকরিচ্যুতি, রক্তপাত ও হত্যার হুমকি দেন। তারা এলাকার লোকজন এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের সাথে যোগাযোগ করে বিদ্যালয়ে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করে। তাই অধ্যক্ষ মহোদয় অপমানিত বোধ করে অভিমানে অব্যাহতি দেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁকে আবার নতুনভাবে অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেন। ইতোমধ্যে প্রধান শিক্ষক জোরপূর্বক অধ্যক্ষ মহোদয়ের কক্ষ ও চেয়ার দখল করেন এবং বিদ্যালয়ে স্বৈরাচারী আচরণ শুরু করেন। এছাড়াও প্রধান শিক্ষক যবিপ্রবি স্কুলে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এ্যালামনাইদেরকে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী আখ্যা দেন, অর্থের প্রলোভন দেখান ও শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সামনে অপমানিত-লাঞ্চিত করেন প্রধান শিক্ষক। প্রধান শিক্ষকের একক আধিপত্য বৃদ্ধি করতে স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক মোছা. নুরুন্নাহার রেশমা, আয়েশা সুলতানা, মো. নাসিরুল ইসলাম ও বি, এম, মিজানুর রহমান প্রধান শিক্ষকের সুর মিলিয়ে আমাদের বেতন বন্ধের হুমকি, অশালীন ব্যবহার ও বিভিন্নভাবে হেয় প্রতিপন্ন করে।
এ বিষয়ে সকল অভিযোগ প্রত্যাখান করে যবিপ্রবি স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক মো. আবুল কালাম বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে সেগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। এর সাথে আমার বিন্দুমাত্র সংশয়িতা নেই। স্কুলের কিছু শিক্ষক আমাকে পদ থেকে সরানোর জন্য ষড়যন্ত্র করছে।
এ বিষয়ে জানতে যবিপ্রবি রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. আহসান হাবীবকে একাধিকবার মুঠোফোনে কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর
ক্যাম্পাস এর সর্বশেষ খবর