খতিয়ানভুক্ত জায়গা জবরদখলের চেষ্টা, সৃজিত বাগানের কয়েক লক্ষ টাকার গাছ কেটে নিয়ে যাওয়া, জোরপূর্বক পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি ও ভবন নির্মাণের সামগ্রী লুটপাটের ঘটনার ইউপি মেম্বার ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. নাছির উদ্দিন ও তার সহযোগী মো. ইয়াছিন মাষ্টারের বিরুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত জায়গার মালিকরা সংবাদ সম্মেলন করেছে।
বান্দরবানের লামার সরই ইউনিয়নের কম্পনিয়া এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন বুধবার (১৬ অক্টোবর) বেলা ১১টায় লামা প্রেস ক্লাব হলরুমে এই সংবাদ সম্মেলন করে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, অসহায় জায়গার মালিক মো. রফিক ও মো. জসিম উদ্দিন। এছাড়া এই ভূমিদস্যু ইউপি মেম্বারের কুকর্ম বর্ণনা দিতে কম্পনিয়া এলাকার খানে আলম, আনোয়ারা বেগম, জাহেদ হোসেন, মো. আলতাব মিয়া, মো. ফরিদুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম, শামসুল ইসলাম সহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে মো. রফিক বলেন, আমরা দুই ভাই মো. রফিক ও জসিম উদ্দিনের নামে লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের কম্পনিয়া এলাকায় খতিয়ান নং ৩৮ এবং আর হোল্ডিং ১০০৭ মূলে ৭.০০ একর জায়গা সরকারিভাবে রেকর্ডভুক্ত আছে এবং দীর্ঘদিন ধরে সেই জায়গায় বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা সৃজন করে ও বাগানবাড়ি করে ভোগদখলে আছি। আমাদের উক্ত জায়গার উপর কম্পনিয়া পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। আমাদের জায়গায় জোরপূর্বক স্কুল স্থাপন করলেও এলাকার স্বার্থে এবং শিক্ষা প্রসারের লক্ষ্যে বিষয়টি আমরা মেনে নিই। ভূমি রেকর্ডপত্র ও দীর্ঘদিনের ভোগদখলের সূত্রে এই জায়গার মালিক আমরা। কিন্তু উক্ত এলাকার ওয়ার্ড মেম্বার মো. নাছির উদ্দিন এবং তার সহযোগী মো. ইয়াছিন মাস্টার কোনোভাবে আমাদের নামীয় জায়গা স্বীকার না করে নিজেকে বিগত সরকারের নেতা দাবি করে লোকজন ও পেশিশক্তি ব্যবহার করে আমাদেরকে বিভিন্ন হয়রানি ও নির্যাতন করে আসছে।
এছাড়া সম্প্রতি সময়ে ওয়ার্ড মেম্বার মো. নাছির উদ্দিন এবং তার সহযোগী ওই স্কুলের সহকারী শিক্ষক মো. ইয়াছিন ‘কম্পনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের’ পাশ ঘেঁষে পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি করছে। দীর্ঘদিন ধরে পাহাড় কাটা হলেও দেখার কেউ নাই। স্কুলে পাশ ঘেঁষে অন্তত ২৫ ফুট উঁচু করে মাটি কাটায়, ঝুঁকিতে পড়েছে স্কুল ভবনটি। স্কুলের পশ্চিম পাশের পাহাড় থেকে কমপক্ষে ৫শত গাড়ি মাটি কেটে নিয়ে গেছে। ২৫ থেকে ৩০ ফুট উচু করে কাটা হয়েছে পাহাড়টি। যে কোন পাহাড় ধসে স্কুলের উপর পড়ে, ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
এই জায়গা থেকে আমাদের লাগানো কয়েক লক্ষ টাকার গাছ দিনেদুপুরে কেটে নিয়ে গেছে। এইসব নিয়ে কথা বলায় নাছির মেম্বার বিগত সরকারের ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতা হওয়ায় আমাদের নানাভাবে হয়রানি করে যাচ্ছে। আমরা এই বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন, বান্দরবান পরিবেশ অধিদপ্তর ও লামা থানাকে অনেকবার অবহিত করেছি। কোন প্রতিকার পায়নি। উক্ত জায়গায় ভবন নির্মাণের জন্য আমরা ৮ হাজার ইট ও কিছু মালামাল এনে রাখি। রাতের আধাঁরে এইসব মালামাল নিযে যায় নাছির মেম্বার। ওই এলাকায় সে প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস করছেনা। মূলত স্কুলকে পুঁজি করে পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি, গাছ লুটপাট করছে। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত জায়গার মালিকরা আমাদের উপর ঘটে যাওয়া বিভিন্ন নির্যাতন ও হয়রানির বিষয়ে সাংবাদিক সমাজের মাধ্যমে সহযোগিতা কামনা করছি।
এই বিষয়ে ওয়ার্ড মেম্বার মো. নাছির উদ্দিন বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ গুলো মিথ্যা। এগুলো খাস জায়গা। আমরা কারো জায়গা দখল বা গাছ কেটে নিয়ে যায়নি। সরই ইউপি চেয়ারম্যান মো. ইদ্রিস কোম্পানী বলেন, ৩০টি গাছ কাটছে বলে জানি। এই বিষয়ে মো. রফিক ও জসিম উদ্দিন মামলাও করেন। লামার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল কাটা গাছ গুলো দিয়ে দিতে নির্দেশ দিলেও নাছির দেয়নি।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর