চট্টগ্রাম নগরের জামালখান এলাকায় শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) মধ্যরাতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমর্থনে মিছিল করেছে একদল যুবক। বেশকিছু সময় মিছিল করার পর যুবকেরা সটকে পড়ে। মিছিলে অংশ নেয়া যুবকদের অনেকের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। মিছিল করার খবর প্রকাশের পর ক্ষোভে ফেটে পড়েন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা।
তারা শনিবার বিকালে নগরীর দামপাড়া এলাকায় সিএমপি কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেছে। এ সময় হাসিনার পক্ষে মিছিলকারীদের গ্রেপ্তারে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছে। এসময়ের মধ্যে গ্রেপ্তারে ব্যর্থ হলে নগরের তিন থানার ওসি সহ পুলিশ কমিশনারের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন তারা।
শনিবার বিকাল ৩টার দিকে নগরীর জামাল এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমর্থক শিক্ষার্থীরা। বিকেল ৫টার দিকে নগরীর দামপাড়া এলাকায় সিএমপি কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করা হয়। ঘেরাও চলাকালে তিন ওসি প্রত্যাহারে আল্টিমেটাম দেন চট্টগ্রামের সমন্বয়করা।
চট্টগ্রামের সমন্বয়ক রাসেল আহমদ বলেন, চট্টগ্রামে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগ ও তার দোসরদের নিষিদ্ধের ঘোষণা করা হলো। ছাত্রলীগ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করতে না পারায়, এই মুহূর্তে মার্চ টু সিএমপি এবং সিএমপি ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা করা হলো।
রাসেল আহমদ বলেন, এখন পর্যন্ত যেহেতু ছাত্রলীগ-যুবলীগের খুনি-সন্ত্রাসীদের পুলিশ আইনের আওতায় নিয়ে আসতে পারেনি তাই তাদেরকে আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছি৷ জামালখানে খুনি শেখ হাসিনার পক্ষে যারা স্লোগান দিয়েছে তাদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যদি প্রশাসন আইনের আওতায় আনতে না পারে তাহলে চকবাজার, কোতোয়ালী এবং পাঁচলাইশ থানার ওসি কে পদত্যাগ করতে হবে। একইসাথে সিএমপি কমিশনারকেও প্রত্যাহার করতে হবে। যদি না হয় আমরা আগামীকাল থেকে কঠোর কর্মসূচি দেব।
সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, চট্টগ্রামের মাটিতে শহীদ ওয়াসিম, শহীদ শান্ত এবং শহীদ হৃদয় তরুয়ার রক্ত লেগে আছে। সেই রাজপথে তারা স্লোগান দেওয়ার মতো দুঃসাহস দেখিয়েছে। দ্রুত তাদের খুঁজে বের করে বিষদাঁত ভেঙে দিতে। প্রশাসনের প্রতি আমাদের আহ্বান থাকবে দ্রুত সময়ের মধ্যে যারা সন্ত্রাসী, জুলাই অভ্যুত্থানে হামলায় সরাসরি জড়িত তাদের গ্রেপ্তার করে যথাযথ শাস্তি দিতে হবে।
এর আগে বৃষ্টি উপেক্ষা করে বিকেল ৩টা থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা প্রেস ক্লাব চত্বরে সমবেত হতে থাকেন। বিকেল ৪টার দিকে প্রেস ক্লাব চত্বর ছাড়িয়ে জামালখান পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে সমাবেশ। বিক্ষোভে অংশ নেন অনেক নারী শিক্ষার্থীও।
এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) কাজী মো. তারেক আজিজ বলেন, বিষয়টি আমরা অবগত। খুব গুরুত্বের সাথে প্রশাসন বিষয়টি দেখছেন। ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
গত শুক্রবার দিনগত রাত পৌনে একটার দিকে কোতোয়ালী থানার জামালখান সড়কে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ জন যুবক জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগান দিয়ে মিছিল বের করে।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর