সাবেক স্ত্রীকে দেনমোহরের ৩ লাখ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন হামলার শিকার সেই বর শফিকুল ইসলাম। উভয়পক্ষের লোকজন থানায় বসে সমঝোতার পর তিনি বিয়ে করেন।
রবিবার (২০ অক্টোবর) হামলার শিকার হওয়া শফিকুল ইসলামের বাবা জাহিদুল ইসলাম তার ছেলেকে দ্বিতীয় বিয়ে করানোর ঘটনাটি বিডি২৪লাইভ.কম- কে নিশ্চিত করে বলেন, গত শুক্রবার রাতেই আমার ছেলের দ্বিতীয় বিয়ে হয়েছে।
এর আগে, শফিকুল ইসলাম স্বজনদের নিয়ে মাইক্রোবাসে করে দ্বিতীয় বিয়ে করতে রওনা দিলে বরের গাড়িতে হামলা করেন প্রথম স্ত্রীসহ (তালাকপ্রাপ্ত) তার স্বজনরা। এতে বর শফিকুলসহ কমপক্ষে ৩ জন আহত হন।
গত শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের রসুলপুর (ফকিরপাড়া) এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বর শফিকুল ইসলামসহ আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করেন। এ ঘটনার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। বিভিন্ন গণমাধ্যমেও ফলাও করে সংবাদ প্রচার হয়। এতে জেলাজুড়েই ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
উভয়পক্ষের সমঝোতার বিষয়টি নিশ্চিত করেন সাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজউদ্দিন খন্দকার। তিনি বলেন, ‘ঘটনার পরেই হামলার শিকার বর শফিকুলকে উদ্ধার করে থানায় আনা হয়। এরপর রাতেই উভয়পক্ষের লোকজন বসে ঘটনাটি মীমাংসা করেন। পরে শফিকুলকে তার স্বজনদের জিম্মায় দেওয়া হয়। রাতেই তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করেন বলে জেনেছি।’
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, রসুলপুর ইউনিয়নের রসুলপুর (মধ্যপাড়া) গ্রামের জাহিদুল ইসলামের ছেলে শফিকুল ইসলামের সঙ্গে ২০২২ সালের জানুয়ারিতে বিয়ে হয় পারভীন খাতুনের। পারভীন ফকিরপাড়া গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের মেয়ে। কিন্তু বিয়ের আড়াই বছর সংসার করার পর পারভীনকে তালাক দেয় শফিকুল। কিন্তু তালাকের তিন মাস পার হলেও দেনমোহরের ৪ লাখ টাকা পরিশোধ করেনি শফিকুল।
প্রথম পক্ষের স্ত্রী পারভীন খাতুনের অভিযোগ, দেনমোহরের টাকা না দিয়ে আমাকে তালাক দেয় শফিকুল। দেনমোহরের টাকার দাবিতে দ্বিতীয় বিয়ে করতে যাওয়ার সময় তাকে আটক করেছি। পরে থানায় বসা হলে আমাকে ৩ লাখ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ছাড়া পায় শফিকুল।
তবে বর শফিকুল ইসলামের অভিযোগ, হঠাৎ তাদের গাড়ি থামিয়ে হামলা করে পারভীনসহ তার পরিবারের লোকজন। এ সময় তাকেসহ সঙ্গে থাকা ৩-৪ জনকে বেদম মারধর করা হয়। পকেট থেকে টাকা ও হাতে থাকা আংটিও খুলে নেয় তারা। পারভীনকে তালাক দেওয়ার পরেই বিয়ের সিদ্ধান্ত নিই। কিন্তু বিয়ে করতে যাওয়ার সময় আমাদের ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা করেন তারা।
এ বিষয়ে শফিকুল ইসলামের বাবা জাহিদুল ইসলামের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘প্রথম স্ত্রী পারভীনকে তালাক দেয় আমার ছেলে। কিন্তু দ্বিতীয় বিয়ে করতে যাওয়ার সময় তার ওপর হামলা করে পারভীনসহ তার স্বজনরা। পরে থানায় বসে ৩ লাখ টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্তে ঘটনাটি সমাধান হয়। এরপর রাতেই দ্বিতীয় বিয়ে করেন শফিকুল।’
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর