
গত দুই মাসের টানা বৃষ্টিতে ধানক্ষেতে জলাবদ্ধতায় পচে যায় কৃষকের আমন ধানের বীজতলা। বীজতলা পচে যাওয়ায় আমন চাষাবাদে বড় রকমের লোকসানে পড়েছেন উপকূলীয় জেলা বরগুনার দরিদ্র কৃষকরা। একাধিকবার ধানের বীজ বপন করেও ধানের চারা তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছেন কৃষক। শেষ অবধি ধার দেনা করে পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে ধানের চারা ক্রয় করে রোপন করেছেন।
তাই এবারে আমন মৌসুমে আশানুরূপ ফলন পাবেন না বলে লোকসানের আশঙ্কায় দুশ্চিন্তা করছেন তারা। শুধু তাই নয়, প্রাকৃতিক এই দুর্যোগের কারণে, আমন ফসলে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে দুই মাস পিছিয়ে আছেন দরিদ্র এই জনগোষ্ঠী।
জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বরগুনা জেলায় এ বছর ৯৯ হাজার ৪'শ ৩২ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ৯৯ হাজার ১'শ ৯২ হেক্টর জমিতে আমনের আবাদ হয়েছে। তবে, অতি বৃষ্টির ফলে প্রায় ৩'শ হেক্টর জমির বীজতলা সম্পূর্ণরূপে নষ্ট হয়ে গেছে।
বরগুনা সদর ইউনিয়নের বৈঠাঘাটা গ্রামের কৃষক বাদল মিয়া বলেন, পর্যায়ক্রমে ৩ বার আমনের বীজ বপন করেছি কিন্তু অতি বৃষ্টিতে বীজতলায় পানি জমে তা পচে যায়। শেষবারে কিছু বীজ করে তা দিয়ে কোন রকম জমিতে রোপণ করেছি। বর্তমানে আমি প্রায় ৬০ হাজার টাকা দেনায় আছি। আমার ৮ একর জমি সব চাষ করতে পারিনি। এখনও ২০ শতক জমি অনাবাদি রয়েছে।
শুধু বীজতলাই নয় অতি বৃষ্টিতে বিভিন্ন সবজি ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ায় সবজি চাষেও এবার লোকসান গুণছেন সবজি চাষিরা।
বরগুনার বুড়িরচর গ্রামের সবজি চাষি আনছার উদ্দিন জানান, বিভিন্ন জাতের সবজি চারা ও বীজ বার বার রোপণ করেও পচনের হাত থেকে শেষ রক্ষা করতে পারেননি তিনি। পুনরায় বীজ কিনে চারা রোপন করবেন সে সামর্থ্যও নেই তার । এত বৃষ্টি কখনো দেখেননি বলে তিনি জানান।
এ বিষয়ে বরগুনার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক ড. আবু সৈয়দ মো. জোবায়দুল আলম বলেন, অতি বৃষ্টির কারণে এ অঞ্চলে আমন ধানের চারার ব্যাপক ক্ষতি হয়। পরবর্তীতে পার্শ্ববর্তী জেলা এবং বিভিন্ন উপায়ে আমনের চারা ক্রয় করে কৃষকরা এ সমস্যা অনেকটা কাটিয়ে ওঠেন। আমনের বীজতলা ক্ষতিগ্রস্তের পাশাপাশি প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমির শাক-সব্জিরও বেশ ক্ষতি হয়েছে। প্রতি বছর যে সরকারি প্রণোদনার কর্মসূচি থাকে এই কর্মসূচির আওতায় বরগুনা জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত তালিকাভুক্ত ৪০০ জন কৃষককে সার ও বীজ দিয়ে সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন তিনি।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর