
মা ইলিশ রক্ষায় ২২দিনে নদীতে ইলিশ মাছ ধরা, বিক্রি ও পরিবহণ নিষিদ্ধ থাকলেও রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার নদী পদ্মা নদীর তীরবর্তী এলাকায় প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ মাছ। পদ্মা নদীতে অভিযান চললেও এরপর রাতের অধিকাংশ সময় নদী অরক্ষিত থাকে। তখন শত শত জেলে নদীতে ইলিশ মাছ শিকারে নেমে পড়ে। নদীতে মৎস্য বিভাগ ও প্রশাসনের টহল না থাকায় জেলেরা এখন বেপরোয়া।
নদী এলাকায় চলছে এসব চোরাই ইলিশের বেচা কেনা। বিশেষ ক্ষেত্রে শহরে এনে চোরাই ইলিশ হোম ডেলিভারিও দিচ্ছে অসাধু জেলে ও তাদের লোকজন। সরেজমিনে রবিবার সকালে হাবাসপুর পদ্মা নদীতে জেলেদের নৌকা নিয়ে মাছ শিকার করতে দেখা গেছে। সেই সাথে নদী পাড়ে যেন ইলিশের হাট বসছে এমন ভীর
একই দিন বেলা ১২টার দিকে উপজেলার দেবগ্রাম হাবাসপুর ইউনিয়নের শাহমিরপুর বাজার এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, অবৈধভাবে জেলেরা নদী থেকে ইলিশ মাছ শিকার করে নদীর তীরে এনেই বিক্রি করছে। ১ কেজির উপরে বড় ইলিশ মাছগুলো ১ হাজার থেকে ১৩ শত টাকা ও ছোট ইলিশ ৪০০/৫০০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছে। তবে এ সময় নদীতে মৎস্য বিভাগের কোনো অভিযান পরিচালনা করতে দেখা যায়নি।
এ দিকে নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন সময়েও প্রকাশ্যে ডালিতে করে ইলিশ বিক্রি দেখা গেছে বিভিন্ন স্থানে।
জানা গেছে, নিষেধাজ্ঞা শুরু হওয়ার পর থেকে নদী থেকে দিনে ও রাতে অবৈধভাবে ধরা ১ কেজি বা তার চেয়ে বেশী ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১২০০ টাকা কেজিতে। আর ২৫০ গ্রাম বা তার চেয়ে কম/বেশী ওজনের সাইজের ইলিশ ৫০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এসব মাছ শহরে জেলে ও তাদের লোকজন বিভিন্ন বাসা বাড়িতে হোম ডেলিভারি দিচ্ছে।
রাজবাড়ি জেলা মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত ১৩ ই অক্টোবর থেকে গতকাল ১৯শে অক্টোবর ৭ দিনে জেলায় মা ইলিশ রক্ষা অভিযান চালিয়ে মোবাইল কোর্টে ৪ জন জেলেকে কারাদণ্ড, ২৬ হাজার ৪০০ টাকা আর্থিক জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়াও এই ৭ দিন অভিযান চালিয়ে ইলিশ শিকারে ব্যবহৃত অবৈধ ১.৬২৫ লক্ষ মিটার কারেন্ট জাল পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে ও ৩১০ কেজি ইলিশ মাছ জেলেদের কাছ থেকে জব্দ করে স্থানীয় এতিমখানায় দান করে দেওয়া হয়েছে।
তবে জেলা মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তারা বলছে, নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে যে-সব জেলেরা মাছ ধরছেন তাদের ভিজিএফসহ অন্যান্য সুবিধা বাতিল করা হচ্ছে। এছাড়াও মোবাইল কোর্টে তাদের জেল, জরিমানা করা হচ্ছে ও জব্দকৃত জাল পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।
উল্লেখ্য, এ বছর রাজবাড়ীতে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান-২০২৪ চলছে ঢিলেঢালাভাবে। বিগত বছরগুলোতে লাগাতার অভিযান পরিচালিত হলেও এবার চলছে কচ্ছপ গতিতে। নিষেধাজ্ঞা শুরু হওয়ার পর থেকে নদী থেকে দিনে ও রাতে অবাধে ইলিশ শিকার করছে জেলেরা।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর