অনেক সময় আমরা পছন্দের খাবারটি একটু বেশিই খেয়ে ফেলি। ফলস্বরূপ কখনো কখনো দেখা দিতে পারে পেট ব্যথা, বমি, কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়ার মতো সমস্যা। এরপর হয়তো আমরা প্রতিজ্ঞা করি যে আর কখনো বাইরে খাবো না বা অতিরিক্ত খাবো না। কিন্তু পরবর্তীতে তা আবারও ভুলে যাই। ভুলভাল খাবার খেলে পেট ব্যথা তো হবেই। তবে ঘরোয়া প্রতিকার জানা থাকলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
জেনে নেওয়া যাক পেট ব্যথা থেকে দূরে থাকতে কোন খাবারগুলো খাবেন-
১. আদা
পেট ব্যাথার সাধারণ লক্ষণ হলো বমি বমি ভাব এবং বমি। এই দুই সমস্যা দূর করতে পারলেই শরীর ভালো হতে শুরু করে। আদা বমি বমি ভাব এবং বমির জন্য একটি প্রাকৃতিক প্রতিকার হতে পারে। আদা যেকোনোভাবেই খাওয়া ভালো, আপনি এটি কাঁচা বা রান্না করে খেতে পারেন এবং কার্যকরী ফলাফলের জন্য এটিকে তরল হিসাবেও খেতে পারেন। এমনকী মোশন সিকনেস মোকাবিলায়ও আদা ব্যবহার করতে পারেন। আদার চমৎকার হজমশক্তি এবং প্রদাহ বিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
২. ক্যামোমাইল
ক্যামোমাইল ঐতিহাসিকভাবে পেট ব্যথা সহ একাধিক রোগের প্রতিকারের জন্য ব্যবহৃত হয়েছে। এই ভেষজ উদ্ভিদটি গ্যাস, বদহজম, ডায়রিয়া, বমি বমি ভাব এবং বমির মতো বিভিন্ন অন্ত্রের সমস্যার জন্য ব্যবহার করা হয়। ক্যামোমাইল ভেষজ সাপ্লিমেন্টরিতে ব্যবহৃত হয় যা শিশুদের কোলিক উপশম করে। যদিও ক্যামোমাইলের অন্ত্রের প্রশান্তিদায়ক প্রভাব ব্যাপকভাবে স্বীকৃত, তবুও এটি কীভাবে কাজ করে তা বোঝার জন্য আরও গবেষণার প্রয়োজন।
৩. পুদিনা
ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম বা আইবিএস হলো একটি দীর্ঘস্থায়ী অন্ত্রের ব্যাধি যার কারণে পেটে ব্যথা, পেট ফাঁপা, কোষ্ঠকাঠিন্য এবং ডায়রিয়া হতে পারে। পেপারমিন্ট এই অস্বস্তিকর উপসর্গগুলো কমাতে সাহায্য করতে পারে। পেপারমিন্টের মেন্থল অন্ত্রের পেশীর খিঁচুনি কমাতে সাহায্য করে এবং বমি ও ডায়রিয়া প্রতিরোধ করে।
৪. কাঁচা কলা
কাঁচা কলা ডায়রিয়ার পরিমাণ, তীব্রতা এবং সময়কাল কমাতে সাহায্য করতে পারে। কাঁচা কলাতে একটি বিশেষ ধরনের ফাইবার রয়েছে যা প্রতিরোধী স্টার্চ নামে পরিচিত। এর শক্তিশালী অ্যান্টিডায়রিয়াল প্রভাব রয়েছে। প্রতিরোধী স্টার্চ ধীরে ধীরে অন্ত্রে গাঁজন হয়ে একটি শর্ট-চেইন ফ্যাটি অ্যাসিড তৈরি করে যা অন্ত্রকে বাড়তি পানি শোষণ করতে উদ্দীপিত করে। কলায় ভিটামিন বি৬, পটাসিয়াম এবং ফোলেটও থাকে। এই পুষ্টিগুলো ক্র্যাম্প, ব্যথা এবং পেশীর খিঁচুনি কমাতে সাহায্য করে।
৫. দই
ডিসবায়োসিসের কারণে পেটে ব্যথা হতে পারে। ডিসবায়োসিস হলো পেটে ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্যহীনতা। প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার ভারসাম্যহীনতা সংশোধন করতে এবং গ্যাস, পেট ফাঁপা বা অনিয়মিত মলত্যাগের মতো উপসর্গ কমাতে সাহায্য করতে পারে। প্লেইন ইয়োগার্টে জীবন্ত এবং সক্রিয় ব্যাকটেরিয়া রয়েছে যা কোষ্ঠকাঠিন্য এবং ডায়রিয়ায় সাহায্য করতে পারে। দই সংবেদনশীল পেটে সহজে হজম হয়।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর