• ঢাকা
  • ঢাকা, রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ২ ঘন্টা পূর্বে
সাজ্জাদুল আলম শাওন
জামালপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ২৩ অক্টোবর, ২০২৪, ১২:৩৫ দুপুর
bd24live style=
বাহাদুরাবাদ— বালাসীঘাট নৌপথ 

সেতুর অভাবে দুর্ভোগে আট জেলার মানুষ 

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

দীর্ঘদিন ধরে আশার বাণী শোনা গেলেও বাহাদুরাবাদ —বালাসী নৌরুটে যমুনা নদীতে আজও নির্মাণ হয়নি সেতু। ফেরি চলাচলের উদ্দেশ্যে দুপাড়ে টার্মিনাল নির্মাণ করা হলেও আজও সম্ভব হয় ফেরি চলাচলের। ফলে রাজধানী ঢাকার সাথে দেশের উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের আট জেলাবাসীদের সড়ক যোগাযোগ ও পণ্য পরিবহনে পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ। বিকল্প পন্থায় যাতায়াত ও পণ্য পরিবহনে তাদের একদিকে ব্যয় হচ্ছে অধিক সময় অন্যদিকে গুনতে হচ্ছে তিনগুণ অর্থ। ফলে যাতায়াতসহ আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে দেশের উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের আট জেলাবাসী।

 রাজধানী ঢাকার সাথে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ব্যবস্থা সহজিকরণ ও দুর্ভোগ লাঘবে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জের বাহাদুরাবাদ ঘাট থেকে গাইবান্ধার ফুলছড়ির বালাসী ঘাট নৌরুটে সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যমুনার পশ্চিম পাড়ের আটটি জেলা গাইবান্ধা, রংপুর, কুড়িগ্রাম, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, প গড়, নীলফামারী, লালমনিরহাট জেলাবাসীদের দেশের পূর্বাঞ্চল তথা ময়মনসিংহ ও রাজধানী ঢাকার সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও পণ্য পরিবহণ ব্যব¯’া সহজীকরণের জন্য ১৯৩৮ সালে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জের বাহাদুরাবাদ ঘাট ও গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার তিস্তামুখ (বর্তমান নাম বালাসী ঘাট) ঘাট নৌরুটে  যমুনা নদীতে ফেরি চালু হয়েছিল। বাংলাদেশ রেলওয়ে সরাসরি পরিচালনা করে ওই নৌরুটে ফেরি সার্ভিস। এতে যমুনা নদীর ওপর দিয়ে ফেরিতে যাত্রী পারাপার ও পণ্যবাহী ওয়াগান পারাপার করা হতো। সে সময় ওই আট জেলাবাসী নিজস্ব গন্তব্য থেকে রেলপথে অল্প খরচ ও সময় ব্যয় করে সহজেই ময়মনসিংহ ঢাকা যাতায়াত করতে পারতো। পাশাপাশি ওই জেলাগুলোতে ব্যবসায়িক পণ্য পারাপারসহ কৃষকদের উৎপাদিত কৃষিজ ও শিল্পপণ্য সহজেই পারাপার করতে পারতো। তখন দেশের পূর্বাঞ্চল তথা রাজধানীর সাথে ওই জেলাবাসীদের সড়ক যোগাযোগ হয়ে উঠেছিল দুর্ভোগহীন, স্বাচ্ছন্দ্যময়।

পরে ২০০৭ সালে যমুনা নদীতে নাব্য সংকটে বাহাদুরাবাদ ঘাট ও তিস্তামুখ (বর্তমান নাম বালাসী ঘাট) ঘাট নৌরুটে  ফেরিতে যাত্রী পারাপার ও পণ্যবাহী ওয়াগান পারাপার বন্ধ হয়ে পড়ে। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের আট জেলাবাসী ময়মনসিংহ ঢাকা যাতায়াতে আবারও পড়ে যায় দুর্ভোগে। ওই জেলাগুলোর মানুষকে প্রতিদিন গন্তব্য থেকে বাস, ট্রেন বা অন্য যানবাহনে বালাসী ঘাটে এসে নৌকা যোগে যমুনা নদী পাড়ি দিয়ে যাতায়াত করতে হয় ময়মনসিংহ ঢাকায়। পরবর্তীতে যমুনা সেতু চালু হওয়ায় বাহাদুরাবাদ ঘাট — বালাসী ঘাটের বিকল্প হিসেবে দীর্ঘপথ পাড়ি যাতায়াত করতে হয় রাজধানীতে। এতে একদিকে যেমন ব্যয় করতে হয় অধিক সময় তেমনি গুনতে হয় দ্বিগুণ অর্থ। তাদের একটি বিরাট অংশ মানুষ এখনও ঢাকা যাতায়াতে বাহাদুরাবাদ ঘাট — বালাসী ঘাট নৌরুটে নৌকার নির্ভর করছেন। 

গাইবান্ধা বোনারপাড়া থেকে আসা ঢাকার যাত্রী মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, যমুনা সেতু চালু হওয়ার পর উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল থেকে সরাসরি বাস, ট্রেন বা অন্য যানবাহনে ঢাকা যাতায়াত করা গেলেও এ পথে বেশি সময় লাগে। পাশাপাশি অধিক দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বালাসী — বাহাদুরাবাদ নৌপথে ফেরি চালু হলে বা এই পথে সেতু নির্মাণ হলে আট জেলাবাসী সহজেই ঢাকা যাতায়াত করতে পারতো।

কুড়িগ্রাম উলিপুরের আজিজুর রহমান জানান, বাহাদুরাবাদ — বালাসী ঘাট রুটে প্রতিদিন শত শত যাত্রী যাতায়াত করে। নৌকায় যাতায়াতের ফলে অধিক সময় অর্থ ও দুর্ভোগ পোহাতে হয়। সীমিত নৌকা হওয়ায় যাতায়াতে প্রয়োজনের সময় নদী পাড় হওয়া যায় না। ফলে অনেক যাত্রীকে অধিক অর্থ ও সময় ব্যয় করে যমুনা সেতু হয়ে ঢাকা যাতায়াত করতে হচ্ছে। অনেক দিন থেকে শুনছি বাহাদুরাবাদ — বালাসী নৌপথে সেতু নির্মাণ করা হবে। এ ব্যাপারে দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ প্রত্যাশা করেন তিনি।

বাহাদুরাবাদ — বালাসী ঘাট নৌপথে পূর্বেকার মতো যাত্রীবাহী ফেরি ও মালবাহী ওয়াগন চলাচলের উদ্দেশ্যে সরকার প্রায় দেড়শ কোটি টাকা ব্যয়ে যমুনা নদীর চিহ্নিত চ্যানেলে খনন ও ঘাট দুটিতে পৃথক ভাবে ফেরিঘাট টার্মিনাল স্থাপন করে। ২০১৯-২০২২ সালনাগাদ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ কর্তৃপক্ষ। দুপাড়ে যমুনার পাড়ে এখন দাঁড়িয়ে আছে ফেরিঘাট টার্মিনাল। কিন্তু যমুনা নদীর নাব্য ফেরাতে না পারায় কোনো কাজে আসছে না ওই ফেরিঘাট টার্মিনাল দুটি। যমুনা নদী বৃহৎ নদী। এ নদীর গতিবিধি বুঝা কঠিন। খননের পর প্রতিরোধ্য স্রোতে খননকৃত চ্যানেল বালিতে ভরে যায়। ফলে কোনো কাজে আসছে না খননে। নাব্য ফেরানো যায়নি বলে দু ঘাটের মধ্যে পরিকল্পনা মোতাবেক ফেরি চালু সম্ভব হয়নি। পূর্বের মতো যমুনা নদীতে নাব্য সংকটে বাহাদুরাবাদ —বালাসী ঘাট নৌরুটে  ফেরিতে যাত্রী পারাপার ও পণ্যবাহী ওয়াগান পারাপার সম্ভব হচ্ছে না। শুধু মাত্র দেওয়ানগঞ্জ বাজার রেল স্টেশন থেকে হলকারচর পর্যন্ত পড়ে আছে রেল লাইন। বাস্তবমুখী পরিকল্পনা ও পদক্ষেপের অভাবে চালু হচ্ছে না বাহুদরাবাদ — বালাসী ঘাটের মধ্যে ফেরি চলাচল। কমছে না উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের হাজার হাজার যাত্রীদের যাতায়াতে দুর্ভোগ। কালের বিবর্তনে মুছে যাচ্ছে বাহাদুরাবাদ ঘাটের অবশিষ্ট চিহ্ন।

রংপুর হারাগাছার যাত্রী, আদিল মিয়া জানান, বিগত সরকার ঢাকার সাথে দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের আট জেলাবাসীদের সড়ক যোগাযোগের জন্য বাহাদুরাবাদ ও বালাসীঘাটে পৃথক নৌ টার্মিনাল নির্মাণ ও নৌ চ্যানেল তৈরির জন্য যমুনা নদী খনন করে। দুই পাড়ে টার্মিনাল নির্মাণ হলেও যমুনা নদীর নাব্য ফেরাতে না পারায় কোনো কাজে আসছে না প্রকল্পটি। এ নৌপথে ফেরি চালু হলে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলবাসী দেশের পূর্বাঞ্চলে যাতায়াতের দুর্ভোগ থেকে বেঁচে যেতেন। সেই সাথে তাদের পণ্য পরিবহনের ব্যবস্থা সহজিকরণ হতো।

চুকাইবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদুজ্জামান সেলিম খান বলেন, দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের আটটি জেলার হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন দেশের পূর্বাঞ্চল তথা ময়মনসিংহ ঢাকা যাতায়াত করে। যমুনা নদীর বাহাদুরাবাদ — বালাসী ঘাটের মধ্যে সেতু না থাকায় যাতায়াতে প্রতিদিন তাদের পোহাতে হয় চরম দুর্ভোগ। বৃহত্তর এ জনগোষ্ঠীর যাতায়াতে দুর্ভোগ লাগবে এ নৌপথে দ্রুত সেতু নির্মাণ করা প্রয়োজন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্স জানান, বাহাদুরাবাদ—বালাসী ঘাটের মধ্যে সরাসরি সড়ক যোগাযোগের জন্য সেতু নির্মাণ করা সময়ের দাবি। তাতে দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের আট জেলাবাসীদের যাতায়াত যেমন হবে স্বাচ্ছন্দ্যময় ও দুর্ভোগহীন। যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নয়ন হলে ওই অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক অবস্থাতেও নেমে আসবে আমূল পরিবর্তন।

শাকিল/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com