
ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার ডৌহাখলা ও রামগোপালপুর ইউনিয়নে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতায় মানবসম্পদ উন্নয়নে গ্রামীণ পানি সরবরাহ স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্যবিধি প্রকল্প কর্তৃক বিতরণের লক্ষ্যে শৌচাগার নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
উপজেলার ডৌহাখলা ও রামগোপালপুর ইউনিয়নের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য ৪৫৮টি শৌচাগার বরাদ্দ আছে। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়,নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করায় শৌচাগারগুলো যেভাবে নির্মাণ করার কথা ছিল সেভাবে হয়নি। রামগোপালপুর ইউনিয়নের বিশ্বনাথপুর গ্রামের সাইদুল ইসলাম (শাহিদ) প্রতিবেদককে তার আঞ্চলিক ভাষায় জানান এক মাস আগে করছে,বাকি কাজ দেয়াম দেয়াম আজকাল কইরা দিন যাইতেছে, চাক(রিং) রইছে রং দিছে না ভিতরে পারা দিয়েছিলাম যে হামাইয়া পড়ছে।
একই গ্রামের মো.এমদাদুল হক তার আঞ্চলিক ভাষায় প্রতিবেদককে জানান কাজের মান তিন নম্বরের উপরে গেছে গা, ফ্লোর করছিলো মেঘে ভেঙে গেছিনগা পরে আমি নিজে করছি,টিন ভাই কাগজের মতন,আমরা চাই দ্রুত কাম সুন্দর হোক ভালা হোক সরকারের কাছে এইটাই দাবি।
রামগোপালপুর ইউনিয়নের শ্রীধরপুর গ্রামের হোসেন আলী জানান, স্লাবের ঢাকনা আনার সময় ভাইঙা গেছে। ইটভাটার সাইডে পালাইয়া রাখছে ঐসব সুরখি দিয়ে স্লাব ( রিং) দিছে। জানতাম যে স্লাব বসানোর গর্ত ঠিকাদারের লোকজন করবে, কিন্তু আমি নিজে কাজের লোক নিয়ে গর্ত করে দিয়েছি। আর টিন যে দিছে বৃষ্টির পানি পরে। সরকার ভালোর জন্যে এগুলো আমাদের বিনামূল্যে দিয়েছে, কিন্তু তারা করছে অনিয়ম। আমি এর সঠিক বিচার চাই।
ডৌহাখলা ইউনিয়নের চুড়ালী গ্রামের রহুল আমিন প্রতিবেদককে তার আঞ্চলিক ভাষায় জানান, আমরা গরীব মানুষ সরকারি অনুদানে শৌচাগার পাইছি। শুনতাছি একেক টা শৌচাগার ৩০/৩৫ হাজার টাকা বরাদ্দ আসছে, কিন্তু দেহেন টিন যে দিছে একবারে পাতলা পলিথিন। আমার এই শৌচাগারে ১৫ কেজি সিমেন্ট দিছে, আর এই যে দেহেন কাঠ গুলা যে দিছে একবারে নরমাল। স্লাব (রিং)গুলা যে দিছে ধরার আগেই ভাইঙ্গা যায়, তাদের কাছে আমরা বরাদ্দের কাগজ দেখতে চাইলে বলে দেখানোর নিয়ম নাই। চুড়ালীর গ্রামের মো. চান্দু মিয়া জানান, কাজের মান এক্কেবারে নরমাল চিমটি দিলে উঠে পড়ে সুরখি, আর এই যে টিন কাগজ বললেই চলে। উপজেলা অফিস থেকে ইঞ্জিনিয়ার আসার কথা থাকলেও কেউ আসেনি, শুধু মিস্ত্রি কাজ করে চলে গেছে। এইজন্যেই কাজের এই অবস্থা, তদারকি থাকলে এতো নিম্নমানের কাজ হতো না।এ বিষয়ে ঠিকাদার কবির হোসেন বলেন,আমি আমার সর্বোচ্চ টা দিয়ে ভালো কাজ করার চেষ্টা করেছি।
এ বিষয়ে উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. সালাউদ্দিন সোহেল সাংবাদিকদের বলেন,আমি নিজে সরজমিনে গিয়ে ভুল-ত্রুটি দেখেছি যা যা ত্রুটি পেয়েছি সেগুলো উল্লেখ করে ঠিকাদারকে চিঠি দিয়েছি, ঠিকাদার যদি ত্রুটি যুক্ত কাজ গুলো সমাধান না করে তাহলে ঠিকাদার বিল পাবেনা।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, মো. শাকিল আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, আমি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলের সাথে কথা বলে নিজে সরজমিনে ভিজিট করে ব্যবস্থা নেব। যদি দুর্নীতি হয়ে থাকে বা নির্মাণে ত্রুটি হয় তাহলে আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখব।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর