• ঢাকা
  • ঢাকা, শনিবার, ০১ মার্চ, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ২৪ সেকেন্ড পূর্বে
আবু রায়হান সরকার
নোয়াখালি প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ২৪ অক্টোবর, ২০২৪, ১০:১৯ দুপুর
bd24live style=

পৃথিবীর সব সুখ আপনার মেয়েকে দিবো, ছাত্রীর মাকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক

ছবি: সংগৃহীত

‘স্বামী পারবে না, পৃথিবীর সব সুখ আপনার মেয়েকে দিবো’- ছাত্রীর মায়ের উদ্দেশে বলা নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) বাংলাদেশ অ্যান্ড মুক্তিযুদ্ধ স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমানে এমনই এক মন্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে নিজ বিভাগের ছাত্রীর সঙ্গে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। ২০১৯-২০ সেশনের এক ছাত্রীর সঙ্গে দীর্ঘ দেড় বছর প্রেমের সম্পর্ক করে অন্যত্র বিয়ে করায় এই অভিযোগ তোলেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।

গেল বুধবার বিকালে (২৩ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য বরাবর অভিযোগপত্র দাখিল করেন ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী জানান গেল ২০২২ সালের ২৫ ডিসেম্বর থেকে ১৪ মার্চ ২০২৩ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ তিন মাস তিনি আমার সাথে প্রেমের সম্পর্ক জড়ানোর জন্য মানসিক অত্যাচার করে। পরবর্তীতে আমি তার সাথে যোগাযোগ করতে না চাইলে ও সব জায়গা থেকে তাকে ব্লক দিলে সে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি থাকতেন এবং বিভিন্ন মাধ্যমে কল দিয়ে তিনি বলতেন তোমাকে পেলে তিনি সুস্থ হয়ে যাবেন। পরে তিনি আমার মায়ের নাম্বার সংগ্রহ করে ফোন দিয়ে বলেন পৃথিবীর সব সুখ আপনার মেয়েকে দিবো, কোনো স্বামী এই পৃথিবীতে দিতে পারবে কিনা আমি জানি না,তাও আমার মা নিষেধ করে দেন।এমন করে করে তিনি আমাকে গিল্টের মধ্যে ফেলে দিতেন এবং মানসিকভাবে আমি অনেক অসুস্থ হয়ে পড়ি এবং একটা পর্যায়ে ভাবতে থাকি আমার কারণে একটা মানুষ এতো কষ্ট পাচ্ছে।

২০২৩ সালের ১১ মার্চ তিনি তার পিএইচডি ছেড়ে আমার কারণে দেশে চলে আসেন এবং বলেন আমার আশপাশে থাকলেই তিনি ভালো থাকবেন। আমার একাডেমিক লাইফে ক্ষতির সম্ভাবনা, মোস্তাফিজুর রহমানের প্রতিনিয়ত কান্নাকাটি এবং নানান বিষয়ে ডিপ্রেশনে থাকার কারণে তার সাথে সম্পর্কে যেতে রাজি হই। আমার সাথে তার সম্পর্ক চলতে থাকে স্বাভাবিক নিয়মে। এর মধ্যে কয়েকদফা তিনি আমাকে একা একা বিয়ে করে ফেলার কথা বলেন। কিন্তু আমি বলেছি ফ্যামিলিকে জানিয়ে তারপর বিয়ে করবো। 

২০২৪ সালের কুরবানি ঈদের সময় থেকে তিনি পরিবারকে জানান এবং তার ভাষ্যমতে তার পরিবার রাজি হয় না। এরই মধ্যে আমার পরিবারকে জানাই এবং সকলে সম্মতি প্রকাশ করে আমাদের বিয়ের জন্য। কিন্তু বেশ কিছু দিন যাবত তিনি আমাকে বোঝাতে থাকেন তার পরিবার অন্যত্র পাত্রী দেখছেন, কিন্তু তিনি আমাকেই চান।

গত ৮ এবং ৯ অক্টোবর আমার খালামনির সাথে কথা বলেন মোস্তাফিজ এবং বলেন তার ফ্যামিলি ছেড়ে আমাকে বিয়ে করবেন, আমাকে আগামী ২ থেকে ৩ বছরেও স্ত্রী বলে পরিচয় দিবেন না কোথাও এবং ছাত্রীকে বিয়ে করার কারণে যদি তার চাকরি যায় আমি আয় করে উনাকে খাওয়াতে হবে, আমার পরিবার উনার দায়িত্ব নিতে হবে এবং তিনি এখন একাই বিয়ে করবেন আমাকে কাজী অফিসে কেউ যেতে পারবে না আমার পরিবারের। আমার পরিবার আমার দিকে তাকিয়ে তার সব শর্তে রাজি হয়।

পরবর্তীতে ১১ অক্টোবর শুক্রবার তিনি বিয়ে করবেন বলে ঢাকা যেতে বলেন। তার কথা বিশ্বাস করে ঢাকা যাই। কিন্তু তিনি নানা তালবাহানা করতে থাকেন। একপর্যায়ে তার বাবা অসুস্থ বলে আমার থেকে তড়িঘড়ি বাড়ি যাবে বলে বিদায় নেয়। আমাকে বিদায় দেওয়ার সময় জড়িয়ে ধরে কপালে চুম্বন করে বলে, ‘আমি আমার বাবাকে দেখে এসে তোমাকে বিয়ে করবো ময়না, আমার অপেক্ষা করিও, আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো বিয়ে ওইটা ভাঙানোর, আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি’।

পরবর্তীতে জানতে পারি তার বাবা অসুস্থ হয়নি। বরং ১৩ অক্টোবর চট্টগ্রামে তিনি অন্য একজনকে বিয়ে করেন। যার সাথে তার ৩ মাস আগের থেকেই সম্পর্ক ছিলো।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী অভিযোগপত্রে আরো লিখেন,তার বিয়ের সংবাদ পেয়ে আমি মানসিকভাবে অনেক ভেঙে পড়ি। পরে ১৪ তারিখ আমি চট্টগ্রাম চলে যাই এবং উনার বউ এর নাম্বার সংগ্রহ করে রাতের ৯:৩০ -১১:৪৫ সময় উনার এবং উনার বউ এর সাথে আমার দেখা হয় আগ্রাবাদ জাম্বুরী পার্কের সামনে। শেষ দিকে উনার বউ আমার বান্ধুবির সাথে কথা বলছিলো এমন সময় মোস্তাফিজ আমাকে বলে যে একটু কাছে আসো, ‘তুমি কি চাও?’ আমি বললাম, ‘আমি তোমাকে চাই’। এরপর উনি বললেন, ‘তুমি আমার বউ এর কাছে যা যা বলে গেছো এরপর ও আর আমাকে রাখবে না, ও আমাকে ছেড়ে দিলে তুমি আমাকে গ্রহণ করবা তো?’ আমি বললাম, ‘হ্যাঁ করবো’। 

সেখান থেকে আসার পর ১৫ অক্টোবর সকাল থেকে আমি মানসিকভাবে খুবই অসুস্থ হয়ে পড়ি। এরপর ওনার বউকে কল দিয়ে বিষয়টি জানাই। কিন্তু তারা জানান, কেউ কাউকে ছাড়বেন না। দুপুর দিকে আমার শারীরিক অবস্থার খুবই অবনতি ঘটে এবং আমাকে চট্টগ্রাম আগ্রাবাদের মা ও শিশু হাসপাতাল ভর্তি করায় বান্ধুবির পরিবার। সেখানে আমার পরিবার আসে এবং আমাকে ১৬ তারিখ ডিসচার্জ করা হয়। কিন্তু বাসায় আসার পর অবস্থা আরো অবনতি হয়। ভুক্তভোগী ছাত্রী এই ঘটনার বিচার চেয়ে বলেন, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে সম্পর্ক গড়ে তুলে এমন প্রতারণা করায় আমি এবং আমার পরিবার মানসিক ও সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। এর বিচার চাই৷

উপাচার্য বরাবর অভিযোগ দিতে এসে ভুক্তভোগীর মা বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষক আমার মেয়ের সাথে যা করেছে সেটা অন্যায়। বিগত কয়েকদিন পরিবারের কারো চোখে ঘুম নেই। মেয়েটার টেনশনে সবাই অসুস্থ হয়ে পড়েছি। তিনি যদি আমাদেরকে কোনোভাবে বলতেন তিনি অন্যত্র বিয়ে করবেন তাহলে মেয়েকে বুঝিয়ে বলতাম। তাকে সে মানসিকভাবে নির্যাতন করেছে। আমরা এর উপযুক্ত বিচার চাই।

এ বিষয়ে নোবিপ্রবি বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধ স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমানের মুঠোফোনে বারবার কল করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও নিজের আইডি ডিজেবল করে রেখেছেন এ শিক্ষক। 

এ বিষয়ে অভিযোগের বিষয়ে নোবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল বলেন, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর অভিযোগ আমি বিস্তারিত শুনেছি এবং অভিযোগপত্র হাতে পেয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন হয়রানি নির্মূল কমিটি রয়েছে। তারা এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবেন। অপরাধ প্রমাণিত হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

রার/সা.এ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com