
জলাভূমি বিলসহ জলাশয়ে শামুকের বসবাস। জলজ গাছপালা-লতাপাতায় বাসা বাঁধা পোকামাকড়ের ডিম,ছোট ছোট পোকামাকড় খেয়ে জীবন ধারণ করে। এরা জীববৈচিত্র্য রক্ষাসহ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে। প্রতিদিন নির্বিচারে শামুক নিধনের ফলে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাকারী শামুকের বংশবিস্তার হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে।
নড়াইল জেলার তিনটি উপজেলার অসংখ্য খাল-বিলের পানিতে বিলুপ্তির পথে এখন শামুক। কোন প্রকার পরিচর্যা ছাড়াই শামুক পানিতে বংশ বিস্তার করে এবং তা অল্প কিছু দিনের মধ্যে বড় আকারে পরিণত হয়। এক সময় খাল-বিল ও জলাশয়ের পানিতে শামুক চোখে পড়লেও এখন আর তেমন একটা চোখে পড়ে না। ফসলি জমির উর্বরতা বৃদ্ধিসহ জীব বৈচিত্র্য রক্ষায় শামুকের ভূমিকা অপরিসীম বলে জানান মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তারা। মাছের ঘের মালিক ও মৎস্য চাষীরা মাছের খাবার হিসেবে শামুক ব্যবহার করছে। তবে বিলুপ্তির পথে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় অতিগুরুত্বপূর্ণ এ প্রাণিটি। একশ্রেণীর লোকজন শামুক বিক্রি করে লাভের আশায় বিল থেকে অবাধে শামুক সংগ্রহ করে তা মৎস্য ঘের মালিক ও মৎস্য চাষীদের কাছে বিক্রি করে থাকে।
নড়াইল সদর উপজেলার আড়পাড়া গ্রামের অষ্টম শ্রেণীর এক ছাত্রী জানায়,পড়া লেখার পাশাপাশি সে বর্ষার মৌসুমে প্রতিদিন সকালে বিল থেকে শামুক সংগ্রহ করে ২শত থেকে ৩শত টাকা বিক্রি করে থাকে।
কালিয়া উপজেলার আমবাড়িয়া গ্রামের দিনমজুর কালু মিয়া শেখ জানান, সংসার চালানোর জন্য তিনি বিল-খালের পানি থেকে শামুক সংগ্রহ করে মৎস্য চাষীদের কাছে বিক্রি করে থাকেন। এতে তাঁর প্রতিদিন প্রায় পাঁচশত টাকা আয় হয়ে থাকে। যা দিয়ে তিনি সংসারের ব্যয় নির্বাহ করে থাকেন।
নড়াইল জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এইচ.এম বদরুজ্জামান জানান, মাছের খাদ্য হিসেবে শামুকের ব্যবহার কে আমরা নিরুৎসাহিত করে থাকি মৎস্য চাষীদের। কারণ কাঁচা শামুক খাওয়ানোর ফলে মাছের শরীরে রোগ জীবাণুর এবং গ্যাসের সৃষ্টি করে। পরবর্তীতে ওই মাছ খেলে মানুষের শরীরেও নানা রোগজীবাণু ছড়ায়। শামুক মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করে। খাল-বিলে বেশি পরিমাণ শামুকের বিচরণ থাকার কারণে পানি ও মাটির উর্বরতা বাড়ে এবং ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। শামুক মাছের খাবার হিসেবে ব্যবহার না করার জন্য ঘের মালিকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর