
নীলফামারীর ডোমারে সরকারের দেয়া নির্ধারিত মিনিবাস স্ট্যান্ডটি ব্যবহার না করে প্রধান সড়কের উপর দাঁড়িয়ে যাত্রী উঠানামা করায় যানজট সমস্যা দিন দিন প্রকট আকার ধারণ করেছে। ফলে প্রতিনিয়ত ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে পথচারীসহ শিক্ষার্থীদের।
সরকার নির্ধারিত মিনিবাস স্ট্যান্ডটিতে অলস পড়ে আছে এলজিইডি এবং পৌরসভার অর্থায়নে নির্মিত দুটি যাত্রী ছাউনিসহ সরকারি জমির উপর প্রতিষ্ঠিত মিনিবাস ষ্ট্যান্ডটি। জায়গাটির ব্যবহার না হওয়ায় অনেকে বিভিন্ন দোকান এবং ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান তৈরি করে দখলে রেখেছে।
বর্তমান মিনিবাস ষ্ট্যান্ডটির নির্ধারিত কোন জায়গা নেই। মিনিবাসসহ দুর পাল্লার নাইট ও ডে কোচগুলো শহরের মাঝখানে শহরের প্রধান সড়কের উপর দাঁড়িয়ে যাত্রী উঠানামা করার কারণে যানজট সমস্যার নিরসন হচ্ছে না। এছাড়াও রাস্তার উপর রয়েছে অটোরিকশা এবং টেম্পুর স্ট্যান্ড। পাশাপাশি শহরের বুক চিড়ে রয়েছে একটি রেলপথ। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত অবধি বেশ কয়েকটি দূরপাল্লার ট্রেন চলাচল করে থাকে। ট্রেনগুলো চলাচলের সময় রেলগেট বন্ধ থাকায় শহরের দুপাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।বিশেষ করে সন্ধ্যার পর দুর পাল্লার নাইট কোচ গুলো প্রধান সড়কের উপর দাঁড়িয়ে যাত্রী উঠানামা করায় যানজট প্রকট আকার ধারণ করে। শহর জুড়ে রয়েছে ৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, একটি সরকারি কলেজ, একটি মহিলা কলেজ, একটি ফাজিল মাদ্রাসা এবং ৫টি কিন্ডারগার্ডেন স্কুল। এসকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে যাওয়া আসা করতে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। অভিভাবকদের থাকতে হয় উৎকণ্ঠায়।
ডোমার বাসস্ট্যান্ডের জন্য সরকারি ভাবে শহরের বাইরে উপজেলা পরিষদ এলাকার পাশে আমিনা রহমান ফিলিং স্টেশন সংলগ্ন সরকারি ৪টি দাগে ১.১৩ (এক একর তের) শতাংশ জায়গা নির্ধারণ করে দীর্ঘ ৩০বছর আগে বাসস্ট্যান্ডের জন্য এলজিইডি'র অর্থায়নে স্থায়ীভাবে একটি যাত্রী ছাউনি নির্মাণ করা হয়। পরবর্তীতে ২০০০সালে ডোমার পৌরসভা প্রতিষ্ঠা হলে যানজট নিরসনের লক্ষ্যে পৌরসভার সাবেক মেয়র প্রয়াত আল আজাহার হোসেন পৌরসভার অর্থায়নে সরকার নির্ধারিত জায়গায় আরো একটি যাত্রী ছাউনি নির্মাণ করেন। দীর্ঘদিন ধরে যাত্রী ছাউনি দুটি ব্যবহার না হওয়ায় এবং সংস্কার না করায় ক্রমেই তা নষ্ট হচ্ছে।
কতিপয় শ্রমিকলীগ নেতার নিজ স্বার্থ হাসিলের কারণে এবং পৌরসভার সদ্য অপসারিত মেয়র মনছুরুল ইসলাম দানুর স্বেচ্ছাচারিতায় পৌরসভা কার্যালয় সংলগ্ন প্রধান সড়কের উপর বাস থামিয়ে যাত্রী উঠানামা করছে। সরকারের নির্ধারিত মিনিবাস স্ট্যান্ডে একদিনের জন্য সেখানে বাস থামেনি। পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর কাওছার আলম বলেন, বর্তমান বাসস্ট্যান্ডটি পৌরসভা কার্যালয়ের সামনে প্রধান সড়কের উপর হওয়ায় সেখানে সার্বক্ষণিক যানজট লেগেই থাকে। এর ফলে পৌরসভায় আসা সেবা প্রত্যাশী নাগরিকদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। যারা মটর শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা তারাই শ্রমিকলীগের নেতা। ওই সকল নেতাদের সাথে পৌরসভার মেয়রের সখ্যতা থাকায় বাসষ্ট্যান্ডের জন্য নির্ধারিত জায়গা থাকা সত্ত্বেও বাসষ্ট্যান্ড স্থানান্তর করার বিষয়ে পৌর মেয়র কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। ৯নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর আনারুল ইসলাম বলেন শহর থেকে মিনিবাস এবং দূরপাল্লার কোচগুলো সরিয়ে নিলে যানজট সমস্যা থাকবেনা।
ডোমার পৌরসভার বর্তমান প্রশাসক সহকারী কমিশনার (ভূমি) জান্নাতুল ফেরদৌস হ্যাপি জানান, ডোমার পৌরসভার পক্ষ থেকে দ্রুত সুধী সমাজসহ সকল পেশাজীবীদের সাথে আলোচনা করে যানজট নিরসনের লক্ষ্যে সরকার নির্ধারিত জায়গায় বাসস্ট্যান্ড স্থানান্তর করার ব্যবস্থা করা হবে।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর