টেক্সটাইল শিল্পে অনন্য এক নাম নোমান গ্রুপ। প্রায় চার দশকের অভিজ্ঞতা আর বিশ্বমানের উৎপাদন মানের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠানটি টেক্সটাইল খাতে এক অসামান্য অবস্থান গড়ে তুলেছে। নোমান গ্রুপের উদ্ভাবনী কর্মসূচি ও ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
নোমান গ্রুপ শতভাগ কমপ্লায়েন্স মেনে ব্যবসা পরিচালনা করায়, বেতন ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ সুবিদা নিয়ে কোন শ্রমিকের কোন অভিযোগ নেই, তাই দেশের ইতিহাসে কখনও এ কারখানায় দাবী দাওয়া নিয়ে কোন বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেনি। সর্বত্রই সঠিক সময়ে বেতন দেয়ার সুনাম রয়েছে এ কারখানার। এছাড়াও শ্রমিকদের পাওনা সঠিক সময়েও পরিশোধ করে তারা। এ গ্রুপের প্রতিটি কারখানায় শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতে চিকিৎসা কেন্দ্র, শিশুদের জন্য ডে কেয়ার সেন্টারও স্থাপন করা হয়েছে।
বাংলাদেশের রপ্তানি খাতে অন্যতম প্রধান ভূমিকা পালনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে নোমান গ্রুপ অগ্রগামী। আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন পণ্য উৎপাদন ও গ্রাহকের আস্থা অর্জনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নিজেদের পণ্য সরবরাহ করে চলেছে। বর্তমানে ৮০টিরও বেশি দেশে নোমান গ্রুপের টেক্সটাইল পণ্য রপ্তানি করা হচ্ছে, বর্তমান সারা বিশ্বে ক্রেতা আছে ৯০৩টি প্রতিষ্ঠান। দেশের রপ্তানী আয়ে ১.৩ বিলিয়ন ডলারের বার্ষিক টার্নওভার করেছে এ গ্রুপটি। যা তাদের গ্লোবাল রিচ এবং সক্ষমতাকে প্রতিফলিত করে।
ইতোমধ্যে দেশের জাতীয় অর্থনীতিতে অবদানের জন্য নোমান গ্রুপের প্রতিষ্ঠান জাবের এন্ড জোবায়ের ফেব্রিকস টানা ১২বার সেরা রপ্তানিকারক হিসেবে জাতীয় রপ্তানি পুরস্কার পেয়েছে। দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বেকার সমস্যার সমাধান,বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের মাধ্যমে রিজার্ভ বৃদ্ধি, শিল্পায়নে ভূমিকা রাখায় জাবের জোবায়ের ফেব্রিকস ও নোমান টেরিটাওয়েল প্রতিষ্ঠানকে একাধিকবার রাষ্ট্রপতি শিল্প পদক দেয়া হয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও পরিচালকবৃন্দ ২০০৭সাল থেকে এখন পর্যন্ত প্রতিবছর সিআইপি( শিল্প), সিআইপি( রপ্তানী) নির্বাচিত হয়ে আসছে।
নোমান গ্রুপ পরিবেশের প্রতি দায়িত্বশীলতা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন টেকসই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। পুনঃব্যবহারযোগ্য ও পরিবেশবান্ধব উৎপাদন প্রক্রিয়া এবং জিরো ওয়েস্ট পলিসি অনুসরণের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি পরিবেশ সংরক্ষণে অবদান রাখছে। কারখানা এলাকাগুলোতে বৃক্ষরোপন, পরিবেশ বান্ধব কারখানা তৈরীতে মনোযোগ তাদের।
দেশের অর্থনীতিতে নোমান গ্রুপের অবদান অনস্বীকার্য। প্রতিষ্ঠানের হাজার হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি থেকে শুরু করে বিপুল পরিমাণ রপ্তানি আয় বাংলাদেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করতে সহায়ক হচ্ছে।গাজীপুরের টঙ্গী ও শ্রীপুরে নোমান গ্রুপের ৩৪টি কারখানা রয়েছে, এতে কাজ করছে ৮০হাজার শ্রমিক। এসব কারখানা গড়ে তুলতে প্রায় ১৫০০বিঘা নিস্কটঙ্ক জমিও কিনেছেন তারা।
নোমান গ্রুপের এই সাফল্য বাংলাদেশের টেক্সটাইল শিল্পের জন্য অনুপ্রেরণামূলক হওয়ার পরও গত ৫ আগস্টের পর একটি স্বার্থন্বেষী মহল দেশের অর্থনীতি বিশেষ করে শিল্পকারখানা ধ্বংস করতে নানাভাবে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে।
ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হওয়ার আশায় একটি চক্র নোমান গ্রুপের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেতিবাচক খবর প্রচার করছে। এ চক্রটিকে ইতিমধ্যেই নোমানগ্রুপের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা রাষ্ট্রের শত্রু হিসেবে উল্লেখ করে তাদের বিচারের দাবী জানিয়েছে বর্তমান অন্তর্বতী সরকারের কাছে।
প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান বর্ষীয়ান আলহাজ্ব নুরুল ইসলাম। তিনি তিল তিল করে শ্রম দিয়ে গ্রুপটিকে দেশের শীর্ষস্থানে অবস্থানে নিয়ে গেছেন। নির্মোহ এ মানুষটি শ্রমিকদের সাথে গড়ে তুলেছেন বাবা ও সন্তানের সম্পর্ক। তিনি বলেন, শ্রমিকরাই আমাদের সফলতার মূল কারিগর। তাদের ভালো রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা আমরা করে যাচ্ছি। দেশের অর্থনীতির অগ্রযাত্রা ধরে রাখতে আমরা আপ্রান চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমাদের সকল চেষ্টা এ দেশের উন্নতি ও সমৃদ্ধি।
এ ব্যবসায়ী আক্ষেপ করে বলেন, দেশের অনেক ব্যবসায়ী বিদেশে সম্পদ গড়লেও আমরা বিদেশে কোন সম্পদ করিনি। এ দেশেই আমাদের সব। আমাদের সকল বিনিয়োগ এ দেশেই করেছি। অর্থ সম্পদ আমাদের কাছে বড় নয়, এ দেশ ও দেশের মানুষই আমাদের কাছে সবচেয়ে বড়। তাই নোমান গ্রুপের বিরুদ্ধে সকল অপচেষ্টা দেশের মানুষই রুখে দিবেন এমন প্রত্যাশা তার।
বাঁধন/সিইচা/সাএ
সর্বশেষ খবর
ক্যাম্পাস এর সর্বশেষ খবর