• ঢাকা
  • ঢাকা, বুধবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২৪
  • শেষ আপডেট ১ মিনিট পূর্বে
শেখ লিটন
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ৩০ অক্টোবর, ২০২৪, ০১:০৪ দুপুর
bd24live style=

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের চকচকে ভবনে নাজুক চিকিৎসা

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

চুয়াডাঙ্গার সদর হাসপাতালে যা ধারণ ক্ষমতা তার থেকেও কয়েকগুণ রোগী ভর্তি থাকে সবসময়। ১০০ শয্যার হাসপাতালে রোগী থাকে অন্তত চার শতাধিক। ফলে রোগী ও স্বজনদের দুর্ভোগের শেষ থাকে না। রয়েছে চিকিৎসক সংকট, পর্যাপ্ত থাকে না জরুরি ওষুধ, নেই প্রয়োজনীয় লোকবলও। আছে বেড সংকট। অথচ এই হাসপাতালটিই চুয়াডাঙ্গাসহ আশপাশেরর জেলার মানুষের ভরসাস্থল।

এর মধ্যে ১০০ শয্যা থেকে ২৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও তা রোগিদের উপকারে আসছে না সদর হাসপাতালটি। অভিযোগ রয়েছে, নির্বাচনী ইশতেহার পূরণে ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে তড়িঘড়ি করে নতুন ভবনের উদ্বোধন করা হয়। তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এ ২৫০ শয্যার এ ভবনটি উদ্বোধন করেন। তবে নামে মাত্র ভবন উদ্বোধন হলেও বাড়েনি জনবল। উন্নতি হয়নি চিকিৎসাসেবার। তবে স্বাস্থ্য বিভাগের মতে, হাসপাতালের অপর্যাপ্ততা কাটিয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে বারবার মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরে চিঠি চালাচালি করা হয়েছে।

জানা গেছে, ১৯৭০ সালে ৫০ শয্যা নিয়ে যাত্রা শুরু করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল। ২০০৩ সালে হাসপাতালটির শয্যা ৫০ থেকে ১০০ তে উন্নীত করা হয়। কিন্তু খাতা কলমে ১০০ শয্যায় রূপ নিলেও শুধু খাবার ও ওষুধ বরাদ্দ দেওয়া হয়। বাড়েনি অন্যান্য সুবিধা। হাসপাতালে প্রথম শ্রেণির চিকিৎসকের অনুমোদিত পদ রয়েছে ২২টি। এর মধ্যে ২০টি পদে স্থায়ী জনবল নেই। ফলে হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সদের আন্তরিকতার ঘাটতি না থাকলেও অতিরিক্ত এই রোগীর চাপ সামাল দিতে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। এদিকে, ২০১৮ সালের ২৮ অক্টোবর তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম ১০০ শয্যার চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালকে ৩০ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট ছয়তলা ভবনের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। কিন্তু উদ্বোধনের পর পাঁচ বছর পার হলেও নতুন ভবনটির পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা কার্যক্রম চালু হয়নি। হাসপাতালটিতে ২৫০ শয্যার জনবল তো দূরের কথা এখনো অনুমোদন হয়নি ১০০ শয্যার জনবলেরও।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের ঘুরে দেখা গেছে, হাসপাতালে বহির্বিভাগ ও আন্তঃবিভাগ মিলে প্রতিদিন গড়ে ২০০ রোগী আসে বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা সেবা নিতে। কাঙ্ক্ষিত সেবা না পেয়ে বাড়ি ফিরে যেতে হয় অনেকের। ১০০ শয্যার এই সদর হাসপাতালে প্রতিদিন বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগী ভর্তি থাকে চার শতাধিক। তবে এসব রোগিদের মেলে না পর্যাপ্ত চিকিৎসা সেবা। হাসপাতালে চিকিৎসক সংকটসহ আরও অন্যান্য লোকবল সংকটের কারণে রোগী ও স্বজনদের নিয়মিত পড়তে হয় দুর্ভোগে। রোগীর চাপ সামলাতে না পেরে ১০০ শয্যার এই ভবনের পাশে গড়ে তোলা হয় ২৫০ শয্যার ভবনটি।

হাসপাতালের নতুন ভবনটি ঘুরে দেখা গেছে, হাসপাতালের প্রবেশ মুখে রোগিদের উপচে পড়া ভিড়। কেউ যাবেন উপরের তলায় আবার কেউ ডাক্তারের অপেক্ষায় লাইনে দাঁড়িয়ে চিকিৎসা নেয়ার অপেক্ষায় আছে। এই নতুন ভবনের উপর তলায় উঠানামার জন্য দুটি লিফ্ট। একটি চলে আর অপরটি যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বন্ধ হয়ে আছে। ফলে এক লিফ্টে রোগী স্বজনদের হুড়াহুড়ি করতে হয়। হাসপাতালের বেশিরভাগই কক্ষ সব সময় বন্ধ থাকে। ২৫০ বেডের কথা উল্লেখ থাকলেও তা গুনে পাওয়া যাবে কি সন্দেহ। এর মধ্যে বেশির ভাগই বেড ভাঙাচোরা অবস্থায় পড়ে আছে। তাই রোগিদের মেঝেতে অবস্থান করতে হয়। এতেও তাদের স্বস্তি নেই রোগী স্বজনদের। এই ভবনের বেশির ভাগই ফ্যান অচল অবস্থায় ঝুলে আছে। তাই রোগিদের হাত পাখা টেনে এই তীব্র গরম থেকে স্বস্তি পেতে হয়। এই ভবনের গোটা চারপাশ ময়লা ও আবর্জনায় ভর্তি হয়ে আছে। দেখার কেউ নেই। এ যেন জরাজীর্ণ হাসপাতালের ভবন। হাসপাতালের আইসিসি বেশিরভাগ বিভাগ চিকিৎসক ও লোকবল সংকটের কারণে বন্ধ হয়ে আছে। ফলে রোগিদের দুর্ভোগের শেষ নেই।

হাসপাতালে আসা এক রোগীর স্বজন তমাল বলেন, হাসপাতালের এই চারপাশে নোংরা পরিবেশ। অনেক দুর্গন্ধ। হাসপাতালে রোগী নিয়ে থাকতে গিয়ে নিজেই রোগী হয়ে যাচ্ছি। এই হাসপাতালে চিকিৎসক সংকট আবার সময় মতো ডাক্তার আসছে না। সবমিলিয়ে এই ২৫০ শয্যার হাসপাতালটি উন্নতি করার দরকার। এই নতুন ভবনের অবস্থা খুবই অচল হওয়ার দশা। দেয়ালের টাইলস্ খসে পড়ছে। হাসপাতালের সমস্যার শেষ নেই।

আরেক স্বজন নাজনীন লাইলা বলেন, হাসপাতালে দুইদিন আসছি মায়ের নিয়ে। নতুন ভবনে বেড পাইনি। মেঝেতে অবস্থান করেছি। উপরের ফ্যান নষ্ট তাই হাতপাখায় বাতাস করতে হচ্ছে। খুব দুর্ভোগে আছি এই হাসপাতালটি নিয়ে। সময় মতো সব রকম ওষুধ পাচ্ছি না। বাড়তি টাকা খরচ করে বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে। ২৫০ শয্যা উন্নতি করলেও তা রোগিদের উপকারে আসছে না। কারণ বেশির ভাগই বেড ভাঙাচোরা। সবমিলিয়ে হাসপাতালের এই অনেক সমস্যা। তাই সরকারের উচিত পুনরায় হাসপাতালটি মেরামত করে চিকিৎসা সেবা বাড়ানো দরকার।

এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. ওয়াহিদ মাহমুদ রবীন বলেন, সদর হাসপাতালটি ১০০ শয্যা থেকে উন্নীত করে ২৫০ শয্যা করা হয়েছে। তবে এই হাসপাতালে চিকিৎসক ও লোকবল সংকট রয়েছে। আর অন্যান্য সব সমস্যা আছেই। তারপরও সুষ্ঠু সেবা দিতে চেষ্টা অব্যাহত আছে। চিকিৎসক সংকট থাকা অবস্থায় আমরা চিকিৎসা সেবার সম্পন্ন কার্যক্রম চলমান আছে। সরকার এই হাসপাতালের সব সমস্যা সমাধান করলে চিকিৎসা সেবা আরও বাড়াতে পারবো। 

 

শাকিল/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com