• ঢাকা
  • ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪
  • শেষ আপডেট ৪ মিনিট পূর্বে
রফিকুল ইসলাম
বান্দরবন প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ৩০ অক্টোবর, ২০২৪, ০১:২১ দুপুর
bd24live style=

বান্দরবানে গড়ে উঠেছে ৭০টি অবৈধ ইটভাটা, বন্ধের দাবি

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

প্রায় দীর্ঘ বছর ধরে পাহাড়ের প্রাকৃতিক ধস করে গড়ে উঠেছে ৭০টি অবৈধ ইটভাটা। এসব ইটভাটা চালু হওয়াই একের পর এক পাহাড়, গাছগাছালি ও জমিসহ প্রাকৃতিক ধস হয়েছে। অস্তিত্বতা হারিয়েছে পরিবেশ, নষ্ট হয়েছে আশেপাশে  গুরুত্বপূর্ণ সড়কও। এসব মাথা গজিয়ে ওঠা অবৈধ ইটভাটা বন্ধ না হলে ভবিষ্যতে আরো প্রাকৃতিক পরিবেশে উপর ধসে প্রভাব পড়বে।  বর্তমান অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার আমলে এসব অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করা না গেলে অন্যান্য সরকার ক্ষমতায় আসলেও সেটি বন্ধ করা যাবে কিনা তা অনিশ্চিত।  তাই পরিবেশ ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে এসব মাথা গজিয়ে উঠা অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করার জরুরি বলে মনে করছেন পরিবেশ বিশ্লেষকরা।

বান্দরবানের সাতটি উপজেলায় অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে প্রায় ৭০টি ইটভাটা। যে-সব ইটভাটা নাই কোন অনুমতি ও পরিবেশে ছাড়পত্র। এসব অধিকাংশ ইটভাটা গুলো গড়ে তোলা হয়েছে বিভিন্ন এলাকার পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলো পাশে নয়তো গহিন বনে পাহাড় কেটে গড়ে তোলা হয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বিনষ্ট করে। আশেপাশে থাকার চাষকৃত জমি ও বনাঞ্চল ধস করেই ব্যবসা চাঙ্গা করার যেন মালিকদের মূল লক্ষ্যে।

বন বিভাগ ও পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্র বলছে, বান্দরবানে সাতটি উপজেলায় ৭০টি অবৈধ ইটভাটা রয়েছে। তার মধ্যে ১৯টি ইটভাটা হাইকোর্ট থেকে রিট করা। আর বাকি ৫১টি কোন রিট নাই। ২০১৯ সাল থেকে ২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত পাহাড় কাটা ও ইটভাটা ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ৩ কোটি ৮৬ লাখ টাকা জরিমানা ও কয়েকশত ঘনফুট গাছ জব্দ করা হয় এবং ৫৩টি ফৌজদারি মামলা দায়ের পরেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। এসব ইটভাটাতে বন জঙ্গলের কাঠ এবং পাহাড় কেটে মাটি স্তূপ করায় প্রতিটি ইটভাটায় বন ও পরিবেশ অধিদপ্তর অভিযান চালিয়ে জরিমানা করা হলেও তাতেই মানছেন নাহ কোন আইন। বরঞ্চ মামলা আইন দেখিয়ে পুরোদমে চালু করা হয় ইটভাটা।

বান্দরবানে সাতটি উপজেলায় ইটভাটা রয়েছে। সদরে ১২ টি,রোয়াংছড়িতে ১টি, রুমাতে ২টি, থানচিতে ১টি, লামা উপজেলায় ৪০টি, আলীকদমে ৬টি ও নাইক্ষ্যংছড়িতে ৮টি ইটভাটা রয়েছে। সবচেয়ে ইটভাটা বেশী রয়েছে লামা উপজেলাতে। এসব ইটভাটাগুলোতে শিশুশ্রম নিষিদ্ধ থাকলেও তাদের দিয়েও কাজ করান ইটভাটা মালিকরা। 

শীতের মৌসুম শুরু আগে প্রতিটি ইটাভাটা এগুলোতে কুমিল্লা বিভাগ থেকে আনা হয় অসংখ্য শ্রমিক। এসব শ্রমিকদের পারিশ্রমিক হিসেবে প্রতি ঘরে ৫০ হাজার টাকা বিনিময়ে ছয়মাসে জন্য কাজ পরিচালনা করতে নিয়ে আসা হয় প্রতিটি ইটভাটাতে। এরপর শুরু হয় পাহাড় ও বনাঞ্চল ধসে চক্র। ইটভাটা চালুর আগ পর্যন্ত পাহাড় কেটে মাটি ও বন উজার করে গাছ জমাট শুরু হয়। অথচ এসব ইটভাটাগুলোতে স্থানীয় বাসিন্দারা তেমন কাজকর্ম পান নাহ। এসব কাজে বাধা প্রদান করা হলে হুমকি-ধামকি ভয় দেখানো হয় স্থানীয় মানুষদের। ইটভাটা মালিকরা মুখের উপর প্রশ্নে ছুড়ে দে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এসব ইটভাটা গড়ে তোলা হয়েছে।

ইটভাটা প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৩ তে বলা হয়েছে, লাইসেন্স ও পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়া ইট তৈরি করার সুযোগ নেই। লাইসেন্স ছাড়া কেউ ইটভাটা চালু করলে শাস্তির বিধান রয়েছে। এ আইন অমান্য করলে ১০ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। আবার  ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) আইন, ২০১৯ অনুযায়ী, বিশেষ কোনো স্থাপনা, রেলপথ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও ক্লিনিক, গবেষণা প্রতিষ্ঠান কিংবা অনুরূপ কোনো স্থান বা প্রতিষ্ঠান থেকে কমপক্ষে এক কিলোমিটার দূরে ইটভাটা স্থাপন করতে হবে। তবে বান্দরবানে এক দশক ধরে অবৈধভাবে চলা সকল ইটভাটা চালু থাকাতে এটাই প্রমাণিত যে, তারা  আইনের তোয়াক্কা না করে চালিয়ে যাচ্ছে ইটভাটার কাজ।

বান্দরবানে কোনোটিতেই ইট পোড়ানোর লাইসেন্স, ফায়ার সার্ভিসের সার্টিফিকেট, আয়কর প্রত্যয়ন ও পরিবেশ ছাড়পত্র নেই। সব ইটভাটা এক দশক ধরে অবৈধ। প্রভাবশালীদের মালিকানা ও ছত্রছায়ায় পাহাড় কেটে ও ফসলি জমির উর্বর মাটি দিয়ে ও দিন-রাত বনের কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানো হয়। কোনো ভাটাতে কয়লা ব্যবহার করা হয় না। কাঠ পোড়ানোর ফলে বন উজাড়ের পাশাপাশি জীববৈচিত্র্যও ধ্বংস হচ্ছে।তাছাড়া বেশির ভাগই কৃষিজমি, জনবসতি, প্রাকৃতিক ও সামাজিক বন এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঘেঁষে গড়ে উঠেছে এই ইটভাটাগুলো। ভাটার বড় বড় গাড়ির আওয়াজে রাস্তা ভাঙন ও সড়ক সংলগ্ন স্কুলটি ধুলাবালি ও চুল্লির কালো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। শুধু তাই নয় আশেপাশে বনাঞ্চল,পাহাড় ধস করে চালু করা হয়েছে এসব অবৈধ ইটভাটাগুলো। এসব অবৈধ ইটভাটা বন্ধ দাবি জানিয়েছেন সর্বস্তরের মানুষ।

পার্বত্য চট্টগ্রাম বন ও ভূমি অধিকার সংরক্ষণ আন্দোলন কমিটির জেলা আহ্বায়ক জুমলিয়ান আমলাই বলেন, এসব ইটভাটা অবশ্যই পরিবেশে জন্য হুমকি। বন উজার করে পাহাড় কেটে পরিবেশ ধস করে ইটভাটা চালাচ্ছে সেভাবে হলে পাহাড় আর অস্তিত্ব থাকবে না। আর আমরা ইটভাটা বিপক্ষে নয়। ইটভাটা পরিচালনা করতে যে নিয়মনীতি ব্যবস্থাপনা আছে সেটি না মানার কারণে আন্দোলন করেছি। তাই ইটভাটা বন্ধ বলে পরিবেশ রক্ষা পাবে বলে আমি মনে করি।

পরিবেশ অধিদপ্তর সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, পাহাড় ধস করে বান্দরবানে কোন ইটভাটা চালু করা যাবে না। আমরা চেষ্টা করছি জিরো টলারেন্স নিয়ে আসার জন্য।

জেলা প্রশাসক শাহ মোহাজিদ উদ্দিন বলেন, ঊর্ধ্বতন থেকে নির্দেশনা রয়েছে, বান্দরবানে অবৈধ ইটভাটা একটাও চলবে না।

শাকিল/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com