শেরপুরে বিপুল পরিমাণের মাদক ও নগদ টাকা সহ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেছে সেনা বাহিনী। এই ঘটনার সাথে জড়িত দুই নারী মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়েছে।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে সেনাবাহিনী এবং জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এক যৌথ প্রেস ব্রিফিং এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে জানানো হয়, বুধবার দুপুরে সেনা ক্যাম্পে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযোগ জানানো হয় যে, সদর উপজেলার চর মোচারিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম মুন্সির চর গ্রামের একটি বাড়িতে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বিপুল পরিমাণের মাদক মজুদ রয়েছে। এ তথ্যের ভিত্তিতে শেরপুরের সেনা ক্যাম্প এর ক্যাপ্টেন নাহিয়ান জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সাথে যোগাযোগ করে বেলা আড়াইটার দিকে প্রত্যন্ত ওই গ্রামে যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
এসময় স্থানীয় কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী ও একাধিক হত্যা মামলাসহ বিভিন্ন মামলার আসামি বাবুল মিঞার বসত ঘরে তল্লাশি করা হয়। তার ঘর থেকে ২৮ গ্রাম হিরোইন ৪৬০ পিস ইয়াবা, প্রায় সাড়ে ৬ কেজি গাঁজা, এক বোতল বিদেশি মদ, দুই ক্যান বিয়ার সহ মাদক বিক্রির ৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা এবং দেশীয় দুটি অস্ত্র (চাপাতি ও ছুরি) উদ্ধার করা হয়। একই সাথে এসব মাদক দ্রব্য মজুদ ও বিক্রির অভিযোগে মাদক ব্যবসায়ী বাবুল মিঞার স্ত্রী কাকলি বেগম (৩২) এবং তার শ্যালিকা জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ী উপজেলার ইজলাপাড়া গ্রামের কাবিল মিয়ার কন্যা কাঁকনকে(২৮) আটক করে যৌথ বাহিনী। সেই সাথে উদ্ধারকৃত মাদকদ্রব্য জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়।
আটককৃত ওই দুই নারী প্রাথমিকভাবে জানিয়েছেন, তারা মাদক সেবন ও ব্যবসার সাথেও জড়িত। তবে মূল মাদক ব্যবসায়ী বাবুল মিয়া যৌথ অভিযানের খবর পেয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় বলে প্রেস ব্রিফিং এ বলা হয়েছে। এর কারণ হিসেবে জানায় ওই বাবুল মিয়ার বাড়ির চারপাশে সিসি ক্যামেরা যুক্ত করা হয়েছে। হয়ত সিসি ফুটেজে অভিযানের দৃশ্য দেখে টের পেয়ে বাড়ি থেকে শটকে পড়ে।
জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ফয়সাল আহমেদ জানান, মাদকসহ আটককৃত দুই নারীর বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে। সেই সাথে মূল মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
এ বিষয়ে সোনা ক্যাম্পের ক্যাপ্টেন নাহিয়ান জানায়, দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আমরা বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সারাদেশে মোতায়েন আছি সিভিল প্রশাসনকে সহায়তা করতে। জেলার সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাসহ বিভিন্ন অপরাধীদের ধরতে সদা প্রস্তুত সেনাবাহিনী। একই সাথে মাদক ও চোরাচালান রোধেও কাজ করে যাচ্ছে সেনাবাহিনী। এরই অংশ হিসেবে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা খবর পাই প্রত্যন্ত চরাঞ্চলে বিপুল পরিমাণের বিভিন্ন মাদকের মজুদ করা হয়েছে। তারই অংশ হিসেবে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহায়তায় এ অভিযান প্রচারণা করা হয়েছে। আগামীতেও এই অভিযান অব্যাহত থাকবে এবং মূল হোতাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলবে।
অভিযানকালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৩ বীরের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাসান হাফিজুল হক, সেনাবাহিনীর শেরপুর জেলা ক্যাম্প কমান্ডার মেজর তাউসিফ বিন হাসান, ক্যাপ্টেন মো. নাহিয়ান, জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ফয়সাল মাহমুদসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর