জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার হিমাগারগুলোতে খাবার আলুর মজুদ তলানিতে এসে পৌঁছেছে। ফলে বাজারে ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটে আলুর দাম বৃদ্ধির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
কালাই উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, কালাই উপজেলায় এবার মোট ১০ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে আলু রোপণ হয়েছিল। উৎপাদন হয়েছিল ২ লাখ ১৭ হাজার ৮৯ মেট্রিকটন আলু। উপজেলার ১১ টি হিমাগারের ধারণ ক্ষমতা ১ লাখ ১৩ হাজার ১০০ মেট্রিকটন। মজুদ করা হয়েছিল ১ লাখ ১২ হাজার ১১৩ মেট্রিকটন। কালাই উপজেলা হতে প্রতিমাসে ১৫ থেকে ১৬ হাজার মেট্রিকটন খাবার আলু দেশের বিভিন্ন বাজারে সরবরাহ হয়ে থাকে। কিন্তু বর্তমানে কালাই উপজেলার ১১টি হিমাগারে খাবার আলুর মজুদ রয়েছে মাত্র ৯ হাজার মেট্রিকটন অপরদিকে বীজআলু রয়েছে ১৪ হাজার মেট্রিকটন। এখন যে পরিমাণ খাবার আলু মজুদ আছে তা দিয়ে দেশের বিভিন্ন বাজারের চাহিদা মোতাবেক ১৫ থেকে ২০ দিনের চাহিদা যোগান দিতে পারবে বলে জানা গেছে। অন্যদিকে নতুন জাতের আলু বাজারে আসতে এখনো প্রায় দেড় মাসের মত সময় লাগবে।
উপজেলার সড়াইল গ্রামের কৃষক দবীর উদ্দিন শাহ, চকমুরলী গ্রামের হামিদ প্রামানিক, ধাপ-শিকটা গ্রামের নাজমুল, হাতিয়র গ্রামের আলি আকবরসহ অনেকে জানান বর্তমানে বিভিন্ন জাতের আলু বস্তা প্রতি ২৯০০ থেকে ৩২০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। হিমাগারে আলুর মজুত কম কিন্তু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটে আলুর দাম বাড়ানো হচ্ছে । এদিকে নতুন আলু বাজারে আসার আগেই যদি সংকট দেখা দেয় তাহলে কৃষকরা ভালো দামের আশায় নতুন আলুর বয়স হওয়ার আগেই বিক্রি করে দিলে সামনের বছরে আরো আলুর সংকট হবে। সেই সাথে দাম ও বৃদ্ধি পাবে।
কৃষকরা জানান, গতবছর এই সময়ে তাদের লাগানো আগাম জাতের আলুর বয়স হয়েছিল ১০ থেকে ১২ দিনের মত কিন্তু এবার এখন পর্যন্ত ধানই কাটতে পারে নাই।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ অরুণ চন্দ্র রায় বলেন, চলতি রবি মৌসুমে কালাই উপজেলায় ১১ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে দুই থেকে আড়াই হাজার হেক্টর জমিতে আগাম জাতের আলু চাষের সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু এবার রবি মৌসুমের শুরুতেই বৃষ্টির কারণে আগাম জাতের আলু চাষে কৃষকের সমস্যা হচ্ছে। আশা করছি কিছু দিনের মধ্যেই কৃষকরা ধান কেটে আগাম জাতের আলু চাষ করতে পারবে। সেক্ষেত্রে নতুন জাতের আলু বাজারে আসতে এখনো প্রায় দেড় মাসের মত সময় লাগবে। ফলে হিমাগারে যেসব মজুদদার ব্যবসায়ী ও কৃষক আলু রেখেছেন তারা মজুদ কম এর কারণে ধীর গতিতে বাজারে আলু ছাড়ছে এতে দাম বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামিমা আক্তার জাহান বলেন, উপজেলাতে খাবার আলুর মজুদ চাহিদার তুলনায় কম আছে বলে কৃষি কর্মকর্তার কাছ থেকে জেনেছি। খাবার আলুর মজুদ কম এই সুযোগে ব্যবসায়ীরা কেউ যেন অতিরিক্ত কৃত্রিম সংকট তৈরি করে আলুর দাম বৃদ্ধি করতে না পারে সে ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বদ্ধ পরিকর।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর