• ঢাকা
  • ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২৪
  • শেষ আপডেট ১৫ সেকেন্ড পূর্বে
মো: মিজানুর রহমান
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ৩১ অক্টোবর, ২০২৪, ০৯:২৬ রাত
bd24live style=

ঝিনাইদহে আওয়ামীলীগ সরকারের পিপি এখন জিপি!

প্রতীকী ছবি

ঝিনাইদহ আদালতের জিপি-পিপিসহ ৭২ জন আইন কর্মকর্তার নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে। রবিবার (২০ অক্টোবর) আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপ সলিসিটর (জিপি-পিপি) সানা মো. মাহরুফ হোসাইন স্বাক্ষরিত এক আদেশে ঝিনাইদহ আদালতের জিপি, পিপি, এডিশনাল পিপি ও এপিপি পদে সরকারি ৭২ জন আইনজীবীর নিয়োগ দেওয়া হয়।

এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরোধিতাকারী এবং স্বৈরাচারী শাসক আওয়ামী লীগের আমলে পিপি নিয়োগ প্রাপ্ত এ্যাড. মোকাররম হোসেন টুলু এখন ঝিনাইদহ আদালতের শীর্ষ জিপি পদে নিয়োগ পাওয়ায় ঝিনাইদহ জুড়ে চলছে বিতর্ক।

আওয়ামীলীগের সময় নিয়োগপ্রাপ্ত সুবিধা ভোগী এ্যাড.মোকাররম হোসেন টুলু ছিলেন দুদকের পিপি এবং ক্রিমিনাল প্র্যাকটিশনার কিন্তু এখন তিনি কীভাবে জিপি হলেন এ নিয়ে প্রশ্ন আইনজীবী ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের।

তাই প্রকাশিত তালিকা বাতিলের দাবিতে ঝিনাইদহের সাধারণ আইনজীবীগণের পক্ষ থেকে ২২/১০/২০২৪ ও ঝিনাইদহ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা ২৩/১০/২০২৪ তারিখে আইন উপদেষ্টা বরাবরে দিয়েছেন স্মারকলিপি।

যা হুবহু তুলে ধরা হলো-
বরাবর
উপদেষ্টা 
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
ও অ্যাটর্নী জেনারেল অব বাংলাদেশ।
মাধ্যম
জেলা প্রশাসক, ঝিনাইদহ।
বিষয়ঃ ঝিনাইদহ জেলার বিজ্ঞ সরকারি কৌসুলি (জিপি) নিয়োগ বাতিলের দাবিতে সাধারণ আইনজীবী সমাজের পক্ষ থেকে
স্মারকলিপি
জনাব,
যথাবিহিত সম্মান পূর্বক আপনার সদয় অবগতি ও সুবিবেচনার জন্য জানানো যাচ্ছে যে, ঝিনাইদহ জেলার বিজ্ঞ আইনজীবীগণ বিগত ২০/১০/২০২৪ খ্রীঃ তারিখে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এর স্মারক নং সলিসিটর /জিপি-পিপি (ঝিনাইদহ)-৪৯/২০২৪ (অংশ- ১)-১৩৩ এর মাধ্যমে জানতে পারেন যে, ঝিনাইদহে জেলা জজ আদালতে সরকারি কৌঁসুলি (জিপি) হিসেবে জনাব মোঃ মোকাররম হোসেন টুলুকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। উক্ত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখে ঝিনাইদহ জেলার সাধারণ আইনজীবী সমাজ বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যান এজন্য যে, সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত সরকারি কৌঁসুলি আপাদমস্তক একজন ক্রিমিনাল ল প্র্যাকটিশনার। তিনি কীভাবে সরকারি কৌঁসুলি (জিপি) হিসেবে নিয়োগ পেতে পারেন। তিনি জীবনে কখনো সিভিল প্র্যাকটিস করেননি তাই উনাকে নিয়োগ দিলে সরকারি স্বার্থ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। উপরন্তু সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত জিপি বিগত পতিত স্বৈরাচার সরকারের নিয়োগপ্রাপ্ত দুদকের মাগুরা, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহের পিপি হিসেবে অদ্যাবধি দ্বায়িত্ব পালন করেছেন। এরকম একজন পতিত স্বৈরাচার সরকারের সুবিধাভোগী ব্যক্তিকে ছাত্র জনতার বৈপ্লবিক পরিবর্তনের মাধ্যমে গঠিত সরকারের সরকারি কৌঁসুলি হিসেবে নিয়োগ করলে হাজারো শহীদের রক্তের সাথে বেইমানি করা হবে। এমন সদ্বিবেচনাশূণ্য নিয়োগে ঝিনাইদহ জেলার বিজ্ঞ আইনজীবি সহ সর্বস্তরের জনগণের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভ দানা বেধেছে।

উদ্ভূত পরিস্থিতি বিবেচনাপূর্বক সরকারি কৌঁসুলি নিয়োগ বাতিল করে ঝিনাইদহের গণমানুষ ও বিজ্ঞ আইনজীবিদের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করবেন বলে আমরা আশাবাদী। এমন পরিস্থিতিতে জুলাই বিপ্লবের প্রকৃত চেতনাকে বাস্তবায়ন ও সার্থক করার নিমিত্তে আমাদের নিম্ন লিখিত দাবিগুলো মেনে নিলে আমরা কৃতজ্ঞ থাকবো।

১) জিপি তালিকা থেকে জনাব মোকারম হোসেন টুলুর নাম কর্তন করতে হবে।

২) এডিশনাল জিপি হিসেবে অনুমোদনকৃত নাম জনাব মো. শফিউল আলমকে জিপি তালিকাভুক্ত করতে হবে।

উপর্যুক্ত দাবিসমূহ পূরণে ব্যর্থ হলে উদ্ভূত পরিস্থিতির দায় সংশ্লিষ্ট আইন উপদেষ্টা ও অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসকে সকল দায় দ্বায়িত্ব বহন করতে হবে।
সাধারণ আইনজীবী সমাজের পক্ষে স্মারকলিপি প্রদান করেন তারা।

এ বিষয়ে এ্যাড. মোকাররম হোসেন টুলু বলেন- যারা স্মারকলিপি দিয়েছেন তারাই এখন অস্বীকার করছেন। তারা কোন অভিযোগ দেয়নি। স্মারকলিপির স্বাক্ষর তারা করেন নি। এদের মধ্যে এ্যাড. আহসান উল্লাহ তিনি নিজেই তাকে বলেছেন। তিনি  ক্রিমিনাল প্র্যাকটিশনার স্বীকার করে বলেন জিপি হতে কোন আলাদা কোর্স করতে হয় না। যারা অভিযোগ দিয়েছেন তারা কি আলাদা কোর্স করেছেন? তিনি আওয়ামী লীগ করতেন কিনা জানতে চাইলে বলেন আওয়ামী লীগ তিনি করেন নি তার কোন পদ পদবি ছিল না কিন্তু বিএনপি ঘেঁষা ছিলেন তিনি। 

আওয়ামী লীগের আমলে দুদকের পিপি ছিলেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন ২০০৭ সাল থেকে সাত/আট বছর দুদকের পিপি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন এখন আর করেন না। জিপি নিয়োগে কোন তদবির ছিল কিনা জানতে চাইলে বলেন, আমি কোন ঘুষ দুর্নীতি পছন্দ করিনা সুতরাং এমনিতেই আমার নিয়োগ হয়েছে। 

বিতর্কিত এ্যাড. মোকাররম হোসেন টুলু বর্তমান দুদকের পিপি'র দায়িত্ব আছেন কিনা ঝিনাইদহ দুদকের ইন্সপেক্টর আবুল কাওসার এর কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন এখনো দুদকের পিপি হিসাবে এ্যাড. মোকাররম হোসেন টুলু সাহেব আছেন। 

কতো বছর ধরে তিনি এই দায়িত্ব পালন করছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা আমি সঠিক বলতে পারবো না কিন্তু আমি ২০২২ সাল থেকে দেখে আসছি তিনি হলেন দুদকের পিপি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিনিয়র এ্যাড. দৈনিক সংগ্রাম'এর প্রতিনিধি'কে একটি উদাহরণ দিয়ে জানান,সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাজ কি এমবিবিএস/ডিএমএফ ডাক্তার করতে পারবেন? তিনি এখনো ক্রিমিনাল প্র্যাকটিশনার তাহলে কীভাবে সরকারি সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণ করবেন? এ নিয়ে আইনজীবী দের মধ্যে তীব্র বিতর্কের ধূম্রজাল সৃষ্টি হচ্ছে। 

তিনি আরও বলেন,আওয়ামী লীগ সরকারের আমল থেকে এখনো চলমান দুদকের পিপি হিসাবে দায়িত্বে থাকা অবস্থায় কীভাবে আবার জিপি হিসাবে নিয়োগ পায় আইনজীবীদের জানা নেই। তার বাবা ছিলেন মুসলিমলীগ,বর্তমানে তার একভাই আওয়ামী লীগের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান, তিনি নিজেই স্বৈরাচারী শাসনকালে ক্ষমতার বলে দুদকের পিপি হয়েছিলেন। তিনি এখন যদি আবারও জিপি হিসেবে নিয়োগ পান তাহলে এই দেশ পুনরায় স্বাধীন হওয়ার দরকার ছিল কি?

আইনজীবীদের পক্ষ থেকে স্মারকলিপি দেওয়া এ্যাড. রফিকুজ্জামান মল্লিক দৈনিক সংগ্রাম'কে বলেন-
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে পিপি এবং ক্রিমিনাল প্র্যাকটিশনার নিয়োগ পাওয়া এ্যাড. মোকাররম হোসেন টুলু এখন জিপি ( সরকারি কৌশলী) হয়েছে। যা তার পক্ষে সরকারি সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারা অসম্ভব হয়ে যাবে। কিন্তু মাস শেষে তিনি সরকারের সুযোগ-সুবিধা ঠিকই নিবেন। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে সরকার। তাই তার অপসরণের জন্য সাধারণ আইনজীবীদের পক্ষে আইন উপদেষ্টা বরাবরে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। 

এদিকে ঝিনাইদহে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের পক্ষে  সাইদুর রহমান বলেন - বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরোধিতাকারী স্বৈরাচারী শাসক আওয়ামী লীগের আমলে পিপি নিয়োগ প্রাপ্ত এ্যাড. মোকাররম হোসেন টুলু জিপি পদে নিয়োগ পাওয়ায় ঝিনাইদহ জুড়ে চলছে বিতর্ক। তিনি বিতর্কিত একজন ব্যক্তি সুতরাং তাকে অপসারণ করে অন্য ভালো কাউকে জিপি নিয়োগ দেওয়ার জন্যই আমরা ঝিনাইদহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা আইন উপদেষ্টা বরাবরে স্মারকলিপি দিয়েছি।

এ বিষয়ে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক (ডিসি) জনাব মোহাম্মদ আব্দুল আওয়াল  জানান, এ বিষয়টা আমাদের কাজ নয় সুতরাং এটা আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কাজ। এখানে আইন, বিচার বিভাগ যে,সিদ্ধান্ত নিবেন সেটা হবে। আমি তাদের স্মারকলিপি পেয়েছি সেটা আইন, বিচার মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি।

মুনতাসির/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com