বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) বরগুনা খাকদোন নদের উপর দিয়ে ওজোপাডিকোর বিদ্যুৎ সরবরাহের বিদ্যুৎ সংযোগ লাইনের ঝুলে থাকা তার ঢাকা থেকে আসা এম বি রাজারহাট বি- লঞ্চের সাথে জড়িয়ে বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে সংযোগ বিছিন্নে ঘটনা ঘটেছে। এতে বরগুনা শহরে সাড়ে চার ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল। বিকল্প সঞ্চালন লাইন দিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাকিবক করে বিদ্যুৎ বিভাগ।
ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ওজোপাডিকো) বরগুনা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সকাল ১০ টার দিকে ঢাকা -বরগুনা নৌপথে চলাচলকারী এমবি রাজারহাট- বি লঞ্চের ওপরের এসির পাইপের সাথে বরগুনা খাকদোন নদের উপর দিয়ে ৩৩ কেভি সঞ্চালন লাইন জড়িয়ে পরে। এতে সঞ্চালন লাইনের দুইটি খুঁটি ভেঙে ও তার ছিঁড়ে যায়। মুহূর্তের মধ্যে সংযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এতে বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে স্থানীয় বাসিন্দারা ও লঞ্চযাত্রীরা রক্ষা পায়। বিকল্প লাইন দিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাকিব করা হয়। এদিকে বরগুনা নদী বন্দর কার্যালয় থেকে চলতি বছরের আগস্ট মাসে খাকদোন নদীর উপর দিয়ে বৈদ্যুতিক লাইন সরিয়ে উঁচুতে প্রতিস্থাপন করার জন্ চিঠি দেয়া হয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বরগুনা পৌরশহরের পশিচম বরগুনা এলাকায় (ওজোপাডিকো) কাযালয় সামনে খাকদোন নদে তীরে দুইটি বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে সঞ্চালন লাইনের তার ছিড়ে নদের তীরে পড়ে আছে।
পৌর শহরের পশিচম বরগুনা এলাকার বাসিন্দা নিজাম বলেন, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আমরা অনেকেই নদীর চরে বসে লঞ্চ আসতে আসে তাই দেখেছিলাম। হঠাৎ দেখি নদীর উপরে বিদ্যুতের লাইন লঞ্চের একটি পাইপের সাথে আটকে যায়, মূহূর্তের মধ্যে তার ছিড়ে দুইটি বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে যায়। এসময় আমরা দৌড়ে কোনো মতে রক্ষা পাই। কপালগুনে লঞ্চ যাত্রীরা বেঁচে গেছেন।
এম বি রাজারহাট -বি লঞ্চের মাস্টার (চালক) ইয়ামিন হোসেন বলেন, আমরদের জাহাজটি খাকদোন নদীতে সকাল ১০ টায় প্রবেশ করে , এরকিছু সময় পর বিদ্যুতের লাইন দেখে জাহাজের গতি কমিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু জোয়ার থাকার কারণে জাহাজ নিয়ন্ত্রণ না করতে পারায় বিদ্যুতের লাইন জড়িয়ে ছিড়ে যায়। তবে অল্পের জন্য আমাদের জাহাজে থাকা শতাধিক যাত্রী প্রানে বেঁচে গেছেন।
ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ওজোপাডিকো) বরগুনা কার্যালয় নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মিজানুর রহমান বলেন, ঢাকা বরগুনা নৌপথে চলাচলকারী এম বি রাজারহাট- বি লঞ্চের ওপরের পাইপের সাথে খাকদোন নদের উপর দিয়ে ৩৩ কেভি সঞ্চালন লাইনের জড়িয়ে পরে। এর ফলে সঞ্চালন লাইনের দুইটি খুঁটি ভেঙে ও সঞ্চালন লাইনের তার ছিলে যায়। মুহূর্তের মধ্যে সংযোগ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে কোনো প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। তবে নদীর উত্তর পাড়ে দুইটি বসতঘর ভেঙে গেছে।
বরগুনা নদী বন্দর কর্মকর্তা সৈয়দ মো.মাহবুবুর রহমান বলেন, বরগুনা নদী বন্দর সংলগ্ন খাকদোন নদীর উপর দিয়ে বৈদ্যুতিক লাইন নিচু থাকার ফলে লঞ্চের উপরি ভাগ বেধে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে যে কোন সময় দুর্ঘটনা ঘটে লঞ্চের যাত্রী সাধারণের প্রাণহানির আশঙ্কায় তিন মাস আগে বিদ্যুৎ বিভাগের চিঠি দিয়ে লাইন উচুস্থানে প্রতিস্থাপনের জন্য আবেদন করেছিলাম।বিদ্যুৎ বিভাগ বিষয়টি গুরুত্ব না দেয়ার কারণে আজ দুর্ঘটনা ঘটলো।
বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দেওয়ান জগলুল হাসান বলেন, বিদ্যুতের লাইন বিচ্ছিন্ন হওয়ার ঘটনায় বিদ্যুত বিভাগ থেকে একটি সাধারণ ডায়রি (জিডি) আবেদন করেছেন।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর