
শ্বাসকষ্ট থেকে মুক্তির আশায় কথিত কবিরাজের কাছে প্রতি পিস কলা ২০০ টাকা দিয়ে কিনে খেয়েছেন শতশত হাঁপানি রোগী। আর এই চিকিৎসা গ্রামবাসীর কাছে কলা চিকিৎসা নামে পরিচিত। একটি কলা চার টুকরা করে প্রতিজনকে এক টুকরা করে খাওয়ানো হয়েছে। প্রতি টুকরার দাম রাখা হচ্ছে ৫০ টাকা। আর এমন ঘটনা ঘটেছে নাটোরের লালপুরের কলসনগর গ্রামে।
শুক্রবার (১ নভেম্বর ) রাত সাড়ে ৯ টার দিকে কথিত কলাচিকিৎসার খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে কলাচিকিৎসা বন্ধ করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান। সরেজমিনে জানা যায়, কয়েকবছর যাবৎ ‘কলাচিকিৎসা’ দিয়ে আসছেন স্থানীয় কয়েকজন কবিরাজ। শ্বাসকষ্টসহ নানা ধরনের রোগ থেকে মুক্তির আশায় বাস, মাইক্রোবাস, সিএনজি মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানে করে উপজেলার কলসনগর গ্রামের আবুল কালামের বাড়িতে ভিড় করেন রোগীরা। সেখানে প্রশাসনিক ঝামেলা এড়াতে টাকা নিয়ে গোপনে এই চিকিৎসা দেন কথিত কবিরাজ মিজানুর রহমান।
গোপনে কলাচিকিৎসা দিচ্ছেন খবর পেয়ে স্থানীয় সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলের ভিডিও ও ছবি তুলতে গেলে বাধা প্রদান করেন ওই কবিরাজ ও তার অনুসারীরা।
পরে খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে তারা পালিয়ে যান। গত বছরও কথিত এই কবিরাজ মিজানুর উপজলার শালেশ্বর গ্রামে তার দুলাভাই আব্দুল মতিনের বাড়িতে এচিকিৎসা দেন। উপজেলা প্রশাসনের উপস্থিত টের পেয়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন তিনি।
পাবনার চাটমোহর থেকে চিকিৎসা নিতে আসা জান্নাতুল ফেরদৌস ও রেজিয়া বেগম বলেন, লোকমুখে শুনেছি এখানকার কলা দিয়ে গাছ খেলে শ্বাসকষ্ট ভালো হয়৷ এজন্য আমরা হাইস নিয়ে এসেছি। তবে সত্যিই রোগ ভালো হয় কিনা জানা নেই।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সুরুজ্জামান শামীম বিডি২৪লাইভ'কে বলেন, কলার সঙ্গে গাছগাছড়া খেলে শ্বাসকষ্ট রোগ ভালো হয় এমন তথ্যপ্রমাণ চিকিৎসা বিজ্ঞান সম্মত নয়। ভিত্তিহীন এ ধরনের চিকিৎসার মাধ্যমে মানুষকে প্রতারিত করা হচ্ছে। এ বিষয়ে কবিরাজ মিজানুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি কোন মন্তব্য করেন নি।
লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহেদী হাসান বলেন, সাংবাদিকদের মাধ্যমে কথিত কলা চিকিৎসার খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীসহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হওয়ার পূর্বেই কথিত কবিরাজরা পালিয়ে যায়। পুনরায় এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি করার অপচেষ্টা করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর