গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেছেন, জুলাই আগস্টের গণ অভ্যুত্থানে প্রায় দুই হাজার মানুষ জীবন দিয়েছে। হাজার হাজার মানুষ ফ্যাসিবাদী হাসিনাকে হটাতে গিয়ে আহত হয়েছে এবং পঙ্গুত্ব বরণ করেছে। গণ অধিকার পরিষদ, যুব অধিকার পরিষদ ও ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা আওয়ামী ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে রাজপথে আন্দোলন করতে গিয়ে রক্তাক্ত হয়েছে, তারপরও ফ্যাসিবাদের সঙ্গে কোন আপস করে নাই। ফ্যাসিবাদের জননী দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। কিন্তু এই ফ্যাসিবাদের পতন ঘটানো সহজ কাজ ছিলোনা। গত দেড় দশকে রাজনৈতিক আন্দোলন সংগ্রামে অসংখ্য মানুষ শহীদ হয়েছে, আহত হয়েছে, কারাগারে গিয়েছে।
শনিবার (২ নভেম্বর) দুপুরে দাউদকান্দি উপজেলার বিশ্বরোড ইদগা মাঠে উপজেলা গণ অধিকার পরিষদ আয়োজিত এক পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেছেন।
নুরুল হক নুর বলেন, আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে, কিন্তু তাদের যে সমস্ত কর্মকাণ্ড চলতো, এখন কিছু ব্যক্তি সংগঠন ওই সকল কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করতে চাচ্ছে। যারা এখন নিয়ন্ত্রণ করতে চাচ্ছেন তাদেরকে বলবো এটা কোন রাজনৈতিক সরকার না, কাজেই কোন রাজনৈতিক দলের মাতাব্বরী বাহাদুরি করার কোন চান্স নাই। যারা মাতাব্বরী করবে, আওয়ামী ফ্যাসিবাদিও বিরুদ্ধে যেভাবে রুখে দাঁড়িয়েছেন, তেমনি ভাবে এলাকাবাসীকে ঐক্যবদ্ধ করে নব্য ফ্যাসিবাদ মাথাচাড়া দিতে চাইলে তাদেরকেও রুখে দেয়ার আহ্বান জানান।
তিনি আরো বলে, আমরা এক ফ্যাসিবাদ হটিয়ে আরেক ফ্যাসিবাদ দেশে আনতে চাই না। এক স্বৈরাচারী দলকে হটিয়ে আবার কোনো স্বৈরাচারী দলকে ক্ষমতায় দেখতে চাই না। এ দেশে জনগণ গত পাঁচ দশকে গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে ভোটের অধিকারের জন্য, ভাতের অধিকারের জন্য সংগ্রাম করতে গিয়ে অনেক রক্ত ঝরিয়েছে, জীবন দিয়েছে। জুলাই অভ্যুত্থান হলো জনগণের শেষ রক্ত দেয়া, এদেশের জনগণ আর কোনো রক্ত দেবে না। এবার জনগণ জন আকাঙ্ক্ষার বলে আগামীর বাংলাদেশ গড়ে তুলবে।
ভিপি নুর বলেন, এদেশের রাজনীতির যে জমিদারি প্রথা, এমপির ছেলে এমপি, চেয়ারম্যানের ছেলে চেয়ারম্যান, মেয়রের ছেলে মেয়র, ওমূক পরিবারের এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করবে সেইদিন আর নাই। দিন বদলাইছে, দিন পাল্টিয়েছে, এবার সাধারণ মানুষকে জেগে উঠতে হবে। পুরোনো রাজনৈতিক ব্যবস্থা দিয়ে এই সমাজের পরিবর্তন হবে না। জুলাই-আগষ্ট গণঅভ্যুত্থানের পরে আমরা যদি নতুন রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করতে না পারি, আজকে তরুণরা যে বিপ্লব ঘটিয়েছে, সেই তরুণদের যদি রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত করতে না পারি, তাহলে এই বাংলাদেশর মানুষের কপালে আরো দুঃখ আছে। তাই নতুন বাংলাদেশ গড়তে প্রয়োজন নতুন রাজনীতি, নতুন নেতৃত্ব। গণঅধিকার পরিষদ নতুন রাজনীতি প্রসারে কাজ করছে। গণ অধিকার পরিষদ কোন ব্যক্তি পরিবার কেন্দ্রিক দল নয়। গণ অধিকার পরিষদ গণমানুষের দল।
তিনি প্রশাসনের উদ্দেশ্যে বলেন, কোন রাজনৈতিক দলের অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নে গোলাম হয়ে কাজ করবেন না। যদি কোন রাজনৈতিক দলের সাথে পিড়িতি করে প্রশাসন চালান, তাদের জায়গা প্রশাসনে হবে না। আপনারা অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের অধীনে আছেন, এখন কোনো রাজনৈতিক সরকার না, কাজেই এলাকার শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার্থে জনকল্যাণমূলক কাজ করবেন।
পথসভায় এছাড়াও বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, কেন্দ্রীয় ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান, কেন্দ্রীয় যুব অধিকার পরিষদের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক মেহেদী হাসান সানি, কর্মসংস্থান বিষয়ক ফয়সাল আহমেদ প্রমূখ। গণঅধিকার পরিষদ দাউদকান্দি উপজেলা শাখা এই পথ সভার আয়োজন করেছে।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর