নাব্যতা সঙ্কটের কারণে পাবনার কাজিরহাট-আরিচা নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। ঘাটে এসে আটকে পড়েছে পণ্যবাহী ট্রাক। দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রী ও যানবাহন শ্রমিকরা। পারাপারের অপেক্ষায় কাজিরহাট ঘাট প্রান্তে প্রায় ৩ কিলোমিটার পণ্যবাহী ট্রাকের যানজট সৃষ্টি হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিসি কাজিরহাট ঘাটের সহকারী ম্যানেজার মো. ফখরুজ্জামান শনিবার (০২ নভেম্বর) বিকেলে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে শুক্রবার (০১ নভেম্বর) দিবাগত রাত দশটা থেকে এই নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়।
বিআইডব্লিউটিসি কাজিরহাট ঘাটের সহকারী ম্যানেজার মো. ফখরুজ্জামান বলেন, 'যমুনা নদীতে প্রচণ্ড আকারে নাব্যতা সংকট দেখা দেয়ায় শুক্রবার রাত ৯টা থেকে কাজিরহটা-আরিচা নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এটা স্বাভাবিকভাবে প্রতিবছর এই সময়ে নাব্যতা সঙ্কট দেখা দেয়। তবে এবার অবস্থা বেশি খারাপ। ইতিমধ্যে ডুবোচরে ধাক্কা খেয়ে আমাদের দু'টি ফেরির কিছুটা ক্ষতিও হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ফেরি চলাচল বন্ধ থাকবে বলে জানান তিনি।'
এদিকে, ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রী ও যানবাহন শ্রমিকরা। কাজিরহাট ঘাট প্রান্তে আটকা পড়েছে অসংখ্য পণ্যবাহী যানবাহন। পারাপারের অপেক্ষায় ইতিমধ্যে তিন কিলোমিটার জুড়ে সড়কে পণ্যবাহী ট্রাকের যানজট দেখা দিয়েছে। তবে নাগাদ ফেরি চলাচল শুরু হবে তা কেউ বলতে পারছে না। চালক শ্রমিকরা অলস সময় পার করছেন।
আব্দুল মমিন নামের এক ট্রাকচালক বলেন, 'শুক্রবার রাত থেকে গাড়ি থামিয়ে বসে আছি। শনিবার দুপুর ২টা পর্যন্ত কোনো খবর নেই, ফেরি চলবে কি না। কখন যেতে পারবো বলতে পারছি না। এ এক সীমাহীন কষ্ট।'
মতিউর রহমান নামের আরেক ট্রাকচালক বলেন, 'এমন জায়গায় আটকা পড়ে আছি যে বের হয়ে অন্য সড়কপথে ঢাকায় যাবো তারও উপায় নেই। এ দুর্ভোগের শেষ কখন জানি না। কর্তৃপক্ষ কিছু বলতে পারছে না। তারা তো জানে প্রতিবছর এই সময় নাব্যতা সংকট দেখা দেয়। তাহলে সে হিসেবে তাদের প্রস্তুতি কেন থাকে না সেটাই বুঝি না।'
বিআইডব্লিউটিসি আরিচা ঘাটের ডিজিএম নাছির মোহাম্মদ চৌধুরী বলেন, 'বর্তমানে এই রুটে ৫টি ফেরি চলাচল করে। ফেরি চলাচলের জন্য কমপক্ষে ৮-৯ ফুট নাব্যতা দরকার। কিন্তু বর্তমানে নাব্যতা পাওয়া যাচ্ছে সাড়ে ৬ থেকে সাত ফুট পর্যন্ত। নাব্যতা ফিরলে ফেরি চালানো সম্ভব হবে। এখন কবে ড্রেজিং করে দ্রুত নাব্যতা ফেরাতে পারবে সেটা বিআইডব্লিউটিএ ভাল বলতে পারবে।’
বিআইডব্লিউটিএ’র ড্রেজিং বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘নাব্যতা সংকট তেমন নয়। আসলে প্রচণ্ড স্রোতের কারণে একটি চর ভেঙে নদীর ক্যানেলে প্রবেশ করেছে। যেটি ড্রেজিং কাজ চলছে। পানির নাব্যতা এখনও ৮ থেকে সাড়ে ৮ ফুট পর্যন্ত আছে। আশা করছি আজ শনিবার রাতের মধ্যেই ড্রেজিং কাজ শেষ হয়ে যাবে এবং ফেরি চলাচল শুরু হবে।’
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর