বগুড়া টিএমএসএস টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। সড়ক দুর্ঘটনা নাকি হত্যাকাণ্ড এ নিয়ে রয়ে গেছে ধোঁয়াশা।
শনিবার (২ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১১টায় সদর উপজেলার ঠেঙ্গামারা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ওই শিক্ষার্থীর নাম সৌরভ। তিনি টিএমএসএস টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তবে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় তাকে দুই যুবক ভর্তি করিয়ে দিয়ে সটকে পড়ে৷ কিন্তু আঘাতের চিহ্ন দেখে এটিকে হত্যাকাণ্ড বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বলে ধারণা নিহতের স্বজন ও পুলিশের।
নিহত সৌরভের চাচাতো ভাই রাসেল জানান, শনিবার রাত ১০টার দিকে ঠেঙ্গামারা এলাকার একটি দোকানে তার সাথে বসেছিলেন সৌরভ। তারা দুজনেই স্থানীয় টিএমএসএস টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী। এ সময়ে সেখানে নাজিম ও জাহিদ আসে এবং তাদের সাথে চলে যান সৌরভ। আধঘণ্টা পরে সৌরভকে নিয়ে যাওয়া এক বন্ধু মোবাইল ফোনে তার স্বজনদের জানায় সৌরভের বাইক দুর্ঘটনা হয়েছে, তাকে টিএমএসএস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরে স্বজনরা হাসপাতালে গিয়ে সৌরভের মরদেহ দেখতে পান। তবে যারা ভর্তি করিয়েছে তাদের কাউকে পাওয়া যায়নি।
এদিকে হাসপাতালের সিসি টিভি ফুটেজে দেখা যায়, স্থানীয় নাজিম তালুকদার এবং জাহিদ নামের দুই যুবক রক্তাক্ত সৌরভকে বাইকে করে নিয়ে আসে হাসপাতালে। পরে হাসপাতালে রেখেই তারা সটকে পড়েন।
মুঠোফোনে কথা হয় নাজিম তালুকদারের সাথে, নাজিম জানান, রাত সাড়ে ৯ টার দিকে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটের এক শিক্ষার্থীকে মারধর করে নাজিম ও তার বন্ধুরা। সেখানে সৌরভ কিছুটা দূরে বসে ছিল৷ পরে মারধরের শিকার হওয়া শিক্ষার্থী তার ছাত্রাবাসে গিয়ে বিষয়টি জানালে তারা দলবল নিয়ে আমাদের গিয়ে লাঠিসোঁটা নিয়ে এগিয়ে আসতে থাকে, যেটা দেখে তারা আতঙ্ক হয়ে বাইক নিয়ে স্থান ত্যাগ করে। পরে কিছুদূর যাওয়ার পড় সৌরভ যে মোটরসাইকেলটিতে ছিল সেটা অ্যাকসিডেন্ট করে মোটরসাইকেল থাকা ৩ জন আহত হয়। এরমধ্যে সৌরভ গুরুতর আহত দেখে তাকে হাসপাতালে রেখে চলে যায়। বন্ধুর এমন সময়ে সটকে পড়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি আরও জানান, যাদের আতঙ্কে আমরা যাবার নিয়েছি তারা আশেপাশে আছে কিনা বা কিছু করে কিনা এটা ভেবেই ভয়ে আমরা সটকে পড়ি।
হাসপাতালের ইমারজেন্সি মেডিকেল অফিসার সনদ কুমার ঘোষ বলেন, রাত পৌনে ১২ টায় সৌরভকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ভেতর আনা হয়৷ তবে হাসপাতালে আনার আগেই সৌরভের মৃত্যু হয়৷ সৌরভের শরীরে একাধিক ক্ষতের চিহ্ন আছে। তবে সেটি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত কিনা তা প্রাথমিক ভাবে বলা যাচ্ছে না। ময়নাতদন্তের সেটা জানা যাবে।
বগুড়া সদর থানার উপ-পরিদর্শক আনিছুর রহমান বলেন, সৌরভের মাথা, পাসহ শরীরের একাধিক স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। যা দেখে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এটা হত্যাকাণ্ড। আর বন্ধুদের পালিয়ে যাওয়াটাকেও গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আমরা মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছি। ময়নাতদন্ত শেষে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
তিনি আরও বলেন, নিহত সৌরভের বাবা আইনের আশ্রয় নিবেন বলে জানিয়েছেন। অভিযোগ পেলে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর