ফেনীতে বাংলাদেশ পরিবেশ সুরক্ষা আন্দোলন (বাপসা)র মানববন্ধনে হামলা করে ব্যানার ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা ইসমাইল ঘটনায় বিএনপির সহযোগী সংগঠন শ্রমিক দলের উপর দায় চাপানোর চেষ্টা করলে সংগঠনটির সদস্যরা এটির প্রতিবাদ জানান।
রোববার বিকালে ফেনীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সামনে এ ঘটনাটি ঘটেছে। মানববন্ধনে জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক এডঃ ফরিদ খান নয়ন, বাপসার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইসমাইল হোসেন ভুঁইয়া, বাপসা জেলা সভাপতি নাসির উদ্দিন লিটন, সাধারণ সম্পাদক মাঈনুল ইসলাম তারেক, সহ-সভাপতি আবদুল কাইয়ুম ও বদরুল মামুন, যুগ্ম সাধারণ এনামুল হক, সদস্য ওমর ফারুক, সাইফুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বাপসার ফেনী জেলা সভাপতি ও বিএনপি নেতা নাছির উদ্দিন লিটন জানান, ফেনী সদর উপজেলার মোটবী ইউনিয়নের নিয়ম বহির্ভূতভাবে লস্করহাট বাজার পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়। আমি ওই বাজারের ব্যবসায়ী হওয়ায় অনিয়মের প্রতিবাদ জানিয়ে নির্বাচনের মাধ্যমে হাট-বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত দাবী জানাই।
এ নিয়ে একটি পক্ষ আমার উপর ক্ষুব্ধ হয়ে আমার উপর হামলা চালায়। এ ঘটনায় মোটবীতে উত্তেজনা দেখা দেয়। এর জের ধরে বৃহস্পতিবার রাতে আমাকে ডেকে নিয়ে মারধর করা হয়। আমার শোরচিৎকারে আশপাশের ব্যবসায়ীরা এগিয়ে এসে আমাকে উদ্ধার করে। এঘটনায় আমি ১ নভেম্বর ফেনী মডেল থানায় লিখিত এজহার দাখিল করি। বিষয়টি আমি বাপসার কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে অবহিত করলে তারা মানববন্ধন করে এর প্রতিবাদ জানানোর সিদ্ধান্ত জানান। তারই আলোকে আমরা রোববার বিকালে ফেনীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় মানববন্ধন করছিলাম।
মানববন্ধন চলাকালে শ্রমিকদলের নামধারী কয়েকজন দুষ্কৃতকারী দুর্বৃত্তরা হামলা চালিয়ে বেশ কয়েক জনকে আহত করে এবং ব্যানার ছিনিয়ে নিয়ে মানববন্ধন পণ্ড করে দেয়। বাপসার কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা মোটবী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসমাঈল হোসেন জানান, বাপসা আয়োজিত মানববন্ধনে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের ফেনী জেলার সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট ফরিদ উদ্দিন খান নয়নের বক্তব্য চলাকালে হঠাৎ সদর উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি টিপুর নেতৃত্বে একদল যুবক এসে আমাদের মারধর করে ব্যানার ছিনিয়ে নেয়। এঘটনায় আমিসহ বাপসা ও বিএনপির অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে।
ঘটনাস্থলে পেশাগত দায়িত্বপালনরত সাংবাদিকরা জানান, বাপসার ও শ্রমিক দলের মারামারির সময় শ্রমিক দলের হামলাকারীরা সাংবাদিকদের উপর হামলার চেষ্টা চালায়। এসময় কয়েকজন সাংবাদিককে ধাক্কা দিয়ে মোবাইল ছিনতাইয়ের চেষ্টা চালানো হয়েছে।
মানববন্ধনে হামলা প্রসঙ্গে ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মর্ম সিংহ ত্রিপুরা বলেন, ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা হস্তক্ষেপ করে ঘটনা নিবৃত করে। ঘটনার বিষয়ে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ফেনী সদর উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি মোকছুদুল আলম টিপু বলেন, শহীদ মিনারে বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা ইসমাঈলের বক্তব্যে স্থানীয় বিএনপি নেতারা ক্ষুব্ধ হয়। বিষয়টি আমি জানতে পেরে মানববন্ধনে আসা বিএনপি নেতা ও আইনজীবী ফরিদ উদ্দিন নয়নকে সরিয়ে নিতে সেখানে গিয়েছিলাম। আমি অথবা শ্রমিক দলের কেউ হামলার সাথে জড়িত নয়। এ ঘটনায় শ্রমিক দলকে জড়ানোর দায়ে আমরা দলীয় সভা ডেকেছি।শীঘ্রই আমরা এ ঘটনার লিখিত প্রতিবাদ এবং সাংগঠনিক পদক্ষেপ নিব।"
ফেনী জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন আলাল বলেন, বাপসার জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন ২ বছর আগে বিএনপির মহাসচিবের নামে ফেনীর আদালতে মামলা করেছিলেন। এ ঘটনার জেরধরে তিনি বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত হন। বহিষ্কার হওয়ার পর কাউকে বিএনপির নেতা বা কর্মী বলা সঠিক বলে আমি মনে করিনা। তাছাড়া গ্রামের একটি বাজার নিয়ে বাপসার সভাপতির সাথে স্থানীয়দের বিরোধ রয়েছে। ওই বিরোধের জের ধরে তাদের উপর হামলার ঘটনাটি ঘটেছে বলে আমি শুনেছি।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর