সীমান্ত সুরক্ষা ও অনুপ্রবেশ ইস্যুতে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের একের পর এক কড়া মন্তব্যের পাল্টা বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন দেশটির ঝাড়খণ্ড রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন। এ বিষয়ে বিজেপি দ্বিচারিতা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। পাল্টা প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের গদিচ্যুত প্রধানমন্ত্রীকে কেন নিরাপদ আশ্রয় দিল দিল্লি?’
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে বলছে, রোববার ঝাড়খণ্ডের গাড়োয়া বিধানসভার কেন্দ্রের রাঁকায় নির্বাচনী প্রচারে গিয়েছিলেন হেমন্ত সোরেন। এর কিছুক্ষণ আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ রাঁচিতে প্রচার করতে গিয়ে অনুপ্রবেশ ইস্যুতে ঝাড়খণ্ড সরকারকে কার্যত তুলোধোনা করেন। তারই জবাব দিতে গিয়ে শেখ হাসিনার প্রসঙ্গ তুলেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী।
হেমন্ত সোরেন এ সময় বলেন, ‘মোদি তো শপথ নেওয়ার সময় সংবিধানের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছিলেন। তাতে ছিল যে, প্রত্যেক জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের সব সমস্যা সমান গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে। এখন আমি তাঁকে প্রশ্ন করতে চাই, বাংলাদেশের সঙ্গে কি আলাদা করে কোনো চুক্তি আছে? তা নাহলে সেখানকার অভ্যন্তরীণ সমস্যার জেরে এখানে আসার পর শেখ হাসিনার হেলিকপ্টারকে নামতে দেওয়া হলো কেন? কেনই বা দিল্লি তাঁকে নিরাপদ রাজনৈতিক আশ্রয়ের ঘেরাটোপে রেখেছে?’
বাংলাদেশের সঙ্গে গোপনে কোনো চুক্তি রয়েছে বলেও মোদির বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেন ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার (জেএমএম) এই নেতা। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ইস্যুতে বিজেপি নেতারা দ্বিচারিতা করেছেন। ভারত সংবিধান মতো চলবে। শেখ হাসিনার হেলিকপ্টার এখানে কেন নামতে দেওয়া হলো? কেন তাকে রিফিউজি হিসেবে আশ্রয় দেওয়া হলো? এসব প্রশ্ন রইলো নরেন্দ্র মোদির কাছে।
উল্লেখ্য, তীব্র আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকে তিনি সেখানেই রয়েছেন।
আগামী ১৩ তারিখ ঝাড়খণ্ডে বিধানসভা ভোট। তার আগে প্রচার তুঙ্গে। রোববার গাড়োয়া রাঁকায় প্রচারে গিয়ে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে কড়া প্রশ্নবাণ ছুঁড়লেন হেমন্ত সোরেন।
রাকায় হেমন্ত সোরেন যখন এই বক্তব্য রাখলেন তার কয়েক ঘণ্টা আগে রাঁচিতে নির্বাচনী প্রচারে গিয়েছিলেন অমিত শাহ। সেখান থেকে ঝাড়খণ্ডের অ-বিজেপি সরকারকে উৎখাতের ডাক দিয়ে অনুপ্রবেশ ইস্যুতে সুর চড়ান তিনি।
অমিত শাহ বলেন, ঝাড়খণ্ড অনুপ্রবেশকারীতে ভরে যাচ্ছে। স্থানীয় অধিবাসীর সংখ্যা কমছে। এখানে অনুপ্রবেশকারীরা আসছে আর এখানকার মেয়েদের প্রলোভন দেখিয়ে বিয়ে করে তাদের জমিজমা দখল করে নিচ্ছে। নরেন্দ্র মোদির আমলে ঝাড়খণ্ডের উন্নতি হয়েছে। পাঁচ বছর আগে হেমন্ত সোরেন রাজ্যের দায়িত্ব নিয়ে মোদি সরকারের অনেক প্রকল্প বন্ধ করে দিয়েছেন।’
রার/সা.এ
সর্বশেষ খবর
সারাবিশ্ব এর সর্বশেষ খবর