জয়পুরহাটে রোপা আমন ধান ঘরে তোলার সময় হলেও হঠাৎ করেই কিছু জমিতে বিএলবি নামক এক প্রকার ছত্রাকের আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন জেলার কৃষকরা। কৃষি বিভাগ থেকে বলা হয়েছে এটি ব্যাকটেরিয়াল লিভ ব্রাইট (বিএলবি) রোগ নামে পরিচিত। আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে এ রোগ দেখা যায়।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, খাদ্য উৎপাদনে উদ্বৃত্ত জেলা জয়পুরহাটে চলতি ২০২৪-২৫ খরিপ-১, মৌসুমে ৬৯ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে চাষ হয়েছে ৬৯ হাজার ৮৭০ হেক্টর জমিতে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২০ হেক্টর বেশি।
এতে গড় ফলন ৩ দশমিক ২৮ মেট্রিক টন হিসেবে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে ২ লাখ ২৯ হাজার ১৭০ মেট্রিক টন চাল। ১১ আগস্ট পর্যন্ত আমন ধানের চারা রোপণ কার্যক্রম শেষ হয়েছে । এবার আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে বৃষ্টিপাত সন্তোষ জনক পর্যায়ে ছিল। সে কারণে রোপা আমন চাষে এবার কোন সমস্যা হয়নি কৃষকদের।
উপজেলা ভিত্তিক রোপা আমন চাষের মধ্যে রয়েছে জয়পুরহাট সদর উপজেলায় ১৬ হাজার ৯ শ ৫০ হেক্টর জমি, পাঁচবিবি উপজেলায় অর্জন ১৯ হাজার ৫ শ ৪০ হেক্টর, আক্কেলপুর উপজেলায় অর্জিত ১০ হাজার ৬ শ ৯০ হেক্টর, ক্ষেতলাল উপজেলায় অর্জিত ১০ হাজার ৭ শ ৪০ হেক্টর ও কালাই উপজেলায় অর্জিত হয়েছে শতভাগ ১১ হাজার ৯ শ ৫০ হেক্টর জমিতে। বর্তমানে আগাম জাতের কিছু আমন ধান কাটা শুরু হলেও এ মাসের মাঝামাঝি থেকে পুরোদমে ধান কাটামাড়াই শুরু হবে বলে জানান, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ রাহেলা পারভীন।
এদিকে, ধান কাটা মাড়াই শুরু হবে এমন সময়ে হঠাৎ করেই লেট ভ্যারাইটি কিছু ধান বিশেষ করে স্বর্ণা, ধানিগোল্ড , বিআর ১৬ ও রনজিৎ জাতের ধানে পাতা মরা ও ধান শুকিয়ে যাওয়া রোগ দেখা দিয়েছে। ঘরে তোলার পূর্ব মুহূর্তে রোপা আমন ধানে পোকার আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। কৃষি বিভাগ এটিকে বলছেন ব্যাকটেরিয়াল লীভ ব্রাইট (বিএলবি) রোগ। আবহাওয়া তারতম্যের কারণে এ রোগ হয়ে থাকে বলে জানান, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ রাহেলা পারভীন। জেলা শহরের পাঁচুরচক মাঠের কৃষক ধীরেন্দ্রনাথ মন্ডল, সামছুল আলম বলেন গোটা জমিতেই পাতা মরা রোগ দেখা দিয়েছে ওষুধ দিয়েও কাজ হচ্ছে না।
ক্ষেতলাল উপজেলার কানাই পুকুর দেওইল গ্রামের কৃষক মোসলেম উদ্দিন বলেন, জমির ধানে পাক ধরেছে কিন্তু ধানগাছ পচে যাওয়ার কারণে ধান শুকিয়ে যাচ্ছে। পাতা মরা রোগে আক্রান্ত জমিতে ফলন বিপর্যয় হবে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন কৃষকরা। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ থেকে প্রতি বিঘা জমির জন্য ৬০ গ্রাম পটাশের সঙ্গে ৬০ গ্রাম সালফার মিক্সড করে ১০ লিটার পানিতে গুলিয়ে স্প্রে করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কি পরিমাণ জমিতে বিএলবি আক্রান্ত হয়েছে সেই পরিমাণ নেই কৃষি বিভাগের নিকট।
উল্লেখ্য, জেলায় গত বছর রোপা আমন মৌসুমে ৬৯ হাজার ৬৮৫ হেক্টর জমিতে রোপা আমনের চাষ হয়েছিল। এতে চাল উৎপাদন হয়েছিল ২ লাখ ২৩ হাজার ১৩৪ মেট্রিক টন।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর