বাঙ্গাালির আতিথেয়তার অন্যতম অনুষঙ্গ পান। বিভিন্ন উৎসব, অনুষ্ঠান,পালা-পার্বন,বিয়েসহ যে কোন আয়োজনে সব শেষে যেন পান থাকতেই হবে। সেই ঘুমপাড়ানি মাসিপিসির ছড়ার মতো বলতে হয়, বাটাভরে পান দেবো গালভরে খেয়ো। সেই অপরিহার্য রাজশাহীর মিষ্টি পান চাষ করে টাঙ্গাইলের নাগরপুরে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন কৃষক জহুরুল ইসলাম (৩৮)। পান চাষে অভিশাপ নামক দারিদ্রকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তার সংসারে সচ্ছলতা ফিরেছে। পান চাষি জহুরুল এখন একটি উদাহরণ। সে উপজেলার মামুদ নগর ইউনিয়নের ভাতশালা গ্রামের মৃত. সরব আলীর ছেলে।
অন্যের দোকানে টেইলারিং(দর্জি) এর দোকানে কাজ করে অভাব অনটনের মাঝে সংসার চলে তার। রাজশাহীর এক বন্ধুর পরামর্শে রাজশাহী থেকে সে প্রথম ৫ হাজার মিষ্টি জাতের পানের চারা এনে তার বাড়ীর পাশে ২৫ শতাংশ জমিতে পরীক্ষামূলক ভাবে পান রোপণ করেন। পান চাষ করে প্রথম বছরেই সে সুখের মুখ দেখেন।
পান চাষি মো: জহুরুল ইসলাম জানান টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলায় আমিই প্রথম রাজশাহী জেলার মিষ্টি পানের চাষ শুরু করি। রাজশাহী থেকে পানের ডগা এনে আমি ২৫ শতাংশ জমিতে রোপণ করি। পানের বরজ তৈরি করতে আমার মোট ১ লক্ষ ৭০হাজার টাকা খরচ হয়। কোন সমস্যা হলে রাজশাহীর চাষীদের পরামর্শ নেই। আমার কাছে কেউ যদি পান চাষের বিষয়ে সহযোগিতা চায় তাহলে আমি তাকে সহযোগিতা করবো। এ বছর ঝড়ে আমার পানের বরজে প্রায় ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে। আমার মতো দরিদ্র কৃষকের জন্য এটা অপুরনিয় ক্ষতি। সরকার যদি আমাকে সহযোগিতা করে তা হলে আমি আমার ব্যবসার পরিধি বৃদ্ধি করতে পারি। আমি আমার এই বাগানের পান স্থানীয় হাট-বাজারে পাইকারি বিক্রি করি। মাঝে মাঝে রাজশাহীতেও পান পাঠাই বিক্রির জন্য।
এলাকাবাসী মো. হামিদ খান জানান, জহুরুল অনেক কষ্ট করে রাজশাহী জেলার মিষ্টি পানের একটি বরজ তৈরী করেছে। আমরা জহুরুলের এখান থেকে পান কিনে খাই। পানের স্বাদ রাজশাহীর পানের মতই। এলাকায় যদি জহুরুলের মত অরো উদ্যোক্তা তৈরী হয় তা হলে আমাদের চাহিদা কিছুটা পূরণ হবে।
নাগরপুর উপজেলা কৃষিকর্মকর্তা মো. ইমরান হোসাইন জানান, নাগরপুরে পান চাষে সফল মামুদ নগরের জহুরুল ইসলাম। তিনি তার ২৫ শতাংশ জমিতে পান চাষ করেন। পান অর্থকরী ফসল। আমরা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক ভাবে তার পানের বাগান পরিদর্শন করি। সেই সাথে যে ভাবে প্রয়োজন সেভাবে কারিগরি পরামর্শ দিয়ে থাকি। একই সাথে নাগরপুর উপজেলার পান চাষে উদ্যোক্তা তৈরির জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর