জন্মের ছয় বছর বয়সে জন্ডিস রোগে আক্রান্ত হয় চমক দে। এরপর প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হন। পরে আট বছর বয়সে আবারও আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হন। দশ বছর বয়সে পুনরায় আক্রান্ত হয়।
এক পর্যায়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বেশ কয়েকটি বেসরকারি মেডিক্যালের সুনামধন্য চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করেন এবং সর্বশেষ জানতে পারেন যে, জন্ডিস থেকেই সে বারবার অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। তার অবস্থার অবনতি হলে গেল বছরের ১২ জলাই চমেক হাসপাতালে ভর্তি হয়ে প্রায় এক মাস চিকিৎসা গ্রহণ করেন। তাতেও সুস্থতা আসেনি। পরবর্তীতে তার অবস্থার অবনতি হলে গেল বছরের ৮ ডিসেম্বর উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ভারতের এআইজি হাসপাতালে নিয়ে যান। বর্তমানে সন্তানের অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ নিয়ে হতাশায় দিন পার করছেন খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলা সদর মুসলিমপাড়া এলাকার বাসিন্দা অজিত কুমার দে ও মা সীমা দে।
চমকের বাবা অজিত কুমার বলেন, ছয় বছর বয়স থেকে সে (চমক দে) একাধিকবার জ¦রসহ অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হন। পরে ডাক্তার জানায় তার জন্ডিস হয়েছে। তখন চিকিৎসা গ্রহণ করে সে সুস্থ হয়ে যায়। পরবর্র্তিতে আট-দশ বছর বয়সেও একাধিকবার এমন লক্ষণ দেখা দিলে চমেক হাসপাতালসহ সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের সুনামধন্য চিকিৎসকের চিকিৎসা গ্রহণ করেন। কিন্তু সুস্থ হয়ে উঠেনি। সবশেষ গেলে বছরের ৮ ডিসেম্বর উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ভারতে নিয়ে যাওয়া হয়। ভারতের এআইজি হাসপাতালের চিকিৎসক জানান, তার লিভার জন্ডিস হয়ে লিভার অকেজো হয়ে গিয়েছে। তাই তার দ্রæত অপারেশন প্রয়োজন। আর এ অপারেশন করাতে প্রায় ২৫-৩০ লাখ টাকা খরচ হতে পারে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। কিন্তু তাৎক্ষণিক এতো টাকা জোগাড় করতে না পেরে হতাশা নিয়ে দেশে ফিরে আসেন।
তিনি আরো জানান, জন্মের ছয় বছর পর থেকে প্রায় ১৮ বছর অসুুস্থায় দিন কাটিয়েছে চকম। এত অসুস্থতার মাঝেও সে পড়ালেখা ছাড়েনি। বর্তমানে ফটিকছড়ি কলেজে বিবিএস পড়ছে। তার পেছনে বহু টাকা খরচ করেও পুরোপুরি সুস্থ করতে পারিনি। বর্তমানে তার অবস্থা খুবই খারাপ। দীর্ঘ চিকিৎসা খরচ বহন করতে করতে এখন প্রায় নিঃস্ব হয়ে গিয়েছি। এমতাবস্থায় চমকের সুস্থ স্বাভাবিক চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
চমকের মা সীমা দে জানান, দাম্পত্য জীবনের প্রথম সন্তান চকম দে। দুই ছেলে, এক মেয়ে আর বৃদ্ধ শাশুড়িকে নিয়ে ছয় সদস্যের সংসার। ছোটবেলা থেকেই অনেক কষ্ট করে তিন সন্তানকেই পড়ালেখা করিয়েছেন। তবে কোনোদিন ভাবিনি এমন একটি রোগে আক্রান্ত হবে আমার সন্তান চমক। তার লিভার অকেজো হয়ে গিয়েছে। দ্রæত তাকে বাঁচাতে প্রায় ২৫-৩০ লাখ টাকার দরকার। এতো টাকা কিভাবে জোগাড় হবে সে নিয়ে সারাক্ষণ কান্নায় ভেঙ্গে পড়ছেন তার মা সীমা দে। এসময় সমাজের বিত্তবানদের কাছে সহযোগিতা চেয়ে সন্তানের সুস্থতা কামনায় দোয়া চেয়েছেন তিনি।
উড় হয়ে পড়াশুনা শেষে একজন সফল উদ্যোক্তা হওয়া স্বপ্ন আজ মৃত প্রায়। পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ফিরতে না পারলে হয়ত অর্থের অভাবে তিলে তিলে শেষ হয়ে যেতে হবে স্বপ্ন দেখা উদ্যোক্তাকে। তবে সকলের সহযোগিতা পেলে আবার সুস্থ হয়ে চমক ফিরে আসবেন এমনটাই প্রত্যাশা করছেন অনেকেই। সহযোগিতা পাঠাতে যোগাযোগ করতে পারেন (চমক- ০১৯৫৯০২১১০৭) এই নাম্বারে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর