• ঢাকা
  • ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ০৭ নভেম্বর, ২০২৪
  • শেষ আপডেট ৫৩ সেকেন্ড পূর্বে
মো. আশিকুজ্জামান
বাকৃবি থেকে
প্রকাশিত : ০৭ নভেম্বর, ২০২৪, ১০:২৪ দুপুর
bd24live style=

কৃষি গুচ্ছে প্রথম হয়েছেন ময়মনসিংহের জাইমুন

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) চত্বরে অবস্থিত কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (কে বি) কলেজের শিক্ষার্থী ফুলপুরের জাইমুন ইসলাম ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের কৃষি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় ৫১ হাজার ৮শ ১১ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে দেশসেরা প্রথম স্থান অর্জন করেছে।

জাইমুনের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুর উপজেলায়। জাইমুনের এই অর্জনের খুশি তার পরিবারের সদস্য ও শুভাকাঙ্খীরা।

নিজের পারিবারিক জীবন সম্পর্কে জাইমুন বলেন, মা আনজু আরা খাতুন ও বোনকে নিয়েই আমার পরিবার। দুই ভাই বোনের মধ্যে আমিই ছোট। ২০১৮ সালে আমার বাবা মোবারক হোসেন মারা যান। বাবা মারা যাবার পরে পরিবার ও পড়াশোনার সমর্থন দিয়েছেন আমার চাচাতো দাদা জনাব আবু তালেব সাহেব। 

শিক্ষা জীবন সম্পর্কে বলেন, ফুলপুরের পয়ারীর গোকুল চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ে মাধ্যমিক সম্পন্ন করে পরবর্তীতে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করতে বাকৃবি চত্বরের কে বি কলেজে ভর্তি হই।

উচ্চ মাধ্যমিকের পর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি যুদ্ধের যাত্রা সম্পর্কে বলেন, আমার ইচ্ছে ছিল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ পড়ার। কিন্তু উচ্চ মাধ্যমিকে ফলাফল খারাপ হওয়ার পর আমি ভাবলাম হয়তো ইঞ্জিনিয়ারিং পরীক্ষাগুলো আমি দিতে পারবো না। তাই পরবর্তীতে আর ইঞ্জিনিয়ারিং প্রস্তুতি নেয়া হয় নাই। কিন্তু আমি সৃষ্টিকর্তার প্রতি শুকরিয়া আদায় করি কারণ আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যই করেন। আমি যদি সেই সময়টাই ভালো করে প্রিপারেশন নিতাম  হয়তো ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়তে পারতাম কিন্তু আজকের পুরো দেশে প্রথম স্থান অর্জন করার যে অর্জন সেটা হয়তো আমি কখনোই পেতাম না। আমি আমার বর্তমান অবস্থান নিয়ে অত্যন্ত খুশি। 

কৃষি গুচ্ছ ছাড়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এবং জিএসটি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা তে চান্স পেয়েছিলেন কিন্তু তার ভাষ্যমতে ফলাফল যতটা আশানুরূপ ছিল না। সত্যি বলতেই তেমন একটা খুশি হতে পারেন নি। তবে জাইমুনের কৃষি গুচ্ছের প্রস্তুতি খুবই ভালো ছিল।

কৃষি গুচ্ছের প্রস্তুতি সম্পর্কে তিনি বলেন, আমার উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফল আহামরি যে ভালো হয়েছে তেমন নয়। জিপিএ-৫ পেলেও ইংরেজিতে পেয়েছিলাম এ মাইনাস। আমাকে নিয়ে সকলের প্রত্যাশা ছিল অনেক বেশি তাই এই ফলাফলে কেউ খুশি হতে পারে নাই। সত্যি বলতে আমার জীবনের বিশেষ কিছু মানুষ আমার ফলাফলে কোনভাবে খুশি হতে পারেননি। তার ওপর রয়েছে আশেপাশের মানুষের নানান কথা। সবকিছু মিলিয়ে আমার মাঝে একটা বিষণ্নতা কাজ করতে শুরু করে। আর ফলাফলের পর থেকে প্রায় অনেকদিন আমার পড়ালেখাটা তেমনভাবে হয় নাই। সেজন্য আমি কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাল পজিশনে চান্স পাই নি।

কিন্তু শেষ সময়ে এসে আমার মাঝে একটা অপরাধবোধ কাজ করতে শুরু করে। আমার জন্য আমার দাদা এত কিছু করতেছেন আমাকে এত সাপোর্ট দিতেছেন কিন্তু আমি ওনাকে খুশি করতে পারলাম না। তখন থেকেই আমি খুব ভালো ভাবে কৃষি গুচ্ছের জন্য নেওয়া শুরু করি। আমি এটা জানতাম যদি আমি পরীক্ষা দিতে পারি পরীক্ষার আগে পর্যন্ত যদি কোন দূর্ঘটনা না হয় তবে ইনশাল্লাহ আমার ফলাফল ভালো হবে। কৃষি গুচ্ছ'র পরীক্ষা খুবই ভালো হয়। আমি ৯৯ টা প্রশ্নের উত্তর দিয়ে আসি এর মাঝে ৯৭ টা প্রশ্নের উত্তর সঠিক হয়। নেগেটিভ মার্কিং সহ আমি মোট  ৯৬.৫০ পেয়ে প্রথম স্থান অর্জন করি।

নিজের স্বপ্ন সম্পর্কে জাইমুন বলেন, ছোট বেলায় বড় একজন ব্যবসায়ী হতে চাইলেও বর্তমানে আমার ইচ্ছা বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কৃষি নিয়ে পড়ার। আমার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কৃষিতে উচ্চতর ডিগ্রী নিয়ে বাংলাদেশের কৃষি গবেষণায় অবদান রাখা। কৃষি গুচ্ছের ফলাফলের বিষয়ে আমি বলব এটা আমার জীবনের একটা টার্নিং পয়েন্ট। চেষ্টা করব যেন আগামীতে এই ফলাফলের মর্যাদা ধরে রাখতে পারি। 

জাইমুন বলেন, আমার সবচেয়ে বড় পাওয়া হল আমাকে নিয়ে আমার কাছের মানুষেরা এখন গর্ব করে কথা বলতে পারছে। পরিবারের সকলের খুশি হয়তো প্রকাশ করার মতো না। আমার এই অর্জন আমার মা, দাদা ও বোনকে উৎসর্গ করতে চাই। তবে সত্যি বলতে দাদার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার মত ভাষা আমার জানা নেই। নিঃস্বার্থভাবে একজন মানুষ এত কিছু করতে পারেন সেটা বাস্তবিক পক্ষে আমি উনার সংস্পর্শে থেকেই দেখেছি। বলা যায় আমার এই কৃতিত্বের পেছনে আসল নায়ক হচ্ছেন আমার দাদা। উনার  সমর্থন, অনুপ্রেরণা আজকে আমাকে এখানে দাঁড় করিয়েছে। আমি সত্যি বলতে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি কারণ শুধু আমার দাদা নয় আমার চারপাশের সবাই আমাকে অনেক ভাবে সমর্থন দিয়েছেন এবং তাদের প্রতি আমি চির কৃতজ্ঞ থাকবো। 

নিজের কলেজ ও শিক্ষকদের সম্পর্কে জাইমুন বলেন, আমাকে যারা গড়ে তুলেছেন আমার সকল শিক্ষকদের প্রতি আমি চির কৃতজ্ঞ। আমার স্কুলের শিক্ষকবৃন্দ কলেজের শিক্ষকবৃন্দ সকলেই অনেক আন্তরিক ছিলেন। বিশেষ করে কলেজ জীবনে আমি অনেক কিছু পেয়েছি। কলেজের শিক্ষকরা ছিলেন অত্যন্ত আন্তরিক। আর কলেজের ক্ষেত্রে আমি বলব আমাদের কলেজ অত্যন্ত সুগঠিত। কলেজের ক্ষেত্রে একটা কথা না বললেই নয় আমাদের কলেজে শ্রেণী কার্যক্রম থেকে শুরু করে সবকিছু হয়ে থাকে অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে । আর টিচারদের কাউন্সিলিং এর ব্যাপারটা বলতে গেলে সত্যিই অসাধারণ এবং অত্যন্ত উপকারী। এ ব্যাপারে আমার কলেজ ও কনস্ট্যান্টের শিক্ষকেরা আমার জীবনে অনেক বেশি আবদান রেখেছেন। আমি সকলের প্রতি সত্যিই অনেক কৃতজ্ঞ। 

জিএসটিতে আশানুরূপ ফলাফল না করলেও কৃষি গুচ্ছে একদম প্রথম হয়ে গেলেন। এই সাফল্যের কারণ হিসেবে তিনি বলেন, সকলেরই ভালো করার সামর্থ্য রয়েছে শুধু প্রয়োজন সঠিক নির্দেশনার। অধ্যবসায় আর সঠিক নির্দেশনা পেলে মানুষ অসাধ্যকেও সাধ্য করতে পারে। জিএসটি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় যখন আমি যখন আশানুরূপ ফলাফল করতে পারি নি তখনই পরিচয় হয় শিক্ষক ও বন্ধুপ্রতিম তুষার ভাইয়ের সাথে। তার দিক নির্দেশনা মোতাবেক প্রস্তুতি নেয়ায় কৃষিগুচ্ছে আমার এ অর্জন অনেকাংশেই সহজ হয়েছে। অন্যান্য সকল ক্ষেত্রে আশানুরূপ ফলাফল না করার পরেও কৃষি গুচ্ছে ভালো করেছি তুষার ভাইয়ের সঠিক দিক নির্দেশনা পাবার কারণে। আমি নির্দ্বিধায় বলবো আমার ভালো অর্জনের পেছনে তুষার ভাইয়ের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।  

অনুজদের উদ্দেশ্যে জাইমুন বলেন, আমার জুনিয়রদের উদ্দেশ্যে আমার একটাই কথা বলার থাকবে তুমি যে অবস্থাতেই আছো যেই পজিশনে আছ কখনো হাল ছেড়ে দিও না। পরিশ্রম করতে থাকো সফলতা অবশ্যই ধরা দিবে। আর সফলতার কোন শর্টকাট নাই। যদি তোমার কাছে সময় থাকে তাহলে শর্টকাট খুঁজতেও যেও না। তবে লক্ষ্য নির্ধারণ করো আর পরিশ্রম করে যাও। কখনো হতাশ হওয়া যাবে না হতাশা কখনোই তোমাকে জীবনে ভালো কিছু দেবেনা। দশটা দিন তুমি হতাশ হয়ে নষ্ট না করে ন্যূনতম চেষ্টা করলেও অনেকটা এগিয়ে যাবে। আর সবার মাঝে ভালো কিছু করার সম্ভাবনা আছে সেটা সব সময় বিশ্বাস করবে।

সালাউদ্দিন/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com