ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাজিবুল হাসানের বিরুদ্ধে উদ্বুদ্ধকরণ প্রদর্শনী প্লটে কৃষকের বরাদ্দের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। খাতা-কলমে কৃষকের বরাদ্দ পরিশোধ দেখানো হলেও বাস্তবে তা পাননি অনেকেই। এছাড়াও প্রদর্শনী প্লটের জন্য দেওয়া হয়েছে নিম্নমানের বীজ ও চারা।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে যশোর অঞ্চলে টেকসই কৃষি সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় ৫ টি ক্যাটাগরিতে মোট বরাদ্দ ৬৩ লাখ ১০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। মসলা, সবজি ও ফলের প্রদর্শনী প্লটের আওতায় ২২৯ জন কৃষক এ বরাদ্দ পায়।
কৃষকদের অভিযোগ, বরাদ্দে যে পরিমাণ সার-বীজ দেওয়ার কথা তা ঠিকমতো দেননি কৃষি কর্মকর্তা রাজিবুল হাসান। এছাড়াও যে বীজ দেওয়া হয়েছে তাও খুবই নিম্নমানের। সব থেকে বেশি দুর্নীতি করা হয়েছে প্রদর্শনী প্লটের নগদ টাকা বিতরণের ক্ষেত্রে। প্রতিটি প্রদর্শনীতে বালাই ব্যবস্থাপনা, পরিবহনসহ কয়েকটি খাতে থোক বরাদ্দের নগদ টাকা একটিও দেওয়া হয়নি কৃষকদের। উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে বরাদ্দ পাওয়া কৃষকদের সাথে কথা বলে এমনটিই জানা গেছে।
উপজেলার শিশারকুন্ডু গ্রামের কৃষক আজিম উদ্দিন জানান, তার ২০ শতক জমিতে আদা কেটে জাতের প্রদর্শনী দেওয়া হয়। তার জন্য বরাদ্দ রয়েছে ১৪ হাজার টাকা। কৃষক আজিম উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, আমার কিছু সার ও বীজ দিয়েছে। আর নগদ ৫ হাজার টাকার স্থলে আমাকে ৪’শ টাকা দেওয়া হয়েছে। আদা কেটে জাতের হলুদের বীজ দেওয়ার কথা থাকলেও দেওয়া হয়েছে অন্যকোনো জাত। বাড়তি খরচ করেও ফলন ভালো না হওয়ায় লোকসানের আশঙ্কা করছেন তিনি।
একই উপজেলার কৃষক আলতাব বিশ্বাস বলেন, কৃষি কর্মকর্তা রাজিবুল হাসান প্রত্যেক কৃষকের নগদ বরাদ্দের টাকা দেন নি। কারো ২০০ আবার কারো হয়ত ৫০০ টাকা দিয়েছে। কিন্তু তাদের জন্য কমপক্ষে ৫ হাজার টাকা বরাদ্দ রয়েছে। আমরা তো জানি না আমাদের জন্য কোন খাতে কত বরাদ্দ তাই কিছু বলতে পারিনি।
কৃষক আজিজুর রহমান বলেন, শত শত কৃষকের নগদ থোক বরাদ্দের লাখ লাখ টাকা কৃষি কর্মকর্তা আত্মসাৎ করেছেন। এছাড়াও যে বীজ দিয়েছে তা খুবই নিম্নমানের। আমরা এই কৃষি কর্মকর্তা বিরুদ্ধে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালকের বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আমরা চাই এর বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
অভিযোগের বিষয় অস্বীকার করে কৃষি কর্মকর্তা রাজিবুল হাসান বলেন, আমরা সকল বরাদ্দ কৃষকের সঠিকভাবেই বণ্টন করেছি। কিছু কৃষকের অভিযোগ থাকতে পারে। তারা ভুল বুঝে অভিযোগ করছেন। আমাদের কাছে এলে বিষয়টি খুলে বললে তাদের হয়ত অভিযোগ থাকবে না।
এ ব্যাপারে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ষষ্টী চন্দ্র রায় বলেন, কৃষকদের অভিযোগের বিষয়ে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করা হবে।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর