শেরপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতালে ঔষধ ক্রয়ের ঠিকাদার নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগের ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন স ম য় টি ভি র শেরপুরের স্টাফ রিপোর্টার শহিদুল ইসলাম হীরা ও চিত্র সাংবাদিক বাবু চক্রবর্তী। সোমবার (১১ নভেম্বর) দুপুর দুইটার দিকে শেরপুর সদর হাসপাতালে এই ঘটনা ঘটে।
সূত্রে জানা গেছে, শেরপুর সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক সেলিম মিয়া ঠিকাদার নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে খবর প্রকাশ না করার জন্য হুমকি ধামকি দেন। এসময় ক্যামেরা পার্সন ভিডিও করতে গেলে তার ক্যামেরা ছিনিয়ে নেন সেলিম মিয়া। এরপর তিনি সাংবাদিক হীরাকে শার্টের কলার ও গলা চেপে ধরেন। পরবর্তীতে হাসপাতালের কর্মচারীদের ডেকে এনে তাকে দরজা বন্ধ করে ঘণ্টা খানেক অবরুদ্ধ করে রাখেন। বিষয়টি সর্ম্পকে অন্যান্য সাংবাদিকরা খবর পেলে তাকে উদ্ধার করতে যাওয়ার খবরে সে কৌশলে সটকে করেন ওই তত্ত্বাবধায়ক সেলিম মিয়া।
আরো জানা গেছে, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে ঔষধ ক্রয়ের ঠিকাদার নিয়োগে কম দরদাতাকে নির্ধারণ না করে বেশি দর প্রদানকারীদের দেওয়া হয়েছে। সোমবার এমন অভিযোগে তথ্য সংগ্রহ করতে যান স ম য় টে লিভি শনে র সাংবাদিকসহ বেশ কয়েকজন সাংবাদিক। এসময় তথ্য চাইতে গেলে সাংবাদিকদের খবরটি না করার জন্য চাপ দেন তিনি। খবর করলে দেখা নেওয়ার হুমকিও দেন। পরবর্তীতে শুরু হয় কথাকাটাকাটি। এক পর্যায়ে তত্ত্বাবধায়ক তার চেয়ার থেকে উঠে বাজে ভাষায় গালিগালাজ করেন। এই এসময় ঘটনা সম্পর্কে প্রমাণ রাখতে ক্যামেরা পার্সন বাবু চক্রবর্তী ক্যামেরায় ভিডিও ধারণ করতে গেলে তার কাছ থেকে ক্যামেরা ছিনিয়ে নেন। পরবর্তীতে শার্টের কলার ও গলা চেপে ধরে তাকে ঘণ্টা খানেক আটকে রাখেন।
সাংবাদিক শহিদুল ইসলাম হীরা বলেন, আমার সহকর্মীদের সাথে নিয়ে একটি খবরের তথ্য সংগ্রহের জন্য হাসপাতালে যাই। যাওয়ার আগে অভিযোগের ব্যাপারে সিভিল সার্জনকে অভিহিত করা হয়। এছাড়াও তথ্য সংগ্রহের জন্য হাসপাতালের প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা আহমদ্দুন নবী সজলের মোবাইলের মাধ্যমে কথা বলে অনুমতি নেই। বাইরের কাজ শেষ করে তত্ত্বাবধায়কের কক্ষে প্রবেশের পর তথ্য চাইতেই তিনি খবর করলে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। পরবর্তীতে তিনি সকল কর্মকর্তা কর্মচারীদের ডেকে দরজা বন্ধ করার নির্দেশ দেন। এমনকি তার কাছ থেকে ক্যামেরা ছিনিয়ে নেন। পরবর্তীতে আমার শার্টের কলার ও গলা চেপে ধরে।
অভিযুক্ত তত্ত্বাবধায়ক ডঃ মোঃ সেলিম মিয়া বলেন, অনুমতি না নিয়ে হাসপাতালে ভিডিও ধারণ করলে তার সাথে কথা কাটাকাটি হয়েছে। তবে হামলার কোন ঘটনা ঘটেনি।
শেরপুরের সিভিল সার্জন ডা. জসিম উদ্দিন বলেন, হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও আমি একই পদমর্যাদার কর্মকর্তা। তাই তাকে নিয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে পারবো না। তবে ফুটেজে হামলার স্পষ্ট দৃশ্য রয়েছে। আমি বিষয়টি ময়মনসিংহ বিভাগের উপ-পরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তারা এ ব্যাপারে বিস্তারিত বলতে পারবে।
এ বিষয়ে ময়মনসিংহ স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. শাহ আলি আকবর আশরাফীর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি একটি মিটিং আছেন বলে ফোন কেটে দেন।
এদিকে, এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে তত্ত্বাবধায়ক ডঃ সেলিম মিয়ার অপসারণ চেয়ে বিবৃতি দিয়েছেন শেরপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি কাকন রেজা, কার্যকরী সভাপতি রফিক মজিদ ও সাধারণ সম্পাদক মাসুদ হাসান বাদল। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দেন প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর