
এক ডোজ এইচপিভি টিকা নিন জরায়ুমুখ ক্যান্সার রুখে দিন এ প্রতিপাদ্য বিষয়কে সামনে রেখে কিশোরগঞ্জে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পর্যায়ে হিউম্যান প্যাপিলোমাভা (এইচপিভি) টিকাদান কর্মসূচির কার্যক্রম শুরু হয়েছে। জরায়ুমুখের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে নারীদের মৃত্যুহার শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে স্কুলপর্যায়ে শুরু হয়েছে এইচপিভি টিকাদান কার্যক্রম। সারাদেশের ন্যায় কিশোরগঞ্জ জেলাতেও এইচপিভি টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ইউনিসেফ এর সহযোগিতায় এবং সিভিল সার্জন অফিসের আয়োজনে মঙ্গলবার (১২) নভেম্বর দুপুরে কিশোরগঞ্জ সরকারী আদর্শ শিশু বিদ্যালয়ে টিকা কার্যক্রম কর্মসূচির কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।
কিশোরগঞ্জ জেলার সিভিল সার্জন ডা. সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে টিকা কার্যক্রম কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন কিশোরগঞ্জ জেলার জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান।
এসময় বক্তারা বলেন, নারীদের সুরক্ষা দিতে স্কুল পর্যায়ে এইচপিভি টিকাদান কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।
জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রাণঘাতী এক রোগ। প্রতি বছর দেশে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী এই রোগে মারা যাচ্ছেন। টিকার মাধ্যমে এই রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। এইচপিভি টিকার কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। এর সফল ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালও সম্পন্ন হয়েছে। আগামীতে দেশের সব নারীদের এই টিকার আওতায় আনা হবে। যার মধ্য দিয়ে জরায়ুমুখ ক্যান্সারে মৃত্যুও কমে আসবে।
ধাপে ধাপে সবাইকে এই টিকার আওতায় আনা হবে। এ-সময় জরায়ুমুখ ক্যান্সারের বিষয়ে সব বয়সী নারীদের সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান বক্তারা।
এই ভ্যাকসিন কার্যক্রমের আওতায় ৫ম থেকে ৯ম শ্রেণি বা সমমান অধ্যয়নরত এবং ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বহির্ভূত কিশোরীদের বিনামূল্যে এইচপিভি টিকা দেওয়া হবে।
তারা আরো জানান, কিশোরগঞ্জে গত বছর ১ লাখ ৬৬ হাজার জন কিশোরীকে প্রথমবারের মতো বিনামূল্যে এইচপিভি টিকা দেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে ৯২ শতাংশ দেওয়া হয়েছে। বাকী ৮ শতাংশ কিশোরীকে এবার টিকা দেওয়া হবে। কিশোরগঞ্জ ১৩ উপজেলায় ১৩২৮টি প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই টিকা প্রদান করা হবে। বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ইউনিসেফ ও দ্য ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্সের (গ্যাভি) সহায়তায় এ টিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। এইচপিভি টিকাদানের মাধ্যমে জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধ সম্ভব।
স্কুল প্রতিষ্ঠানে ১০ নভেম্বর থেকে ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত এইচপিভি টিকা দেয়া হবে। এছাড়াও ১৪ নভেম্বর থেকে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত (১ মাসব্যাপী) স্থায়ী ও অস্থায়ী টিকাদান ক্যাম্পে এই টিকা দেওয়া হবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মুজিব আলম, ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মোঃ দিদারুল ইসলাম, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোঃ নাজমুল করিম, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মমতাজ বেগম, সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. চৌধুরী শাহরিয়ার, সরকারী আদর্শ শিশু বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হোসনে আরা ডলি প্রমুখ।
এইচপিভি টিকাদানে শিক্ষার্থীদের সচেতনতা ও রেজিস্ট্রেশনে সার্বিক সহযোগিতা করছেন সামাজিক সংগঠন মানবতার সেবায় উৎসর্গ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার সদস্যরা।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর