বরগুনা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাড. ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর গ্রেফতারের খবরে তার নির্বাচনী এলাকা বরগুনা- আমতলীতে আনন্দের বন্যা বইছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার দলের নেতাকর্মীরাও আনন্দঘন পোস্ট দিয়ে তার শাস্তির দাবি করেছেন।
আমতলী উপজেলা পরিষদের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান তামান্না আফরোজ মনি তার এফবি প্রোফাইলে ক্ষোভ প্রকাশ করো লিখেছেন,কতদিন কতবার আম্মের ধারে গেছি দ্যাহা করতে পারি নাই,,শেষের বারে যখন গেলাম তখন সকাল দশ টা বাজে,, কইলেন তুমি অপেক্ষা কর আমি আসতেছি,,,টানা তিন ডা ঘণ্টা বইয়া থাহার পরে আবার কল দিলাম কয় এখনো ফ্রেশ হইতে পারিনাই,তুমি কি চলে যাবে নাকি বরগুনায় আরও কোনো কাজ আছে কাজ থাকলে শেরে এসো আমি বিকেল ছাড়া বের হবোনা,,, তখন আমি কইলাম আমি আসছি আপনার সাথে কথা বলার জন্য আমার আর কোনো কাজ নেই,,আমি খুবই বিপদে পরে তার কাছে গিয়েছিলাম,,তবে কোনো টাকা পয়সা বা চাকরির জন্য না,,শুধু তার একটা ফোনের জন্য সে যদি একটা কল দিয়ে এক মিনিট বা দুই মিনিট কথা বলে দিতো আর যদি তার ফোনে টাকা না থাকতো আমাকে কইতে পারতো আমার ফোন দিয়ে কথা বলার চেয়ে ভালো হবে তোমার ফোন দিয়ে কথা বললে,, তাও কইল না,,, শেষে কি আর করার কইলাম আমি চলে যাচ্ছি তবে আমি আর কখনো কোনো দিন আপনার কাছে আসবো না,,তেনার ১৮ সালের নির্বাচন এর সময় কতটা পরিশ্রম কত টাকা ব্যয় করেছে,, সাবেক কাউন্সিলর আমার মরহুম স্বামী মো. হারুন ফকির,,,,, এবং সে ছাত্র জীবনে আমার মরহুম শ্বশুর মো. সামছুল হক ফকিরের বাসায় থেকে পড়ালেখা করতেন,ভাবলাম আমার শ্বশুর এবং আমার স্বামী তার তার জন্য যতটুকু করছেন তাতে সে আমার এই উপকার টুকু মনে হয় করবেন,, কিন্তু না সে কিছুই করেনি,,হয়তো বা তার একটা ফোনে আমার এতিম সন্তান দের এক টু হলেও উপকার হতো,,,,, সে তো আর আমাদের জন্য কিছু করতে পারলো না আপনারা তাহার জন্য কিছু করিয়েন,,,
উপজেলা যুবলীগ নেতা মো. মিরাজ হোসেন লিখেছেন, আমার নামে আপনি আপনার লোকজন দিয়ে তিনটা মিথ্যা মামলা দিয়েছিলেন,জেল খেটেছি কষ্ট যন্ত্রণা হয়েছিল আজ মোটামুটি কষ্ট দুর হল।
বরগুনা-১ আসনের পাঁচবারের সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাড. ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু তার রাজনৈতিক জীবনে গড়ে তুলেছেন অপরাজনীতির সংস্কৃতি। ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে দলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের উপেক্ষা করে আমতলীতে হাইব্রিড আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের দিয়ে দল পরিচালনা করেছেন।
গড়ে তুলেছেন অপরাধের অভয়ারণ্য। ঘুষ, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, দলীয়করণ, দখল জবরদখল, মাদকের পৃষ্ঠপোষকতা, সন্ত্রাস, ইসলাম বিদ্বেষী বক্তব্য প্রদান, কাবিখা টাবিখা, সরকারি বেসরকারি ত্রাণ সামগ্রী লুটপাট, মতবিরোধীদের দমনপীড়ন, দলীয় পদ বাণিজ্য, মনোনয়ন বাণিজ্য, বদলি বাণিজ্য, নিজ এলাকার স্বার্থ উপেক্ষাসহ নানাবিধ অপকর্ম করে বেড়াতেন নির্বিঘ্নে। দীর্ঘ তিন যুগ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি, ২৫ বছর বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য থাকায় তোয়াক্কা করেননি কাউকেই। তার প্রতি ভারত সরকারের একনিষ্ঠ সমর্থন থাকায় ক্ষমতার দাম্ভিকতা ছিল আকাশচুম্বী।
গত তিন মাস নিরুদ্দেশ থাকার পর গত সোমবার রাতে ঢাকার উত্তরা ডিবি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন। তার গ্রেফতারের খবর বরগুনা-আমতলী-তালতলীতে ছড়িয়ে পড়লে দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে আনন্দের বন্যা বয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার গ্রেফতারের খবরে নেতাকর্মীরা উচ্ছ্বসিত। দ্রুত তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির পাশাপাশি শম্ভুর অর্জিত অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে বরগুনার উন্নয়নে ব্যয় করার দাবী করেছেন এলাকাবাসী।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর