জ্বালানি খাতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ২৫ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহণ এবং জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
তিনি বলেন, বাপেক্স এর এক-একটি গাড়ির দাম ৫ কোটি টাকা। অথচ জ্বালানি খাতে ভর্তুকি দিতে হচ্ছে ২৫ হাজার কোটি টাকা। এছাড়া বিদ্যুৎ খাতের অবস্থাও খুবই ভয়াবহ।
শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) চট্টগ্রাম নগরীর সার্কিট হাউস সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসনের এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
দেশ এখন টানেলের লোকসান বয়ে বেড়াচ্ছে জানিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের এই উপদেষ্টা বলেন, কর্ণফুলী টানেল আমাদের জন্য এখন বোঝা হয়ে দাড়িয়েছে। সেটার পাশ দিয়ে আসার সময় দেখলাম সেখানে কোনো গাড়ি নেই। মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্র বন্দর করে তার সঙ্গে সংযোগ সড়ক হয়ে একটা ইকোনমিক জোন তৈরি করে অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু এখন দেখেন সেখানে একটা বিদ্যুৎ প্রকল্প হয়েছে আর এখানে একটা টানেল তৈরি করা হয়েছে যা অপরিকল্পিত পরিকল্পনার একটা অংশ। ফলে দেশ এখন টানেলের লোকসান বয়ে বেড়াচ্ছে।
ফাওজুল কবির খান বলেন, প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা দিয়ে পদ্মা রেল সংযোগ করা হয়েছে যার বার্ষিক রাজস্ব আয়ের কথা ছিল ১৪শ কোটি টাকা। কিন্তু ৬ মাস পরে গিয়ে জানতে পারলাম মাত্র ৩৭ কোটি টাকার রাজস্ব এসেছে। এগুলো উন্নয়নের নামে অপচয় করা হয়েছে। আমি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বসেছি যাতে অপরিকল্পিত উন্নয়নের নামে দেশের টাকা অপচয় করা না হয়।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কোনো ব্যবসায়ী বা পেশিশক্তির কাছে দায়বদ্ধতা নেই। এ সরকারের দায়বদ্ধতা আছে জুলাই অভ্যুত্থানে ১ হাজারের বেশি শহীদ, ৩০ হাজারের বেশি আহত হয়ে যারা দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে ও অগণিত ছাত্র-জনতার প্রতি। এ দায়বদ্ধতা থেকেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কোনো নির্বাচিত সরকার নয়। এ সরকার কোনো ক্ষমতা গ্রহণ করেনি, শুধুমাত্র ছাত্র-জনতার অনুরোধে দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। দায়িত্ব গ্রহণ করলে সে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সবসময় সতর্ক থাকতে হয়। তাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এ দায়িত্বকে আমানত হিসেবে গ্রহণ করেছে এবং তা রক্ষার্থে সবসময় সচেষ্ট রয়েছে। সাধারণ জনগণ আমাদেরকে দায়িত্ব দিয়েছেন যাতে আমরা দেশের সম্পদকে তাদের স্বার্থে ব্যবহার করি।
জেলা প্রশাসক ফরিদা খানমের সভাপতিত্বে এসময় উপস্থিত ছিলেন, সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবীর, পুলিশ সুপার রায়হান উদ্দিন খান, ডিআইজি মো. আহসান হাবীব পলাশ, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়ম করপোরেশন চেয়ারম্যান মো. আমিন উল আহসান, ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি’র প্রতিনিধি মেজর মাহমুদ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা।
বাঁধন/সিইচা/সাএ
সর্বশেষ খবর
জাতীয় এর সর্বশেষ খবর