• ঢাকা
  • ঢাকা, বুধবার, ০৫ মার্চ, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ৫ ঘন্টা পূর্বে
মোঃ আসাদুজ্জামান
বরগুনা প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ২০ নভেম্বর, ২০২৪, ০৪:০৫ দুপুর
bd24live style=

নানা সমস্যা নিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছেন বরগুনা সদর হাসপাতাল

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

১৯৯৭ সালে হাসপাতালটি ১০০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও শয্যা–পথ্য ছাড়া কিছু বাড়েনি। ২৪ ঘণ্টা জরুরি সেবা, ভর্তি রোগী ও বহির্বিভাগ সামাল দেওয়া দুরূহ হয়ে গেছে। বরগুনার প্রায় ১২ লাখ মানুষের চিকিৎসাসেবার একমাত্র ভরসা বরগুনা সদর হাসপাতাল। কিন্তু এখানে চিকিৎসকসহ নানা সংকটে স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত হচ্ছে। যথাযথ সেবা না পেয়ে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে রোগীদের

প্রায় ১২ লাখ মানুষের চিকিৎসাসেবার একমাত্র ভরসাস্থল এ হাসপাতাল। ১০০ শয্যা থেকে উন্নীত করে ২৫০ শয্যা করা হলেও বাড়েনি অবকাঠামো অথবা জনবল। এমনকি ১০০ শয্যার জনবলের রয়েছে এক-চতুর্থাংশ। নেই মেডিসিন, সার্জারি ও কার্ডিওলজির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের চিকিৎসক। হাসপাতালের তথ্য অনুসারে ১০ জন সিনিয়র কনসালট্যান্টের মধ্যে রয়েছে ১ জন, ১১ জন জুনিয়র কনসালট্যান্টের মধ্যে চারজন এবং ২৮ জন মেডিকেল অফিসারের পদে কর্মরত আছে মাত্র পাঁচজন। এ ছাড়া নার্সসহ একাধিক পদে রয়েছে ভয়াবহ জনবল সংকট।স্বল্প সংখ্যক জনবল নিয়ে রোগীদের সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। রোগীরা পাচ্ছে না তাদের কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসা।

হাসপাতাল ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৭ সালে হাসপাতালটি ১০০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও শয্যা আর পথ্য ছাড়া কিছু বাড়েনি। জনবলকাঠামো ও অবকাঠামো আগের মতো রেখেই ২০১০ সালে উপকূলের মানুষের চিকিৎসা ব্যবস্থার বেহাল দশা দেখে হাসপাতালটিকে ২৫০ শয্যায় উন্নীত করার ঘোষণা দেয়। এরপর এখানে ছয়তলা একটি ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। ২০১৮ সালে নতুন ভবনটির উদ্বোধন হলেও ২৫০ শয্যা হাসপাতাল রয়েছে জনবল সংকট ও অবকাঠামোর অভাব।

চিকিৎসকেরা জানান, এই হাসপাতালে প্রতিদিন ১৫০ থেকে ২০০ রোগী ভর্তি থাকেন। বহির্বিভাগে গড়ে সাড়ে ৫০০ থেকে ৬০০ রোগীর চিকিৎসা দিতে হয়। এরপর প্রশাসনিক কাজ, ময়নাতদন্ত, ধর্ষণের পরীক্ষাসহ বিভিন্ন কাজকর্ম এই ১১ জনকেই করতে হয়। এত রোগীর চিকিৎসাসেবা দেওয়া একরকম অসাধ্য হয়ে পড়েছে।

 সরিষার মধ্যে ভূত এই গল্পের মতই বছরের পর নানা সমস্যা নিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছেন চিকিৎসাসেবার একমাত্র ভরসা বরগুনা সদর হাসপাতাল। 

জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি মাইনুল ইসলামের মা মাহিনুর বলেন,অতিরিক্ত রোগী থাকায় যে পরিমাণ সিট থাকার প্রয়োজন তা হাসপাতালে নেই। হাসপাতালে আসার পরে আমরা সিট পাইনি। এ ছাড়াও যে পরিমাণ রোগী সে তুলনায় নার্সের সংখ্যা কম। এ কারণে তারা সকল রোগীর কাছে আসতেও পারে না, আমাদের যেতে হয় তাদের কাছে। এতে অনেক সময় কখন কার কোন ওষুধ প্রয়োজন তা ঠিকভাবে জানে না তারা।

বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা সেবার  ভোগান্তির বেশিভাগ পোহাতে হয় শিশুদের। হাসপাতালে শিশুদের জন্য নির্ধারিত বেড সংখ্যা ৫০টি। তবে বর্তমানে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা নির্ধারিত বেডের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণেরও বেশি। প্রতিদিন গড়ে  হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে ১২০ জনেরও বেশি শিশু রোগী। বেড সংকটে পড়তে হচ্ছে অধিকাংশ শিশু রোগীদেও।

বেডের বিপরীতে প্রায় দ্বিগুণেরও বেশি শিশু রোগী ভর্তি হওয়ায় হাসপাতালে সৃষ্টি হয় বাড়তি রোগীর চাপ। এ কারণে ভর্তি হওয়া শিশু রোগীদের চিকিৎসা সেবা পেতে বাধ্য হয়ে স্থান নিতে হয়েছে হাসপাতালের অপরিচ্ছন্ন মেঝে, বারান্দাসহ সিঁড়ি ও লিফটের দরজার পাশে। এতে একদিকে যেমন চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের, তেমনি নানা ধরনের পরিবেশগত স্বাস্থ্য ঝুঁকি। দূভার্গ্য জনক ভাবে বাংলাদেশে ৬৪ শতাংশ শিশু স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ থেকে বঞ্চিত। 

মোসা. কল্পনা বলেন, আমার বাচ্চার  চিকিৎসার জন্য ৩ দিন ভর্তি আছেন হাসপাতালে। আমার বাচ্চাকে নিয়ে হাসপাতালে আছি। চিকিৎসা সেবা মোটামুটি ঠিক থাকলেও রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। এ কারণে দেখা যায় কেউ বেড পায়, ফ্যান পায় না আবার যেখানে ফ্যান আছে সেখানে বেড নাই। রোগীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় এমন সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। চিকিৎসা সেবা নেওয়ার জন্য শিশুদের নিয়েও অপরিষ্কার মেঝেতে থাকতে হয়। 

জেলা স্বাস্থ্য অধিকার ফোরামের আহ্বায়ক মো. হাসানুর রহমান ঝন্টু বলেন, ১০০ শয্যার হাসপাতালের দুই-তৃতীয়াংশ জনবল নেই। এটা নিয়ে আমরা আন্দোলন করেছি। ২০১৮ সালে ২৫০ শয্যার হাসপাতাল উদ্ধোধনের পরও চার বছর শেষ। এখন আবার মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর জনবল নিয়োগ নিয়ে টানাটানি করছে। এই জটিলতা নিরসন করে দ্রুত হাসপাতালটি চালু করা এখন আমাদের দাবি।

বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. তাজকিয়া সিদ্দিকাহ  বলেন, জনবল সংকট এবং প্রয়োজনীয় বরাদ্দের অভাবে হাসপাতালের পরিবেশ ঠিক রাখা যাচ্ছে না। জনবল সংকটের মধ্য দিয়েও আমরা আমাদের সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করছি রোগীদের চিকিৎসা দিতে।রোগী এবং রোগীর সাথে আসা স্বজনদের অসচেতনার কারনে হাসপাতালের পরিবেশ অনেকটা অপরিচ্ছন্ন হয়।হাসপাতালের চুক্তি ভিত্তিক পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা দীর্ঘ চার মাস ধরে বেতন না পাওয়ায় তারা ঠিক মতো কাজ করে না। 

২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা: এ. কে. এম. নজমূল আহসান বলেন, ১০০ শয্যা থেকে উন্নীত করে ২৫০ শয্যা করা হলেও বাড়েনি অবকাঠামো অথবা জনবল। আমরা ১০০ শয্যার জনবল দিয়ে সেবা দেবার চেষ্টা করছি। আমাদের কর্মীরা কঠোর পরিশ্রম করে রোগীদের সেবা দিচ্ছে।

বরগুনার সিভিল সার্জন ডাক্তার প্রদীপ চন্দ্র মন্ডল বলেন, ২৫০ শয্যার নতুন ভবনটি চালু হলে, সেবার মান অনেক বৃদ্ধি পাবে।  হাসপাতালে পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসাসেবা চালুর জন্য দরকার ৫৫ জন চিকিৎসক, ১০১ জন নার্সসহ মোট ২৩৩ জনের জনবল। এর মধ্যে ১০৩ জনের পদ শূন্য। এ ব্যাপারে বার বার সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠি দিয়েছি, তবুও কোনো কাজই হচ্ছে না।

বরগুনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাাতালের ভবনটি প্রয়োজনীয় জনবল কাঠামো এবং চিকিৎসা যন্ত্র, বেড, অবকাঠামো না থাকার কারণে চালু করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। এ বিষয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

শাকিল/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com